০৮ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তদন্তে গড়িমসি?  সিবিআইয়ের অফিসারকে সরালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৩১ জানুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 9

পারিজাত মোল্লা, কলকাতা:  শিক্ষা বিষয়ক নিয়োগ মামলায় একের পর এক সিবিআই তদন্তর নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।যার সিংহভাগই তদন্ত প্রক্রিয়া  আদালতের নজরদারিতে।সিবিআইয়ের প্রতি বিচারপতি প্রথমভাগে যেভাবে বিশ্বাস রেখেছিলেন বিচারপতি। তাতে একসময় তিনি ম্যাজিক দেখার অপেক্ষায় ছিলেন। সময়ের গতিতে ধীরে ধীরে যেন বিচারপতি আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। ইতিমধ্যেই তিনি সিবিআইয়ের সিটের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম ঘটলো না।

 

আরও পড়ুন: যোগী আদিত্যনাথের বুলডোজার প্রয়োজনে আনতে বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির  তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে এদিন তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় । শুধু তাই নয়, সিবিআইয়ের  তদন্তকারী অফিসার সোমনাথ বিশ্বাসকে অবিলম্বে সরানোর নির্দেশও দিলেন বিচারপতি।মঙ্গলবার এই মামলায় হাইকোর্টে  শুনানির সময়ে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, সোমনাথ বিশ্বাসকে অপসারণের পর দুপুর ২ টোর মধ্যে নতুন তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ করতে হবে সিবিআইকে। তারপর তা আদালতকে জানাতে হবে।নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সিট গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর নির্দেশে বলেন, -‘ সিবিআইয়ের ডিআইজিকে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রতি মুহূর্তে অবহিত থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: মঙ্গলাহাট পরিদর্শনে এসে পুরো ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি নওশাদ সিদ্দিকীর

আদালত জানতে চাইলে তা হাইকোর্ট  জানাতে হবে’।নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের ব্যাপারে বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম থেকেই কড়া অবস্থান নিয়েছেন । বাংলায় এর আগে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ রয়েছে। গত ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট চিটফান্ড তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।  আট বছর কেটে গেলেও কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি তা গুটিয়ে আনতে পারেনি। হয়তো  এই সব কারণেই বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায় প্রায় নিয়ম করে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তের অগ্রগতির ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন। সিবিআই এবং ইডি—দুই কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সির কাছে বারবার কৈফিয়তও তলব করছেন তিনি।

আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীতে দুই পাক চর,  এবার সিআইডির পাশাপাশি তদন্তে সিবিআই

মঙ্গলবার প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। সেখানেই প্রাথমিকে নিয়োগ মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা এক সিবিআই কর্তার নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। ওই সিবিআই কর্তার নাম সোমনাথ বিশ্বাস। তিনি প্রাথমিকের নিয়োগ মামলায় তৈরি সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিটের সদস্য। মঙ্গলবার সোমনাথের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি বলেন, ”সিবিআইয়ের সিট থেকে সোমনাথ বিশ্বাসকে বাদ দিতে হবে। দুপুর ২টোর মধ্যে নতুন অফিসারের নামও জানাতে হবে সিবিআইকে।”সোমনাথ বিশ্বাস  সিবিআইয়ের ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। কেন তাঁকে সরানো হল? তা মঙ্গলবার  স্পষ্ট করেননি বিচারপতি। তবে কারণ না জানালেও সিবিআই কর্তা সোমনাথ সম্পর্কে তাঁর নির্দেশ ছিল স্পষ্ট।

বিচারপতি জানিয়ে দেন, ওই সিবিআই কর্তা ”তদন্তের কোনও কাজে যুক্ত থাকতে পারবেন না। কোনও ফাইল স্পর্শ করতে পারবেন না। তাঁর ব্যাপারে ডিআইজি পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।”বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশ তাত্‍পর্যপূর্ণ কারণ, তিনিই রাজ্যের স্কুল নিয়োগের দুর্নীতির তদন্তে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির উপর আস্থা রেখেছিলেন। ইডি এবং সিবিআইয়ের হাতে বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলার তদন্তভার তুলে দিয়েছেন তিনি। সেই তিনিই সিবিআই কর্তাকে তদন্তভার থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়ায় কারণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।এদিন অবশ্য মঙ্গলবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ওই সিবিআই কর্তা উপস্থিত ছিলেন না। সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, -‘তিনি অসুস্থ হওয়ায় আদালতে হাজির থাকতে পারেননি’।

 

