করোনার ভয়ে ২০২০ থেকে ছেলেকে নিয়ে স্বেচ্ছাবন্দি মা! স্বামীকেও ঘরে ঢুকতে দিতেন না

- আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, বৃহস্পতিবার
- / 14
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তিনবছর ধরে নিজেকে ঘরবন্দি করে থাকলেন এক মা। করোনার কারণে ভয়ে, আতঙ্কে এমন সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে। এই ঘটনার জেরে এমন কিছু পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যা অস্বস্তিকর। ঘরের ভিতর থেকে জামা-কাপড়ের স্তূপ, চুল, ডাই করা ময়লা-আবর্জনা, শাক-সবজি উদ্ধার হয়েছে। মহিলার স্বামীর মারফৎ খবর পেয়ে দরজা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।
করোনার ভয়ে মৃত্যুর আতঙ্ক যে কোথায় যেতে পারে গুরুগ্রামের চক্করপুরের ঘটনা সেটি প্রমাণ করল। সব থেকে আশ্চর্য্যের বিষয় ওই মহিলা তার স্বামীকেও ঘরে ঢুকতে দেননি। ২০২০ সাল থেকেই ঘরেই বাইরে স্বামী। তাদের ১০ বছরের সন্তান বিগত তিন বছর সূর্যের মুখ দেখেনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, সুজন মাঝি তার স্ত্রী মুনমুন মাঝি ও তাদের ১০ বছরের পুত্রসন্তানকে নিয়ে গুরুগ্রামের চক্করপুরের আবাসনে থাকতেন। করোনার কারণে মৃত্যু ভয়ে আতঙ্কে ভুগতে থাকেন মুনমুন। এই কারণে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নিজেকে ঘরবন্দি করে ফেলেন তিনি। সুজন মাঝি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। তিনি একটি বেসরকারি ফার্মে কর্মরত।
সুজনকেও বাড়িতে ঢুকতে দিতেন মুনমুন। সুজনবাবু নিজের অফিসেই থাকতেন। বাড়িতে নিজেই ছেলের চুল কেটে দেওয়া ছাড়া ইন্ডাকশনে রান্না করতেন মুনমুন। ২০২০ সাল থেকেই এই ধরনের পরিস্থিতি শুরু হয় মাঝি পরিবারে। সুজন ভিডিও কলের মাধ্যমেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এই তিন বছর ধরে বাড়ির যাবতীয় আবর্জনা ঘরেই জমা করে রাখেন তিনি। বাড়ির দেওয়ালে রং পেন্সিল দিয়ে আঁকা থেকে পড়াশোনা চালাত ১০ বছরের ছেলে।
সুজন মাঝি পুলিশকে জানিয়েছেন, ২০২০ সালে প্রথম লকডাউন বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর তিনি অফিসে যান। কিন্তু সেদিনের পর থেকে তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি মুনমুন।
সুজনবাবুর অনুরোধে পুলিশ ও স্বাস্থ্য আধিকারিকদের এক প্রতিনিধি দল এসে তাদের আবাসনের দরজা ভেঙে মুনমুন ও তার ১০ বছরের সন্তানকে উদ্ধার করে। বিগত তিন বছরে বাড়ি ভাড়ার টাকা, ইলেক্ট্রিকের বিল, সন্তানের স্কুল ফি দিয়ে গেছেন সুজন। শাক-সবজি কিনে তিনি বাড়ির বাইরে বসিয়ে রেখে আসতেন।