২২ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেন্দ্রের বিচার: সেরা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রাজ্যের সাঁওতালদিহি, শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর 

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৫ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
  • / 57

পুবের কলম প্রতিবেদক: আদানি-আম্বানিকে-টাটা পেছনে ফেলে এগিয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম লিমিটেড (ডব্লিউবিপিডিসিএল)। ভারত সরকারের বিদ্যুৎ মন্ত্রকের বিচারে দেশের সেরা কর্মক্ষম তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মর্যাদা পেল ডব্লিউবিপিডিসিএল -এর সাঁওতালদিহি। এছাড়াও দেশের সেরা দশটি কর্মক্ষম তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের তালিকায় দ্বিতীয়, চতুর্থ এবং নবম স্থানটি দখল করল যথাক্রমে এই রাজ্যেরহ সরকারি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বক্রেশ্বর, সাগরদিঘি এবং ব্যান্ডেল। রাজ্যের এই কৃতিত্বে খুশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সুখবরে এক্স হ্যান্ডেলে প্রথমেই তিনি লিখেছেন, ‘উই আর দ্য বেস্ট, ইয়েট এগেন’। এদিন তিনি বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

নির্দেশনা ও সহায়তার কারণেই বাংলা এই কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছে।

ভারত সরকারের বিদ্যুৎ মন্ত্রকের-এর অধীনস্থ কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ (সিইএ) দেশের ২০১ টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বার্ষিক র‌্যাঙ্কিং ঘোষণা করেছে, যা কার্যক্ষম দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে পিএলএফ তথা প্ল্যান্ট লোড ফ্যাক্টরের নিরিখে গণনা করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ সালের সিইএ র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী ডব্লিউবিপিডিসিএল -এর সাঁওতালদিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যার পিএলএফ ৯৪.৩৮ শতাংশ, দেশের সেরা অর্থাৎ প্রথম স্থানের মর্যাদা পেল। দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে বক্রেশ্বর (পিএলএফ ৯৩.৩ শতাংশ)। এক্ষেত্রে সাগরদিঘি (পিএলএফ – ৯০.৯ শতাংশ) চতুর্থ এবং ব্যান্ডেল ( পিএলএফ ৮৯.২ শতাংশ) নবম স্থানে রয়েছে। এক্ষেত্রে এনটিপিসি (পিএলএফ ৭৬.১ শতাংশ) , ডিভিসি (পিএলএফ -৭৫,৭ শতাংশ) , আদানি পাওয়ার (পিএলএফ ৭৩.০২ শতাংশ), রিলায়েন্স পাওয়ার (পিএলএফ- ৭৭.৮ শতাংশ) , টাটা (পিএলএফ – ৭২ শতাংশ) -এর মতো সংস্থাগুলিকে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের নিরিখে বেশ অনেকটাই ছাপিয়ে গিয়েছে ডব্লিউবিপিডিসিএল। পরিসংখ্যান বলেছে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে সারা দেশের মোট উৎপাদনের গড় যেখানে পিএলএফ -এর নিরিখে ৭০ শতাংশ। সেখানে রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কর্মক্ষমতা ৯০ শতাংশের মতো।

 

মুখ্যমন্ত্রী এদিন এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন কর্মীদের নিরন্তর পরিশ্রমের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। কাজের মাধ্যমে নিজেদের সেরাটা বের করে আনার জন্য এবং রাজ্যকে গর্বিত করার জন্য অভিনন্দন। কিছুদিন আগেই কেন্দ্রের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী অসংগঠিত ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি উৎপাদন শিল্পে দেশের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করেছে বাংলা। মার্চের শেষেই আইসিএমআর -এর প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী পূর্ব ভারতের মধ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সেরা গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম স্থান অধিকার করেছে কলকাতার মেডিকেল কলেজ। এবার বিদ্যুতেও এল দেশের মধ্যে সেরার শিরোপা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে বর্তমানে ডব্লিউবিপিডিসিএল -এর মোট স্থাপিত ক্ষমতা ৪২৬৫ মেগাওয়াট। এর সঙ্গে সাগরদিধি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি সুপার ক্রিটিক্যাল উইনিট শীঘ্রই উৎপাদন শুরু করবে। এই মাইলফলক ডব্লিউবিপিডিসিএল -এর অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

এই কৃতিত্বের নেপথ্যে রয়েছে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের একাধিক পরিকল্পনা ও কর্মসূচি। এর মধ্যে রয়েছে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদৎ কেন্দ্রের সুরক্ষা, নিরাপত্তা বজায় রাখা, পরিবেশ দূষণের উপাদানগুলি কম করা ইত্যাদি। পুরনো ইউনিটগুলির মধ্যেও কোলাঘাটের তিন ও চার নম্বর ইউনিট এবং ব্যান্ডেলের দুই নম্বর ইউনিট ব্যতিক্রমী কর্মক্ষমতা দেখিয়েছে। নিজস্ব খনি থেকে ১০০ শতাংশ কয়লা সরবরাহ ডব্লিইবিপিডিসিএল এই কর্মক্ষমতা দেখাতে পেরেছে। আগামী দিনে দেওচা পাচামী থেকে কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে। যেকথা মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই বলে থাকেন। শীর্ষ কর্তৃপক্ষের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির নিয়মিত পরিদর্শন, পুরনো ইউনিটগুলির পুনরুদ্ধার , পুরস্কার প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে কর্মীদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের মতে সুষ্ঠু পরিচালনা ও উন্নয়নমুখী ভাবনার জন্যই রাজ্যের সরকারি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি উৎপাদনের নিরিখে এগিয়ে গেল।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কেন্দ্রের বিচার: সেরা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রাজ্যের সাঁওতালদিহি, শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর 

