০৩ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগামী ৫ বছরে চাকরি পাওয়ার তুলনায় কাজ হারানোর সংখ্যা অনেক বাড়বে, একটি প্রতিবেদন

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১ মে ২০২৩, সোমবার
  • / 121

বিশেষ প্রতিবেদন: বিগত দিনগুলিতে বেশ কয়েকবছর ধরেই কর্মজগতের পরিস্থিতি বেশ সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। করোনাকালে সেই সমস্যাই যেন সুনামির মতো আছড়ে পড়ে জনজীবনের ওপর। তার পর থেকে বড় আইটি কোম্পানি থেকে বিভিন্ন ছোট বড় সব ধরনের কোম্পানিগুলিতেই কর্মীসংখ্যা ছাঁটাইয়ের একটি হিড়িক শুরু হয়েছে। ফলে যা আগামীদিনে মানুষের জীবনে একটি উদ্বেগের কারণ। আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের দিনেই ভয়ঙ্কর সেই আশঙ্কার কথা শুনিয়ে একটি প্রতিবেদন সামনে আনল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। আগামী পাঁচ বছরে চাকরি পাওয়ার তুলনায় কাজ হারানোর সংখ্যা অনেক বাড়বে, এমনটাই দাবি করা হয়েছে সেই প্রতিবেদনে। তার অন্যতম প্রধান কারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের মতো প্রযুক্তির উত্থান। যান্ত্রিক প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ার ফলেই  মানুষকে নিয়োগের প্রবণতা কমবে বলেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে মোট ৮০৩টি সংস্থার ওপর চালানো সমীক্ষার ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। সেখানে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বজুড়ে ছয় কোটি ৯০ লক্ষ নতুন চাকরি তৈরি হবে। এই একই সময়ের মধ্যে আট কোটি  ৩০ লক্ষ চাকরি বাতিল হয়ে যাবে। অর্থাৎ, চাকরির সংখ্যা ২৩ শতাংশ কমবে। কারণ মানুষের বদলে যন্ত্র দিয়ে কাজ হবে। তবে মানুষের দক্ষতার ওপর নিয়োগকারীরা আস্থা রাখবেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে ও ডিজিটাল মাধ্যমে কর্মসংস্থান অনেকটাই বাড়বে। বিশেষত, এআই প্রযুক্তি, মেশিন বিশেষজ্ঞদের চাহিদা বাড়বে চাকরির বাজারে। এ ছাড়াও পরিবেশ ও সামাজিক ক্ষেত্রেও নিয়োগের সংখ্যা বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন: ‘আগামী ৫ বছরে তিন লক্ষ কর্মসংস্থান’, মেঘালয়ে ইশতেহার প্রকাশে এসে প্রতিশ্রুতি অভিষেকের

উল্লেখ্য, চ্যাটজিপিটি-র রমরমা চর্তুদিকে। তথ্যপ্রযুক্তির জগতে এখন শুধু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপস্থিতি। যারা নতুন এই প্রযুক্তিকে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে পেরেছেন, তারা এর কার্যক্ষমতা দেখে অভিভূত। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ঘিরে বিস্ময়ের ঘোর যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে অজানা এক ভয়। কারণ, এত মানুষের  কাজ একা হাতে সামলে ফেলতে পারে যে প্রযুক্তি, সে তো যে কোনও সময়ে যে কোনও কর্মীর জীবিকা ছিনিয়ে নিতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই মানুষের জীবনে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসতে চলেছে। সারা বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর্মীরা কাজ হারানোর আশঙ্কায় দিন গুণছেন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উত্থানে ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ চাকরি হারাতে পারে। সম্প্রতি এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছে শীর্ষ এক মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক। ব্যাংকটির প্রতিবেদনমতে, এআইর প্রভাবে বিভিন্ন খাতে পরিবর্তন আসবে, যেখানে প্রশাসনিক কাজের ৪৬ শতাংশ ও আইনি পেশার ৪৪ শতাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয় উপায়ে হতে পারে। মানুষের চেয়ে অনেক কম খরচেই এসব কাজ করে দেবে এআই। তথ্যমতে ৬০ শতাংশ কর্মী এমন পেশায় আছেন, ১৯৪০ সালে যেসব পেশার অস্তিত্ব ছিল না। অন্য আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৯৮০–এর দশক থেকে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার চেয়ে দ্রুত কর্মীদের কর্মক্ষেত্র পরিবর্তনে বাধ্য করেছে। আর জেনারেটিভ এআই যদি আগের তথ্যপ্রযুক্তি অগ্রগতিগুলোর মতো হয়, তাহলে এটি অদূর ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান হ্রাস করতে পারে।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আগামী ৫ বছরে চাকরি পাওয়ার তুলনায় কাজ হারানোর সংখ্যা অনেক বাড়বে, একটি প্রতিবেদন

