১৪ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজা শিশু ও ক্ষুধার্তদের কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে: রাষ্ট্র সংঘ সংস্থার প্রধানের অভিযোগ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৫, শনিবার
  • / 320

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: ইসরাইল গাজাকে ‘নির্মম ও ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাযজ্ঞে’র কেন্দ্রস্থল বানাচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলেছেন ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী রাষ্ট্র সংঘ সংস্থা UNRWA-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি।

 

আরও পড়ুন: Palestinian state: এবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিচ্ছে france

শুক্রবার এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “আমাদের চোখের সামনে গাজা শিশুদের ও অনাহারে মরতে থাকা মানুষের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে।”

আরও পড়ুন: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির আহ্বান চিনের

লাজারিনি বলেন, “গাজার মানুষের কোনো পথ খোলা নেই। তাদের সামনে রয়েছে মাত্র দুটি মৃত্যু—অনাহারে মারা যাওয়া অথবা গুলিতে ঝরে পড়া।”

আরও পড়ুন: ইসরাইলের হুমকিতে ভীত না হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের 

এই মন্তব্যের পেছনে রয়েছে বৃহস্পতিবার গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহতে পুষ্টিকর খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ১৫ জন নিরীহ মানুষকে ইসরাইলি সেনাদের গুলি করে হত্যা করার ঘটনা, যাদের মধ্যে ৯ জন শিশু এবং ৪ জন নারী।

এই হামলার দিনে আরও ৪৫ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ১১ জন প্রাণ হারান রাফার একটি GHF-এর ত্রাণকেন্দ্রের কাছে।

ইসরাইল এবং আমেরিকার সহায়তায় পরিচালিত GHF (Global Humanitarian Foundation)–এর কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় রাষ্ট্র সংঘের নেতৃত্বাধীন বৃহৎ ত্রাণ বিতরণ নেটওয়ার্ক কার্যত অকার্যকর হয়ে গেছে। মে মাসে ইসরাইল প্রায় দুই মাসব্যাপী পূর্ণ অবরোধ শিথিল করার পর এই ত্রাণকেন্দ্রগুলো চালু হয়।

 

রাষ্ট্র সংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র জানান, মে থেকে এখন পর্যন্ত ৮১৯ জন ফিলিস্তিনি শুধু খাদ্যের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাকালে নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৬৩৪ জন জি এইচ এফ ত্রাণকেন্দ্রের আশেপাশে, এবং ১৮৫ জন অন্যান্য ত্রাণকেন্দ্র।

 

রাষ্ট্র সংঘ মানবাধিকার দফতরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানিও জানান, ৭ জুলাই পর্যন্ত জাতিসংঘ ৭৯৮ জনের মৃত্যুর রেকর্ড করেছে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে সংঘটিত হামলায়।

 

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে জিএইচএফ-এর সঙ্গে যুক্ত কিছু মার্কিন কন্ট্রাক্টর ও ইসরাইলি সেনারা স্বীকার করেছেন, তারা অস্ত্রহীন ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছেন, যারা কেবল খাবারের জন্য জড়ো হয়েছিল। এ তথ্য ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ‘হারেটজ’ এবং এপি এর পৃথক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

 

এইসব ঘটনায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এটা কেবল ত্রাণপ্রাপ্তির অধিকার নয়, বরং নাগরিকদের জীবনের অধিকার হরণ।

 

রাষ্ট্র সংঘের ভাষ্য অনুযায়ী, এই পরিস্থিতি একটি গণমানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ, যেখানে ক্ষুধার্ত মানুষকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে কেবল বেঁচে থাকার চেষ্টা করায়।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গাজা শিশু ও ক্ষুধার্তদের কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে: রাষ্ট্র সংঘ সংস্থার প্রধানের অভিযোগ

আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: ইসরাইল গাজাকে ‘নির্মম ও ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাযজ্ঞে’র কেন্দ্রস্থল বানাচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলেছেন ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী রাষ্ট্র সংঘ সংস্থা UNRWA-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি।

 

আরও পড়ুন: Palestinian state: এবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিচ্ছে france

শুক্রবার এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “আমাদের চোখের সামনে গাজা শিশুদের ও অনাহারে মরতে থাকা মানুষের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে।”

আরও পড়ুন: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির আহ্বান চিনের

লাজারিনি বলেন, “গাজার মানুষের কোনো পথ খোলা নেই। তাদের সামনে রয়েছে মাত্র দুটি মৃত্যু—অনাহারে মারা যাওয়া অথবা গুলিতে ঝরে পড়া।”

আরও পড়ুন: ইসরাইলের হুমকিতে ভীত না হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের 

এই মন্তব্যের পেছনে রয়েছে বৃহস্পতিবার গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহতে পুষ্টিকর খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ১৫ জন নিরীহ মানুষকে ইসরাইলি সেনাদের গুলি করে হত্যা করার ঘটনা, যাদের মধ্যে ৯ জন শিশু এবং ৪ জন নারী।

এই হামলার দিনে আরও ৪৫ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ১১ জন প্রাণ হারান রাফার একটি GHF-এর ত্রাণকেন্দ্রের কাছে।

ইসরাইল এবং আমেরিকার সহায়তায় পরিচালিত GHF (Global Humanitarian Foundation)–এর কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় রাষ্ট্র সংঘের নেতৃত্বাধীন বৃহৎ ত্রাণ বিতরণ নেটওয়ার্ক কার্যত অকার্যকর হয়ে গেছে। মে মাসে ইসরাইল প্রায় দুই মাসব্যাপী পূর্ণ অবরোধ শিথিল করার পর এই ত্রাণকেন্দ্রগুলো চালু হয়।

 

রাষ্ট্র সংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র জানান, মে থেকে এখন পর্যন্ত ৮১৯ জন ফিলিস্তিনি শুধু খাদ্যের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাকালে নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৬৩৪ জন জি এইচ এফ ত্রাণকেন্দ্রের আশেপাশে, এবং ১৮৫ জন অন্যান্য ত্রাণকেন্দ্র।

 

রাষ্ট্র সংঘ মানবাধিকার দফতরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানিও জানান, ৭ জুলাই পর্যন্ত জাতিসংঘ ৭৯৮ জনের মৃত্যুর রেকর্ড করেছে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে সংঘটিত হামলায়।

 

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে জিএইচএফ-এর সঙ্গে যুক্ত কিছু মার্কিন কন্ট্রাক্টর ও ইসরাইলি সেনারা স্বীকার করেছেন, তারা অস্ত্রহীন ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছেন, যারা কেবল খাবারের জন্য জড়ো হয়েছিল। এ তথ্য ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ‘হারেটজ’ এবং এপি এর পৃথক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

 

এইসব ঘটনায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এটা কেবল ত্রাণপ্রাপ্তির অধিকার নয়, বরং নাগরিকদের জীবনের অধিকার হরণ।

 

রাষ্ট্র সংঘের ভাষ্য অনুযায়ী, এই পরিস্থিতি একটি গণমানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ, যেখানে ক্ষুধার্ত মানুষকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে কেবল বেঁচে থাকার চেষ্টা করায়।