১০ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মগরাহাটের বিজেপি কর্মী খুনে গ্রেফতার এক মহিলা, খুনের কথা স্বীকার অভিযুক্তের

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার
  • / 65

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: মগরাহাটের বিজেপি কর্মী খুনে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কিনারা করল পুলিশ। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। খুনের কথা স্বীকারও করেছে অভিযুক্ত মহিলার।

প্রায় চারদিন নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার মধ্যরাতে উস্তির দলীয় কার্যালয় থেকে উদ্ধার হয় বিজেপি কর্মীর রক্তাক্ত দেহ। তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের দাবি, বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সোশাল মিডিয়ার কনভেনার পৃথ্বীরাজ নস্করের খুনের নেপথ্যে কোনো রাজনীতি নেই। বিবাহ বহির্ভূত একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই খুন হয়েছেন উস্তির বিজেপি কর্মী।

ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) মিতুন কুমার দে বলেন, এই খুনের ঘটনায় রাজনীতির কোনও যোগ নেই। সুজাতা পোদ্দার নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত মহিলা জানিয়েছেন, মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন ওই বিজেপি কর্মী। তাঁর সাথে ওই বিজেপি কর্মীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিলো ৬ বছর ধরে। ওইদিন বিজেপির দলীয় অফিসে তাঁকে ডেকে মদ খাওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলো পৃথ্বীরাজ। যৌন সম্পর্ক করতেও তাঁকে জোরাজুরি করা হয়। আর তখনই ওই মহিলা টেবিলে পড়ে থাকা ব্লেড দিয়ে বিজেপি কর্মীর যৌনাঙ্গে আঘাত করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়।

৪ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন ওই বিজেপি কর্মী। সেদিন বিকেলের পর থেকে আর তাঁর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা যায়নি। দুদিন অপেক্ষা করেও পৃথ্বীরাজের কোনও খোঁজ না পেয়ে, ৭ নভেম্বর উস্তি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। মৃত কর্মীর বাড়ির কাছেই রয়েছে বিজেপির পার্টি অফিস। পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার রাতে বাড়ির জানলা দিয়ে উঁকি মারতেই একজনের দেহ চাদর দিয়ে ঢাকা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কিন্তু গেটে তালা দেওয়া থাকায় ভিতরে ঢুকতে পারেননি। পুলিশ এসে তালা ভেঙে পৃথ্বীরাজের রক্তাক্ত দেহ বেঞ্চের উপর পড়ে থাকতে দেখে। কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল সেই রহস্য উদঘাটনে নেমে পড়ে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। পৃথ্বীরাজের দেহের কাছে কোনও ফোন পাওয়া যায়নি। পুলিশ মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, ওই নেতার দুই মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই মতো তাঁদেরকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। সেই জিজ্ঞাসাবাদেই ভেঙে পড়েন সুজাতা। স্বীকার করে নেন তাঁর অপরাধের কথা।

মৃত পৃথ্বীরাজ নস্করের ভাই তীর্থরাজ নস্কর রবিবার বলেন, পুলিশের প্রতি তাদের পূর্ণ আস্থা আছে, তবে এই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ওই মহিলা একা এই কাজ করতে পারে না,এর পিছনে আরো কয়েকজনথাকতে পারে।তাদেরকে চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন পৃথ্বীরাজের ভাই। অন্যদিকে, গ্রেফতার হওয়া মহিলা সুজাতা পোদ্দারকে রবিবার ডায়মন্ডহারবার এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক অভিযুক্তকে সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Tag :

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মগরাহাটের বিজেপি কর্মী খুনে গ্রেফতার এক মহিলা, খুনের কথা স্বীকার অভিযুক্তের

আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: মগরাহাটের বিজেপি কর্মী খুনে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কিনারা করল পুলিশ। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। খুনের কথা স্বীকারও করেছে অভিযুক্ত মহিলার।

প্রায় চারদিন নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার মধ্যরাতে উস্তির দলীয় কার্যালয় থেকে উদ্ধার হয় বিজেপি কর্মীর রক্তাক্ত দেহ। তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের দাবি, বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সোশাল মিডিয়ার কনভেনার পৃথ্বীরাজ নস্করের খুনের নেপথ্যে কোনো রাজনীতি নেই। বিবাহ বহির্ভূত একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই খুন হয়েছেন উস্তির বিজেপি কর্মী।

ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) মিতুন কুমার দে বলেন, এই খুনের ঘটনায় রাজনীতির কোনও যোগ নেই। সুজাতা পোদ্দার নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত মহিলা জানিয়েছেন, মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন ওই বিজেপি কর্মী। তাঁর সাথে ওই বিজেপি কর্মীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিলো ৬ বছর ধরে। ওইদিন বিজেপির দলীয় অফিসে তাঁকে ডেকে মদ খাওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলো পৃথ্বীরাজ। যৌন সম্পর্ক করতেও তাঁকে জোরাজুরি করা হয়। আর তখনই ওই মহিলা টেবিলে পড়ে থাকা ব্লেড দিয়ে বিজেপি কর্মীর যৌনাঙ্গে আঘাত করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়।

৪ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন ওই বিজেপি কর্মী। সেদিন বিকেলের পর থেকে আর তাঁর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা যায়নি। দুদিন অপেক্ষা করেও পৃথ্বীরাজের কোনও খোঁজ না পেয়ে, ৭ নভেম্বর উস্তি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। মৃত কর্মীর বাড়ির কাছেই রয়েছে বিজেপির পার্টি অফিস। পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার রাতে বাড়ির জানলা দিয়ে উঁকি মারতেই একজনের দেহ চাদর দিয়ে ঢাকা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কিন্তু গেটে তালা দেওয়া থাকায় ভিতরে ঢুকতে পারেননি। পুলিশ এসে তালা ভেঙে পৃথ্বীরাজের রক্তাক্ত দেহ বেঞ্চের উপর পড়ে থাকতে দেখে। কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল সেই রহস্য উদঘাটনে নেমে পড়ে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। পৃথ্বীরাজের দেহের কাছে কোনও ফোন পাওয়া যায়নি। পুলিশ মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, ওই নেতার দুই মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই মতো তাঁদেরকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। সেই জিজ্ঞাসাবাদেই ভেঙে পড়েন সুজাতা। স্বীকার করে নেন তাঁর অপরাধের কথা।

মৃত পৃথ্বীরাজ নস্করের ভাই তীর্থরাজ নস্কর রবিবার বলেন, পুলিশের প্রতি তাদের পূর্ণ আস্থা আছে, তবে এই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ওই মহিলা একা এই কাজ করতে পারে না,এর পিছনে আরো কয়েকজনথাকতে পারে।তাদেরকে চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন পৃথ্বীরাজের ভাই। অন্যদিকে, গ্রেফতার হওয়া মহিলা সুজাতা পোদ্দারকে রবিবার ডায়মন্ডহারবার এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক অভিযুক্তকে সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।