আপডেট : ১ মে ২০২৩, সোমবার

বিশেষ প্রতিবেদন: বিগত দিনগুলিতে বেশ কয়েকবছর ধরেই কর্মজগতের পরিস্থিতি বেশ সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। করোনাকালে সেই সমস্যাই যেন সুনামির মতো আছড়ে পড়ে জনজীবনের ওপর। তার পর থেকে বড় আইটি কোম্পানি থেকে বিভিন্ন ছোট বড় সব ধরনের কোম্পানিগুলিতেই কর্মীসংখ্যা ছাঁটাইয়ের একটি হিড়িক শুরু হয়েছে। ফলে যা আগামীদিনে মানুষের জীবনে একটি উদ্বেগের কারণ। আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের দিনেই ভয়ঙ্কর সেই আশঙ্কার কথা শুনিয়ে একটি প্রতিবেদন সামনে আনল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। আগামী পাঁচ বছরে চাকরি পাওয়ার তুলনায় কাজ হারানোর সংখ্যা অনেক বাড়বে, এমনটাই দাবি করা হয়েছে সেই প্রতিবেদনে। তার অন্যতম প্রধান কারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের মতো প্রযুক্তির উত্থান। যান্ত্রিক প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ার ফলেই  মানুষকে নিয়োগের প্রবণতা কমবে বলেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে মোট ৮০৩টি সংস্থার ওপর চালানো সমীক্ষার ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। সেখানে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বজুড়ে ছয় কোটি ৯০ লক্ষ নতুন চাকরি তৈরি হবে। এই একই সময়ের মধ্যে আট কোটি  ৩০ লক্ষ চাকরি বাতিল হয়ে যাবে। অর্থাৎ, চাকরির সংখ্যা ২৩ শতাংশ কমবে। কারণ মানুষের বদলে যন্ত্র দিয়ে কাজ হবে। তবে মানুষের দক্ষতার ওপর নিয়োগকারীরা আস্থা রাখবেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে ও ডিজিটাল মাধ্যমে কর্মসংস্থান অনেকটাই বাড়বে। বিশেষত, এআই প্রযুক্তি, মেশিন বিশেষজ্ঞদের চাহিদা বাড়বে চাকরির বাজারে। এ ছাড়াও পরিবেশ ও সামাজিক ক্ষেত্রেও নিয়োগের সংখ্যা বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন: ‘আগামী ৫ বছরে তিন লক্ষ কর্মসংস্থান’, মেঘালয়ে ইশতেহার প্রকাশে এসে প্রতিশ্রুতি অভিষেকের

উল্লেখ্য, চ্যাটজিপিটি-র রমরমা চর্তুদিকে। তথ্যপ্রযুক্তির জগতে এখন শুধু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপস্থিতি। যারা নতুন এই প্রযুক্তিকে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে পেরেছেন, তারা এর কার্যক্ষমতা দেখে অভিভূত। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ঘিরে বিস্ময়ের ঘোর যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে অজানা এক ভয়। কারণ, এত মানুষের  কাজ একা হাতে সামলে ফেলতে পারে যে প্রযুক্তি, সে তো যে কোনও সময়ে যে কোনও কর্মীর জীবিকা ছিনিয়ে নিতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই মানুষের জীবনে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসতে চলেছে। সারা বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর্মীরা কাজ হারানোর আশঙ্কায় দিন গুণছেন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উত্থানে ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ চাকরি হারাতে পারে। সম্প্রতি এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছে শীর্ষ এক মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক। ব্যাংকটির প্রতিবেদনমতে, এআইর প্রভাবে বিভিন্ন খাতে পরিবর্তন আসবে, যেখানে প্রশাসনিক কাজের ৪৬ শতাংশ ও আইনি পেশার ৪৪ শতাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয় উপায়ে হতে পারে। মানুষের চেয়ে অনেক কম খরচেই এসব কাজ করে দেবে এআই। তথ্যমতে ৬০ শতাংশ কর্মী এমন পেশায় আছেন, ১৯৪০ সালে যেসব পেশার অস্তিত্ব ছিল না। অন্য আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৯৮০–এর দশক থেকে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার চেয়ে দ্রুত কর্মীদের কর্মক্ষেত্র পরিবর্তনে বাধ্য করেছে। আর জেনারেটিভ এআই যদি আগের তথ্যপ্রযুক্তি অগ্রগতিগুলোর মতো হয়, তাহলে এটি অদূর ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান হ্রাস করতে পারে।