কুতুব উদ্দিন মোল্লা,ক্যানিং: প্রত্যন্ত সুন্দরবনের সংখ্যালঘু অধুষ্যিত এলাকা ধোসা চন্দনেশ্বর পঞ্চায়েতের তিলপি গ্রাম।তিলপি গ্রামের হতদরিদ্র এক পরিবারে খাদিজা শেখের জন্ম।বাবা নসিম আলি শেখ পেশায়  তিনি ভিন রাজ্যের এক শ্রমিক।মা মোমিনা বিবি শেখ গৃহবধু।পরিবারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে।পড়াশোনায় ছোট থেকে মেধাবী খাদিজা শেখ।নুন আনতে যে পরিবারের পান্তা ফুরায়,সেই পরিবারে জন্মগ্রহণ করে পড়াশোনা করে বড় হওয়া ভীষণ জ্বালা। পরিবারের অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে এক সময় পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় খাদিজার’।পড়াশোনার জন্য আবারও জেদ চেপে বসেছিল খাদিজা র ।একদা নিজের জেদের জন্য বাবা-মায়ের হাত ধরে আবারও ভর্তি হয়েছিল জয়নগর থানার অন্তর্গত ধোসা চন্দনেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিলপি কামালিয়া হাই মাদ্রাসাতে। আমারও পড়তে শুরু করেন খাদিজা শেখ। এই মেধাবী ছাত্রী।ফলে সুযোগ পেয়েই নিজেকে বিকশিত করে তোলার চেষ্টা করে হতদরিদ্র তিলপি গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের একমাত্র মেয়ে।জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। তিলপি কামালিয়া হাই মাদ্রাসা থেকে ১৮৪ জন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল এবছর। ব্যতিক্রম হত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে   খাদিজা শেখ। সে ১৮৪ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করে।

৮ টি বিষয়ে লেটার মার্কস্ সহ খাদিজা র শেখ মোট প্রাপ্ত নম্বর ৭৪৮।বাংলায় ৯৫, ইংরেজিতে ৮০,অঙ্কে ৯১,ভৌত বিঞ্জানে ৯৫,জীবন বিঞ্জানে ৯৮,ইতিহাসে ৯৭ , এবং ভূগোলে ৯৭ নম্বর পেয়েছে।খাদিজার শেখ হতে চায় একজন দক্ষ চিকিৎসক। তার কথায় ,গ্রামের অসংখ্য হতদরিদ্র মানুষ দুরারোগে রোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। অনেক সময় চিকিৎসার জন্য বারুইপুর এমনকি কলকাতায় ছুটতে হয়।যাতে করে গ্রামের মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পায় তারজন্য চিকিৎসক হতেই হবে। তিলপি কামালিয়া হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক কুতুব উদ্দিন জানিয়েছে, ‘  খাদিজা শেখ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করে আমাদের  স্কুলের নাম উজ্জ্বল করেছে। আগামী দিনে আরো এমন খাদিজার শেখ যাতে এই  স্কুল থেকে তৈরী করা যায় সেদিক দিয়ে আমারা কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাবো।’ পাশাপাশি কারণ নারী জাতি কে যদি শিক্ষার আলোয় আনা যায়, তবে দেশ ও দশের উন্নতি সাধন সম্ভব।ফলে খাদিজার মতো আরো দরিদ্র মেধাবী ছাত্রীরা যাতে সমাজের বুকে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তার জন্য আমাদের এই কর্মযঞ্জ।

আরও পড়ুন: হাই মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষায় নজরকাড়া ফল নৌরিন আলামের