নরেন্দ্র মোদীর পঞ্চদেশীয় সফর: সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও খনিজ সম্পদ সুরক্ষায় কূটনৈতিক অভিযান

- আপডেট : ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 35
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পঞ্চদেশীয় সফরে বের হচ্ছেন, যার মাধ্যমে তিনি সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের জোগান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক কূটনীতিকে আরও জোরদার করতে চলেছেন।
বুধবার তিনি প্রথমে ঘানার উদ্দেশে রওনা দেবেন, তার পর পর্যায়ক্রমে সফর করবেন ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং নামিবিয়ায়। ৬ ও ৭ জুলাই ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিতব্য ব্রিকস সম্মেলনেও অংশগ্রহণ করবেন তিনি।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সফরের প্রধান দুটি উদ্দেশ্য হল:
-
সন্ত্রাসবাদবিরোধী আন্তর্জাতিক ঐক্য গঠন – বিশেষ করে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মঞ্চে শক্ত বার্তা দেওয়া এবং ব্রিকস সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিতে এই বিষয়ে সরাসরি বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত করা।
-
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের জোগান সুনিশ্চিত করা – লিথিয়াম, গ্রাফাইট প্রভৃতি কৌশলগত খনিজের ব্যাপারে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং নামিবিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সম্ভাবনা।
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ভারত বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সমর্থন জোগাড় করেছে। এবার ব্রিকস সম্মেলনে এই বিষয়টি তুলতে বদ্ধপরিকর নয়াদিল্লি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সচিব (অর্থনৈতিক সম্পর্ক) দাম্মু রবি জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ব্রিকসের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের মতপার্থক্য নেই, এবং ব্রাজিলের সভাপতিত্বে এই বিষয়টি সম্মেলনে অগ্রাধিকার পাবে বলে ভারত আশাবাদী।
নামিবিয়া, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে রয়েছে লিথিয়াম, গ্রাফাইট এবং অন্যান্য দুর্লভ খনিজের বিশাল ভান্ডার। প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য, এই দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলে ভারতের ভবিষ্যৎ চাহিদা মেটানো। পাশাপাশি ব্রাজিলের সঙ্গে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ও গবেষণার ক্ষেত্রেও সহযোগিতা বাড়ানোর দিকেও নজর দেবে ভারত।
ভারতের সোনা আমদানির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল ঘানা। প্রায় তিন দশক পর কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী এই দেশে সফর করছেন। সফরে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ঘানায় ভারতীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধির ঘোষণা করতে পারেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে প্রতিটি রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, নবায়নযোগ্য শক্তি এবং অপ্রচলিত জ্বালানি প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে বলেও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।
এ বছরের ব্রিকস সম্মেলনে চিন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টরা থাকছেন না। এই গোষ্ঠীর সদস্য দেশগুলি হল ভারত, ব্রাজ়িল, রাশিয়া, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। উল্লেখযোগ্যভাবে, ভারত গত সপ্তাহে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশনের (SCO) বিবৃতিতে সই করেনি কারণ সেখানে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের উল্লেখ ছিল না।
আগামী বছর ব্রিকস সম্মেলনের সভাপতিত্ব করবে ভারত। মোদীর এই সফর আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের অবস্থান শক্ত করতে এবং কৌশলগত সম্পদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এক বড় পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হচ্ছে।