০২ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মায়ের স্মৃতিতে ‘মিনি তাজমহল’ চেন্নাইয়ের আমিরুদ্দিনের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১১ জুন ২০২৩, রবিবার
  • / 81

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি তাজমহল। দেশের ঐতিহ্যবাহী সর্বাধিক প্রশংসিত স্মৃতিসৌধগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতিতে তৈরি করেছিলেন এই স্মৃতিসৌধ। মুঘল সম্রাটের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে  চেন্নাইয়ের এক ব্যবসায়ী সম্প্রতি একটি ‘মিনি তাজমহল’ তৈরি করেছেন। তিনি অবশ্য তাঁর মায়ের স্মৃতিতে এই ‘তাজমহল’টি তৈরি করেছেন।

প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয় করে এই ‘মিনি তাজমহল’টি তৈরি করেছেন তামিলনাড়ুর তিরুভারুর শহরের হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী আমিরুদিন শেখ দাউদ। আমিরুদ্দিনরা ৫ ভাইবোন। তাঁদের মধ্যে আমিরুদ্দিনই একমাত্র ছেলে। তাঁদের বাবা আবদুল কাদের শেখ দাউদও ছিলেন একজন  ব্যবসায়ী। তিনি চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসা করতেন। আমিরুদ্দিনরা যখন খুব ছোট তখনই তিনি ইন্তেকাল করেন।

আমরুদিনের মা জিলানি বিবি সেই কঠিন সময়ে সংসারের হাল ধরেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সহনশীল এক মহিলা। পারিবারিক ব্যবসা চালানোর পাশাপাশি অনেক কষ্ট সহ্য করে তাঁর চার কন্যা ও এক পুত্র সন্তানকে বড় করে তোলেন। সুশিক্ষিত করে তোলেন তাঁদের। যোগ্য পাত্র খুঁজে মেয়েদের বিয়ে দেন। ২০২০ সালে ইন্তেকাল করেন জিলিনা বিবি। মায়ের মৃত্যু আমরুদিনকে গভীরভাবে ধাক্কা দিয়েছিল। যেভাবে মা তাঁকে বুকে আগলিয়ে বড় করে তুলেছিলেন, শিক্ষিত করে তুলেছিলেন, তাঁর প্রতিটি কাজে পাশে থেকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন সেসব তিনি ভুলতে পারেননি।

প্রতি বছর মায়ের মৃত্যুদিনে তিনি শতাধিক গরিব-দুঃস্থকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। আমরুদিন অনুভব করেছিলেন, তাঁর মায়ের জন্য শুধু এটুকুই যথেষ্ট নয়। এরপরই মায়ের স্মৃতিতে তিনি একটি ‘মিনি তাজমহল’ তৈরির কথা ভাবেন। এজন্য তিনি তাঁর পৈতৃক গ্রাম আম্মায়িয়াপ্পানে এক একর জমি কিনেছিলেন। সেখানেই শুরু করেছিলেন এই ‘মিনি তাজমহল’ নির্মাণ। আগ্রার তাজমহলের আদলে তিনি এই স্মৃতিসৌধটি তৈরি করার জন্য রাজস্থান থেকে মার্বেল নিয়ে এসেছিলেন। আগ্রার তাজমহলের মতো এখানেও স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে হাঁটার পথ তৈরি করেছিলেন। ২ জুন জনসাধারণের উদ্দেশ্যে এই ‘মিনি তাজমহল’-এর উন্মোচন করা হয়। রাজ্যের বহু মানুষ এই ‘তাজমহল’ দেখতে ভীড় জমান। ‘মিনি তাজমহল’ চত্বরে  একটি মাদ্রাসাও রয়েছে। সেখানে বর্তমানে দশজন ছাত্রের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মায়ের স্মৃতিতে ‘মিনি তাজমহল’ চেন্নাইয়ের আমিরুদ্দিনের

আপডেট : ১১ জুন ২০২৩, রবিবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি তাজমহল। দেশের ঐতিহ্যবাহী সর্বাধিক প্রশংসিত স্মৃতিসৌধগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতিতে তৈরি করেছিলেন এই স্মৃতিসৌধ। মুঘল সম্রাটের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে  চেন্নাইয়ের এক ব্যবসায়ী সম্প্রতি একটি ‘মিনি তাজমহল’ তৈরি করেছেন। তিনি অবশ্য তাঁর মায়ের স্মৃতিতে এই ‘তাজমহল’টি তৈরি করেছেন।

প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয় করে এই ‘মিনি তাজমহল’টি তৈরি করেছেন তামিলনাড়ুর তিরুভারুর শহরের হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী আমিরুদিন শেখ দাউদ। আমিরুদ্দিনরা ৫ ভাইবোন। তাঁদের মধ্যে আমিরুদ্দিনই একমাত্র ছেলে। তাঁদের বাবা আবদুল কাদের শেখ দাউদও ছিলেন একজন  ব্যবসায়ী। তিনি চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসা করতেন। আমিরুদ্দিনরা যখন খুব ছোট তখনই তিনি ইন্তেকাল করেন।

আমরুদিনের মা জিলানি বিবি সেই কঠিন সময়ে সংসারের হাল ধরেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সহনশীল এক মহিলা। পারিবারিক ব্যবসা চালানোর পাশাপাশি অনেক কষ্ট সহ্য করে তাঁর চার কন্যা ও এক পুত্র সন্তানকে বড় করে তোলেন। সুশিক্ষিত করে তোলেন তাঁদের। যোগ্য পাত্র খুঁজে মেয়েদের বিয়ে দেন। ২০২০ সালে ইন্তেকাল করেন জিলিনা বিবি। মায়ের মৃত্যু আমরুদিনকে গভীরভাবে ধাক্কা দিয়েছিল। যেভাবে মা তাঁকে বুকে আগলিয়ে বড় করে তুলেছিলেন, শিক্ষিত করে তুলেছিলেন, তাঁর প্রতিটি কাজে পাশে থেকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন সেসব তিনি ভুলতে পারেননি।

প্রতি বছর মায়ের মৃত্যুদিনে তিনি শতাধিক গরিব-দুঃস্থকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। আমরুদিন অনুভব করেছিলেন, তাঁর মায়ের জন্য শুধু এটুকুই যথেষ্ট নয়। এরপরই মায়ের স্মৃতিতে তিনি একটি ‘মিনি তাজমহল’ তৈরির কথা ভাবেন। এজন্য তিনি তাঁর পৈতৃক গ্রাম আম্মায়িয়াপ্পানে এক একর জমি কিনেছিলেন। সেখানেই শুরু করেছিলেন এই ‘মিনি তাজমহল’ নির্মাণ। আগ্রার তাজমহলের আদলে তিনি এই স্মৃতিসৌধটি তৈরি করার জন্য রাজস্থান থেকে মার্বেল নিয়ে এসেছিলেন। আগ্রার তাজমহলের মতো এখানেও স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে হাঁটার পথ তৈরি করেছিলেন। ২ জুন জনসাধারণের উদ্দেশ্যে এই ‘মিনি তাজমহল’-এর উন্মোচন করা হয়। রাজ্যের বহু মানুষ এই ‘তাজমহল’ দেখতে ভীড় জমান। ‘মিনি তাজমহল’ চত্বরে  একটি মাদ্রাসাও রয়েছে। সেখানে বর্তমানে দশজন ছাত্রের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।