আপডেট : ৫ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: আদানি-আম্বানিকে-টাটা পেছনে ফেলে এগিয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম লিমিটেড (ডব্লিউবিপিডিসিএল)। ভারত সরকারের বিদ্যুৎ মন্ত্রকের বিচারে দেশের সেরা কর্মক্ষম তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মর্যাদা পেল ডব্লিউবিপিডিসিএল -এর সাঁওতালদিহি। এছাড়াও দেশের সেরা দশটি কর্মক্ষম তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের তালিকায় দ্বিতীয়, চতুর্থ এবং নবম স্থানটি দখল করল যথাক্রমে এই রাজ্যেরহ সরকারি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বক্রেশ্বর, সাগরদিঘি এবং ব্যান্ডেল। রাজ্যের এই কৃতিত্বে খুশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সুখবরে এক্স হ্যান্ডেলে প্রথমেই তিনি লিখেছেন, ‘উই আর দ্য বেস্ট, ইয়েট এগেন’। এদিন তিনি বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

নির্দেশনা ও সহায়তার কারণেই বাংলা এই কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছে।

ভারত সরকারের বিদ্যুৎ মন্ত্রকের-এর অধীনস্থ কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ (সিইএ) দেশের ২০১ টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বার্ষিক র‌্যাঙ্কিং ঘোষণা করেছে, যা কার্যক্ষম দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে পিএলএফ তথা প্ল্যান্ট লোড ফ্যাক্টরের নিরিখে গণনা করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ সালের সিইএ র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী ডব্লিউবিপিডিসিএল -এর সাঁওতালদিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যার পিএলএফ ৯৪.৩৮ শতাংশ, দেশের সেরা অর্থাৎ প্রথম স্থানের মর্যাদা পেল। দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে বক্রেশ্বর (পিএলএফ ৯৩.৩ শতাংশ)। এক্ষেত্রে সাগরদিঘি (পিএলএফ – ৯০.৯ শতাংশ) চতুর্থ এবং ব্যান্ডেল ( পিএলএফ ৮৯.২ শতাংশ) নবম স্থানে রয়েছে। এক্ষেত্রে এনটিপিসি (পিএলএফ ৭৬.১ শতাংশ) , ডিভিসি (পিএলএফ -৭৫,৭ শতাংশ) , আদানি পাওয়ার (পিএলএফ ৭৩.০২ শতাংশ), রিলায়েন্স পাওয়ার (পিএলএফ- ৭৭.৮ শতাংশ) , টাটা (পিএলএফ – ৭২ শতাংশ) -এর মতো সংস্থাগুলিকে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের নিরিখে বেশ অনেকটাই ছাপিয়ে গিয়েছে ডব্লিউবিপিডিসিএল। পরিসংখ্যান বলেছে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে সারা দেশের মোট উৎপাদনের গড় যেখানে পিএলএফ -এর নিরিখে ৭০ শতাংশ। সেখানে রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কর্মক্ষমতা ৯০ শতাংশের মতো।

 

মুখ্যমন্ত্রী এদিন এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন কর্মীদের নিরন্তর পরিশ্রমের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। কাজের মাধ্যমে নিজেদের সেরাটা বের করে আনার জন্য এবং রাজ্যকে গর্বিত করার জন্য অভিনন্দন। কিছুদিন আগেই কেন্দ্রের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী অসংগঠিত ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি উৎপাদন শিল্পে দেশের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করেছে বাংলা। মার্চের শেষেই আইসিএমআর -এর প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী পূর্ব ভারতের মধ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সেরা গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম স্থান অধিকার করেছে কলকাতার মেডিকেল কলেজ। এবার বিদ্যুতেও এল দেশের মধ্যে সেরার শিরোপা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে বর্তমানে ডব্লিউবিপিডিসিএল -এর মোট স্থাপিত ক্ষমতা ৪২৬৫ মেগাওয়াট। এর সঙ্গে সাগরদিধি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি সুপার ক্রিটিক্যাল উইনিট শীঘ্রই উৎপাদন শুরু করবে। এই মাইলফলক ডব্লিউবিপিডিসিএল -এর অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

এই কৃতিত্বের নেপথ্যে রয়েছে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের একাধিক পরিকল্পনা ও কর্মসূচি। এর মধ্যে রয়েছে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদৎ কেন্দ্রের সুরক্ষা, নিরাপত্তা বজায় রাখা, পরিবেশ দূষণের উপাদানগুলি কম করা ইত্যাদি। পুরনো ইউনিটগুলির মধ্যেও কোলাঘাটের তিন ও চার নম্বর ইউনিট এবং ব্যান্ডেলের দুই নম্বর ইউনিট ব্যতিক্রমী কর্মক্ষমতা দেখিয়েছে। নিজস্ব খনি থেকে ১০০ শতাংশ কয়লা সরবরাহ ডব্লিইবিপিডিসিএল এই কর্মক্ষমতা দেখাতে পেরেছে। আগামী দিনে দেওচা পাচামী থেকে কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে। যেকথা মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই বলে থাকেন। শীর্ষ কর্তৃপক্ষের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির নিয়মিত পরিদর্শন, পুরনো ইউনিটগুলির পুনরুদ্ধার , পুরস্কার প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে কর্মীদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের মতে সুষ্ঠু পরিচালনা ও উন্নয়নমুখী ভাবনার জন্যই রাজ্যের সরকারি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি উৎপাদনের নিরিখে এগিয়ে গেল।