১২ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমেরিকার সঙ্গে আর আলোচনার জায়গা নেই : ইরান সুর নরম করে ছাড় ‘অফার’ ট্রাম্প প্রশাসনের 

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার
  • / 286

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত চরমে ওঠে, যার ফলে দুই পক্ষই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে। আমেরিকা এই সংঘাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায়। তবে এই ঘটনার পর ইরানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।

বৃহস্পতিবার ইরান সরাসরি জানিয়ে দেয়, তারা আমেরিকার সঙ্গে নতুন করে কোনও আলোচনায় বসছে না। ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, ‘এই বিষয়ে যে কোনও জল্পনা ভিত্তিহীন এবং গুরুত্বহীন। আমাদের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত কোনও আলোচনার পরিকল্পনা হয়নি।’

অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন ইরানকে আলোচনায় ফেরাতে বেশ কিছু ছাড় দিতে রাজি হয়েছে। সিএনএনের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকা এবং তার উপসাগরীয় মিত্ররা ইরানকে প্রায় ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর্থিক সহায়তা দিতে পারে, যাতে দেশটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে মনোযোগ দিতে পারে।

আরও পড়ুন: ইসরাইলের ২০ গুপ্তচরকে গ্রেফতার করল ইরান

সূত্র অনুযায়ী, এই বিনিয়োগ সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসবে না, বরং সউদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো মার্কিন মিত্ররা এই তহবিল সরবরাহ করবে। তাছাড়া ইরানের উপর যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেগুলোর কিছু শিথিল করার কথাও ভাবা হচ্ছে। জধ করা প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলারের ইরানি সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও আলোচনার মধ্যে রয়েছে।

আরও পড়ুন: জনগণের সমর্থন হারিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার: ইয়ার লাপিদ

তবে এই প্রস্তাবের একমাত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হল;ইরানকে সম্পূর্ণভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করতে পারে, তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তাদের হাতে থাকলে ভবিষ্যতে তা অস্ত্র তৈরির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘে সম্মেলন শুরু, নেতৃত্বে ফ্রান্স ও সৌদি আরব

জানা গিয়েছে, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ-এর নেতৃত্বে আলোচনায় বসেছে উপসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কিছু দেশ। উইটকফ জানিয়েছেন, ‘আমরা চাই, ইরান শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির অধিকার পাবে, তবে তা হবে অসমৃদ্ধিকরণযোগ্য।’

তবে ইরানের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসার সম্মতি পাওয়া যায়নি। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তারা এমন কোনও আলোচনার বিষয়ে অবগত নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান অভ্যন্তরীণ চাপ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরও আলোচনার রাস্তায় আসতে পারে, তবে নিজেদের অধিকারকে বিসর্জন দিয়ে নয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আমেরিকার সঙ্গে আর আলোচনার জায়গা নেই : ইরান সুর নরম করে ছাড় ‘অফার’ ট্রাম্প প্রশাসনের 

আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত চরমে ওঠে, যার ফলে দুই পক্ষই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে। আমেরিকা এই সংঘাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায়। তবে এই ঘটনার পর ইরানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।

বৃহস্পতিবার ইরান সরাসরি জানিয়ে দেয়, তারা আমেরিকার সঙ্গে নতুন করে কোনও আলোচনায় বসছে না। ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, ‘এই বিষয়ে যে কোনও জল্পনা ভিত্তিহীন এবং গুরুত্বহীন। আমাদের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত কোনও আলোচনার পরিকল্পনা হয়নি।’

অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন ইরানকে আলোচনায় ফেরাতে বেশ কিছু ছাড় দিতে রাজি হয়েছে। সিএনএনের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকা এবং তার উপসাগরীয় মিত্ররা ইরানকে প্রায় ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর্থিক সহায়তা দিতে পারে, যাতে দেশটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে মনোযোগ দিতে পারে।

আরও পড়ুন: ইসরাইলের ২০ গুপ্তচরকে গ্রেফতার করল ইরান

সূত্র অনুযায়ী, এই বিনিয়োগ সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসবে না, বরং সউদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো মার্কিন মিত্ররা এই তহবিল সরবরাহ করবে। তাছাড়া ইরানের উপর যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেগুলোর কিছু শিথিল করার কথাও ভাবা হচ্ছে। জধ করা প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলারের ইরানি সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও আলোচনার মধ্যে রয়েছে।

আরও পড়ুন: জনগণের সমর্থন হারিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার: ইয়ার লাপিদ

তবে এই প্রস্তাবের একমাত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হল;ইরানকে সম্পূর্ণভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করতে পারে, তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তাদের হাতে থাকলে ভবিষ্যতে তা অস্ত্র তৈরির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘে সম্মেলন শুরু, নেতৃত্বে ফ্রান্স ও সৌদি আরব

জানা গিয়েছে, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ-এর নেতৃত্বে আলোচনায় বসেছে উপসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কিছু দেশ। উইটকফ জানিয়েছেন, ‘আমরা চাই, ইরান শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির অধিকার পাবে, তবে তা হবে অসমৃদ্ধিকরণযোগ্য।’

তবে ইরানের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসার সম্মতি পাওয়া যায়নি। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তারা এমন কোনও আলোচনার বিষয়ে অবগত নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান অভ্যন্তরীণ চাপ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরও আলোচনার রাস্তায় আসতে পারে, তবে নিজেদের অধিকারকে বিসর্জন দিয়ে নয়।