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

তদন্তে গড়িমসি?  সিবিআইয়ের অফিসারকে সরালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

আপডেট : ৩১ জানুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার

পারিজাত মোল্লা, কলকাতা:  শিক্ষা বিষয়ক নিয়োগ মামলায় একের পর এক সিবিআই তদন্তর নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।যার সিংহভাগই তদন্ত প্রক্রিয়া  আদালতের নজরদারিতে।সিবিআইয়ের প্রতি বিচারপতি প্রথমভাগে যেভাবে বিশ্বাস রেখেছিলেন বিচারপতি। তাতে একসময় তিনি ম্যাজিক দেখার অপেক্ষায় ছিলেন। সময়ের গতিতে ধীরে ধীরে যেন বিচারপতি আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। ইতিমধ্যেই তিনি সিবিআইয়ের সিটের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম ঘটলো না।

 

আরও পড়ুন: যোগী আদিত্যনাথের বুলডোজার প্রয়োজনে আনতে বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির  তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে এদিন তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় । শুধু তাই নয়, সিবিআইয়ের  তদন্তকারী অফিসার সোমনাথ বিশ্বাসকে অবিলম্বে সরানোর নির্দেশও দিলেন বিচারপতি।মঙ্গলবার এই মামলায় হাইকোর্টে  শুনানির সময়ে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, সোমনাথ বিশ্বাসকে অপসারণের পর দুপুর ২ টোর মধ্যে নতুন তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ করতে হবে সিবিআইকে। তারপর তা আদালতকে জানাতে হবে।নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সিট গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর নির্দেশে বলেন, -‘ সিবিআইয়ের ডিআইজিকে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রতি মুহূর্তে অবহিত থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: মঙ্গলাহাট পরিদর্শনে এসে পুরো ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি নওশাদ সিদ্দিকীর

আদালত জানতে চাইলে তা হাইকোর্ট  জানাতে হবে’।নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের ব্যাপারে বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম থেকেই কড়া অবস্থান নিয়েছেন । বাংলায় এর আগে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ রয়েছে। গত ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট চিটফান্ড তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।  আট বছর কেটে গেলেও কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি তা গুটিয়ে আনতে পারেনি। হয়তো  এই সব কারণেই বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায় প্রায় নিয়ম করে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তের অগ্রগতির ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন। সিবিআই এবং ইডি—দুই কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সির কাছে বারবার কৈফিয়তও তলব করছেন তিনি।

আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীতে দুই পাক চর,  এবার সিআইডির পাশাপাশি তদন্তে সিবিআই

মঙ্গলবার প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। সেখানেই প্রাথমিকে নিয়োগ মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা এক সিবিআই কর্তার নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। ওই সিবিআই কর্তার নাম সোমনাথ বিশ্বাস। তিনি প্রাথমিকের নিয়োগ মামলায় তৈরি সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিটের সদস্য। মঙ্গলবার সোমনাথের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি বলেন, ”সিবিআইয়ের সিট থেকে সোমনাথ বিশ্বাসকে বাদ দিতে হবে। দুপুর ২টোর মধ্যে নতুন অফিসারের নামও জানাতে হবে সিবিআইকে।”সোমনাথ বিশ্বাস  সিবিআইয়ের ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। কেন তাঁকে সরানো হল? তা মঙ্গলবার  স্পষ্ট করেননি বিচারপতি। তবে কারণ না জানালেও সিবিআই কর্তা সোমনাথ সম্পর্কে তাঁর নির্দেশ ছিল স্পষ্ট।

বিচারপতি জানিয়ে দেন, ওই সিবিআই কর্তা ”তদন্তের কোনও কাজে যুক্ত থাকতে পারবেন না। কোনও ফাইল স্পর্শ করতে পারবেন না। তাঁর ব্যাপারে ডিআইজি পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।”বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশ তাত্‍পর্যপূর্ণ কারণ, তিনিই রাজ্যের স্কুল নিয়োগের দুর্নীতির তদন্তে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির উপর আস্থা রেখেছিলেন। ইডি এবং সিবিআইয়ের হাতে বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলার তদন্তভার তুলে দিয়েছেন তিনি। সেই তিনিই সিবিআই কর্তাকে তদন্তভার থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়ায় কারণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।এদিন অবশ্য মঙ্গলবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ওই সিবিআই কর্তা উপস্থিত ছিলেন না। সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, -‘তিনি অসুস্থ হওয়ায় আদালতে হাজির থাকতে পারেননি’।