২১ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধর্মান্তরিত না হয়ে ভিনধর্মে বিয়ে অবৈধ: ইলাহাবাদ হাইকোর্ট

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৫, রবিবার
  • / 300

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক :  বিয়ে করতে হলে দম্পতিকে একই ধর্মের হতে হবে। ধর্মান্তরিত না হয়ে বিয়ে করলে সেই বিয়ে আইনসম্মত নয়, অবৈধ। এমনটাই রায় ইলাহাবাদ হাইকোর্টের। অর্থাৎ, আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, বর ও কনে যদি আলাদা আলাদা ধর্মের হয় সেক্ষেত্রে তাদের মধ্যে বিবাহ অবৈধ।

শনিবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট তার রায়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, ধর্মান্তরিত না হয়ে ভিনধর্মে বিবাহ অবৈধ। আর্যসমাজ মন্দিরে একটি বিয়েকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে ভিনধর্মের এক নাবালিকাকে অপহরণ করে আর্যসমাজ মন্দির নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। এই নিয়ে অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ ও বিয়ে করার অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা করে নাবালিকার পরিবার।

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বড় নির্দেশ: চাকরিহারা গ্রুপ C ও D কর্মীদের আর মিলবে না ভাতা

 

আরও পড়ুন: হাইকোর্ট – সুপ্রিম কোর্ট একযোগে এসএসসি পরীক্ষায় দাগিদের আবেদন খারিজ করলো

সেই আবেদনের শুনানিতে শনিবার এই মন্তব্য করে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। যদিও অভিযুক্ত যুবক সোনু হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ফৌজদারি মামলাটি বাতিল করা হোক। পিটিশনে সোনু আরও জানান যে, তাঁর স্ত্রী প্রাপ্তবয়স্ক এবং তাঁরা তিনি আর্যসমাজ মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেছেন ও তাঁরা একসাথে সংসার করছেন।

আরও পড়ুন: ICDS সুপারভাইজার নিয়োগে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রায়ে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট

 

যদিও হাইকোর্টের বিচারপতি প্রশান্ত কুমার এদিন সোনুর আবেদনটি খারিজ করে উল্লেখ করেছেন যে, একজন নাবালিকাকে বিয়ে করা এবং আর্যসমাজ মন্দির কর্তৃপক্ষ যেভাবে সেই বিয়ের সার্টিফিকেট দিয়েছে তা আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। পাশাপাশি, আদালত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা বাতিল করতেও অসম্মতি প্রকাশ করেছে।

 

শুধু তাই নয়, আর্যসমাজ মন্দিরের মতো প্রতিষ্ঠানগুলিকে উদ্দেশ্য করে কোর্ট বলেছে, আইনি বাধ্যবাধকতা, অনুশাসন না মেনেই প্রায়শই একটি নির্দিষ্ট ফি (অর্থ) দিয়ে নির্বিচারে বিবাহের শংসাপত্র দিয়ে আসছে এই ধরনের এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুসি।

 

এই ধরনের অনুশীলন আইন লঙ্ঘনের সমান। এরপরই হাইকোর্ট উত্তরপ্রদেশের স্বরাষ্ট্র সচিবকে ডিসিপি পদমর্যাদার আইপিএস অফিসারের নেতৃত্বে আর্যসমাজ প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলির তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে, যারা এমন দম্পতিদের বিয়ের সার্টিফিকেট দিচ্ছে যারা ভিনধর্মের  এবং ধর্মান্তরিত না হয়েই বিয়ে করছে এমনকী  অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থাতেই বিয়ে করছে। এই বিষয়ে ২৯ আগস্টের মধ্যে একটি রিপোর্টও তলব করেছে আদালত।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণের অভিযোগে পকসো আইনে মহারাজগঞ্জ জেলার নিচলৌল থানায় একটি এফআইআর দায়ের হয়। চার্জশিটও দাখিল হয়েছে এবং সমন জারি করা হয়েছে।

আবেদনকারী দাবি করেছেন যে, তিনি একটি আর্যসমাজ মন্দিরে মেয়েটিকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাঁর স্ত্রী এখন প্রাপ্তবয়স্ক। আর যেহেতু তাঁরা একসাথে সংসার করছেন, সেই যুক্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া ফৌজদারি মামলা বাতিল হোক। আবেদনের বিরোধিতা করে উত্তরপ্রদেশ সরকার যুক্তি দিয়েছিল যে উভয় ব্যক্তি ভিন্ন ধর্মের ছিলেন এবং ধর্মান্তরিত হননি।

সেই কারণে এই বিয়ের কোনও আইনি ভিত্তি নেই। আদালতেরও পর্যবেক্ষণ, বেশ কয়েকটি আর্যসমাজ প্রতিষ্ঠান যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই নাবালক বা ভিনধর্মীয় দম্পতিদের বিবাহের শংসাপত্র প্রদান করছে। এতে বলা হয়েছে যে এই ধরণের অনুশীলনের তদন্ত এবং উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ধর্মান্তরিত না হয়ে ভিনধর্মে বিয়ে অবৈধ: ইলাহাবাদ হাইকোর্ট

আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক :  বিয়ে করতে হলে দম্পতিকে একই ধর্মের হতে হবে। ধর্মান্তরিত না হয়ে বিয়ে করলে সেই বিয়ে আইনসম্মত নয়, অবৈধ। এমনটাই রায় ইলাহাবাদ হাইকোর্টের। অর্থাৎ, আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, বর ও কনে যদি আলাদা আলাদা ধর্মের হয় সেক্ষেত্রে তাদের মধ্যে বিবাহ অবৈধ।

শনিবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট তার রায়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, ধর্মান্তরিত না হয়ে ভিনধর্মে বিবাহ অবৈধ। আর্যসমাজ মন্দিরে একটি বিয়েকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে ভিনধর্মের এক নাবালিকাকে অপহরণ করে আর্যসমাজ মন্দির নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। এই নিয়ে অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ ও বিয়ে করার অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা করে নাবালিকার পরিবার।

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বড় নির্দেশ: চাকরিহারা গ্রুপ C ও D কর্মীদের আর মিলবে না ভাতা

 

আরও পড়ুন: হাইকোর্ট – সুপ্রিম কোর্ট একযোগে এসএসসি পরীক্ষায় দাগিদের আবেদন খারিজ করলো

সেই আবেদনের শুনানিতে শনিবার এই মন্তব্য করে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। যদিও অভিযুক্ত যুবক সোনু হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ফৌজদারি মামলাটি বাতিল করা হোক। পিটিশনে সোনু আরও জানান যে, তাঁর স্ত্রী প্রাপ্তবয়স্ক এবং তাঁরা তিনি আর্যসমাজ মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেছেন ও তাঁরা একসাথে সংসার করছেন।

আরও পড়ুন: ICDS সুপারভাইজার নিয়োগে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রায়ে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট

 

যদিও হাইকোর্টের বিচারপতি প্রশান্ত কুমার এদিন সোনুর আবেদনটি খারিজ করে উল্লেখ করেছেন যে, একজন নাবালিকাকে বিয়ে করা এবং আর্যসমাজ মন্দির কর্তৃপক্ষ যেভাবে সেই বিয়ের সার্টিফিকেট দিয়েছে তা আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। পাশাপাশি, আদালত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা বাতিল করতেও অসম্মতি প্রকাশ করেছে।

 

শুধু তাই নয়, আর্যসমাজ মন্দিরের মতো প্রতিষ্ঠানগুলিকে উদ্দেশ্য করে কোর্ট বলেছে, আইনি বাধ্যবাধকতা, অনুশাসন না মেনেই প্রায়শই একটি নির্দিষ্ট ফি (অর্থ) দিয়ে নির্বিচারে বিবাহের শংসাপত্র দিয়ে আসছে এই ধরনের এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুসি।

 

এই ধরনের অনুশীলন আইন লঙ্ঘনের সমান। এরপরই হাইকোর্ট উত্তরপ্রদেশের স্বরাষ্ট্র সচিবকে ডিসিপি পদমর্যাদার আইপিএস অফিসারের নেতৃত্বে আর্যসমাজ প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলির তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে, যারা এমন দম্পতিদের বিয়ের সার্টিফিকেট দিচ্ছে যারা ভিনধর্মের  এবং ধর্মান্তরিত না হয়েই বিয়ে করছে এমনকী  অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থাতেই বিয়ে করছে। এই বিষয়ে ২৯ আগস্টের মধ্যে একটি রিপোর্টও তলব করেছে আদালত।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণের অভিযোগে পকসো আইনে মহারাজগঞ্জ জেলার নিচলৌল থানায় একটি এফআইআর দায়ের হয়। চার্জশিটও দাখিল হয়েছে এবং সমন জারি করা হয়েছে।

আবেদনকারী দাবি করেছেন যে, তিনি একটি আর্যসমাজ মন্দিরে মেয়েটিকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাঁর স্ত্রী এখন প্রাপ্তবয়স্ক। আর যেহেতু তাঁরা একসাথে সংসার করছেন, সেই যুক্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া ফৌজদারি মামলা বাতিল হোক। আবেদনের বিরোধিতা করে উত্তরপ্রদেশ সরকার যুক্তি দিয়েছিল যে উভয় ব্যক্তি ভিন্ন ধর্মের ছিলেন এবং ধর্মান্তরিত হননি।

সেই কারণে এই বিয়ের কোনও আইনি ভিত্তি নেই। আদালতেরও পর্যবেক্ষণ, বেশ কয়েকটি আর্যসমাজ প্রতিষ্ঠান যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই নাবালক বা ভিনধর্মীয় দম্পতিদের বিবাহের শংসাপত্র প্রদান করছে। এতে বলা হয়েছে যে এই ধরণের অনুশীলনের তদন্ত এবং উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন।