০১ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ময়নাগুড়ি ট্রেন দুর্ঘটনা! সামনে এল গাফিলতির চিত্র

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৯ জানুয়ারী ২০২২, বুধবার
  • / 55

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ময়নাগুড়ি ট্রেন দুর্ঘটনায় সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই দুর্ঘটনার পরেই উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেয় রেল। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল তাদের যে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে। সেই রিপোর্টে জানা গেছে, ময়নাগুড়ির কাছে ট্রেন দুর্ঘটনা হয়, সেই ইঞ্জিনটির পরীক্ষাই করানো হয়নি। যে টা প্রতি মাসে পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পরীক্ষা ছাড়াই চালানো হয়েছিল। কেন এই ধরনের গাফিলতি তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।   ১৩ তারিখের দুর্ঘটনা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে আলিপুরদুয়ার ডিভিশন। সেই রিপোর্টের দ্বিতীয় পয়েন্টে উল্লেখ করা হয়েছে ইঞ্জিনের নম্বর

IC ও IA কবে করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে IC করা হয়েছে গত বছরের ১১ নভেম্বর। IA বাকি আছে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি থেকে। রেলের রিপোর্টে তাই উল্লেখ করা হয়েছে। এই IC ও IA কী? ভারতীয় রেল পরিচালনার জন্য যে বই আছে। তার চ্যাপ্টার থ্রি’তে লোকোমটিভ রক্ষণাবেক্ষণের নিয়মাবলী উল্লেখ করা আছে। এই চ্যাপ্টারের ৩০৩০২-তে বলা আছে শিডিউল ইন্সপেকশনের নিয়মকানুন। আর এই পরীক্ষা মোট ৭টি ভাগে বিভক্ত। সেই রুল বুক অনুযায়ী, IA-এর মানে হল প্রতি মাসে পরীক্ষা। আর IC পরীক্ষা হল প্রতি চার মাসের পরীক্ষা। অর্থাৎ রুল বুক অনুযায়ী প্রতি মাসে ইঞ্জিনের যে পরীক্ষা হয়, সেই পরীক্ষা করা হয়নি৷ আর দুর্ঘটনার যে রিপোর্ট রেল তৈরি করেছে সেখানেই পরীক্ষা বা রক্ষণাবেক্ষণ যে করা হয়নি সেটা উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: জাতিগত জনগণনায় গাফিলতি, সাসপেন্ড তিন আধিকারিক

দুর্ঘটনার তদন্তে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির সামনে এসেছে একটি ভাইরাল ভিডিও। সিসিটিভি ফুটেজের সেই ভিডিওতে একটি লেভেল ক্রসিং দেখা যাচ্ছে। গত ১৩ তারিখ, রাত ২টো ৪ মিনিটের ভিডিও এটি। ১২২ নম্বর এই লেভেল ক্রসিংয়ের ফুটেজ অনুযায়ী, যে ট্রেনটিকে দেখা যাচ্ছে সেটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের ছবি। টাইম টেবল অনুযায়ী ট্রেনটি সেই সময় দীনদয়াল উপাধ্যায়-পটনা সেকশনের মধ্যে থাকা উচিত। ভিডিও আসলে চুনার স্টেশনের। দুর্ঘটনাস্থলে যে ভাবে স্লিপারের মাঝের অংশ ভাঙা ছিল, সেরকমই আঘাতের চিহ্ন ট্রেন চলে যাওয়ার পরে ওই লেভেল ক্রসিংয়ে স্লিপারের অংশে দেখা গেছে। ফলে ধরে দীর্ঘ সময় ধরে এই সমস্যা চলছে। তার জেরে এই দুর্ঘটনা কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: তদন্তে গড়িমসি?  সিবিআইয়ের অফিসারকে সরালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

গত ১৩ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গে ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনা। ময়নাগুড়িতে উল্টে যায় বিকানির এক্সপ্রেস। পাটনা-গুয়াহাটি বিকানের গামী এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার সময় ট্রেনের গতিববেগ ছিল  ঘন্টায় ৪০ কিমি  বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। লাইনচ্যুত হয় পাটনা থেকে গুয়াহাটিগামী ১৫৬৩৩ আপ বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। এই দুর্ঘটনার জেরে ৯ জনের মৃত্যু হয়, আহত হয় ৩৭ জন। তাঁদের উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রেল এই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেয়। ১২টি কামরা দুর্ঘটনার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে ৭টি কামরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ওই ট্রেনটি ছাড়ার সময় বিকেনের থেকে প্রায় ৭০০ যাত্রী ওঠেন। কেন্দ্রের তরফ থেকে নিহত-আহতদের ক্ষতিপূরণে কথা ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন: জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককের গাফিলতিতে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় সমিতির ডেপুটেশন

 

 

 

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ময়নাগুড়ি ট্রেন দুর্ঘটনা! সামনে এল গাফিলতির চিত্র

আপডেট : ১৯ জানুয়ারী ২০২২, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ময়নাগুড়ি ট্রেন দুর্ঘটনায় সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই দুর্ঘটনার পরেই উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেয় রেল। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল তাদের যে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে। সেই রিপোর্টে জানা গেছে, ময়নাগুড়ির কাছে ট্রেন দুর্ঘটনা হয়, সেই ইঞ্জিনটির পরীক্ষাই করানো হয়নি। যে টা প্রতি মাসে পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পরীক্ষা ছাড়াই চালানো হয়েছিল। কেন এই ধরনের গাফিলতি তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।   ১৩ তারিখের দুর্ঘটনা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে আলিপুরদুয়ার ডিভিশন। সেই রিপোর্টের দ্বিতীয় পয়েন্টে উল্লেখ করা হয়েছে ইঞ্জিনের নম্বর

IC ও IA কবে করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে IC করা হয়েছে গত বছরের ১১ নভেম্বর। IA বাকি আছে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি থেকে। রেলের রিপোর্টে তাই উল্লেখ করা হয়েছে। এই IC ও IA কী? ভারতীয় রেল পরিচালনার জন্য যে বই আছে। তার চ্যাপ্টার থ্রি’তে লোকোমটিভ রক্ষণাবেক্ষণের নিয়মাবলী উল্লেখ করা আছে। এই চ্যাপ্টারের ৩০৩০২-তে বলা আছে শিডিউল ইন্সপেকশনের নিয়মকানুন। আর এই পরীক্ষা মোট ৭টি ভাগে বিভক্ত। সেই রুল বুক অনুযায়ী, IA-এর মানে হল প্রতি মাসে পরীক্ষা। আর IC পরীক্ষা হল প্রতি চার মাসের পরীক্ষা। অর্থাৎ রুল বুক অনুযায়ী প্রতি মাসে ইঞ্জিনের যে পরীক্ষা হয়, সেই পরীক্ষা করা হয়নি৷ আর দুর্ঘটনার যে রিপোর্ট রেল তৈরি করেছে সেখানেই পরীক্ষা বা রক্ষণাবেক্ষণ যে করা হয়নি সেটা উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: জাতিগত জনগণনায় গাফিলতি, সাসপেন্ড তিন আধিকারিক

দুর্ঘটনার তদন্তে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির সামনে এসেছে একটি ভাইরাল ভিডিও। সিসিটিভি ফুটেজের সেই ভিডিওতে একটি লেভেল ক্রসিং দেখা যাচ্ছে। গত ১৩ তারিখ, রাত ২টো ৪ মিনিটের ভিডিও এটি। ১২২ নম্বর এই লেভেল ক্রসিংয়ের ফুটেজ অনুযায়ী, যে ট্রেনটিকে দেখা যাচ্ছে সেটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের ছবি। টাইম টেবল অনুযায়ী ট্রেনটি সেই সময় দীনদয়াল উপাধ্যায়-পটনা সেকশনের মধ্যে থাকা উচিত। ভিডিও আসলে চুনার স্টেশনের। দুর্ঘটনাস্থলে যে ভাবে স্লিপারের মাঝের অংশ ভাঙা ছিল, সেরকমই আঘাতের চিহ্ন ট্রেন চলে যাওয়ার পরে ওই লেভেল ক্রসিংয়ে স্লিপারের অংশে দেখা গেছে। ফলে ধরে দীর্ঘ সময় ধরে এই সমস্যা চলছে। তার জেরে এই দুর্ঘটনা কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: তদন্তে গড়িমসি?  সিবিআইয়ের অফিসারকে সরালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

গত ১৩ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গে ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনা। ময়নাগুড়িতে উল্টে যায় বিকানির এক্সপ্রেস। পাটনা-গুয়াহাটি বিকানের গামী এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার সময় ট্রেনের গতিববেগ ছিল  ঘন্টায় ৪০ কিমি  বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। লাইনচ্যুত হয় পাটনা থেকে গুয়াহাটিগামী ১৫৬৩৩ আপ বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। এই দুর্ঘটনার জেরে ৯ জনের মৃত্যু হয়, আহত হয় ৩৭ জন। তাঁদের উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রেল এই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেয়। ১২টি কামরা দুর্ঘটনার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে ৭টি কামরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ওই ট্রেনটি ছাড়ার সময় বিকেনের থেকে প্রায় ৭০০ যাত্রী ওঠেন। কেন্দ্রের তরফ থেকে নিহত-আহতদের ক্ষতিপূরণে কথা ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন: জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককের গাফিলতিতে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় সমিতির ডেপুটেশন