০১ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নয়া রাজনৈতিক দল গড়ে দেশ বাঁচাতে চাই, ঘোষণা জেন-জি নেতার

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রবিবার
  • / 368

পুবের কলম, আন্তর্জাতিক ডেস্ক:  নেপালে শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে জেন-জি প্রজন্মের তরুণদের আন্দোলনের নেতা ঘোষণা দিয়েছেন, দেশে আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। জনগণের সরকার গঠনের জন্য তাঁরা ‘শেষ পর্যন্ত লড়াই করবেন’। তরুণ নেপালিদের আন্দোলনে দুই দিনের মধ্যে অলি সরকারের পতন হয়েছিল।

এক সাক্ষাৎকারে আন্দোলনের নেতা সুদান গুরুং বলেন, প্রচলিত রাজনৈতিক দলের পরিবর্তে ‘পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন’ গড়ে তুলতে দেশজুড়ে তাঁরা সমর্থকদের সংগঠিত করার কাজ করছেন। ‘স্বার্থপর’ ও ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ সাবেক সরকার ও রাজনীতিকদের বিষয়ে গুরুং বলেন, ‘তাঁরা আমাদের রাজনীতিতে টেনে এনেছেন। যদি তাঁরা রাজনীতিই চান, তবে তা-ই পাবেন। আমরা পরবর্তী নির্বাচনে লড়ব। কারণ, আমরা এখন পিছু হটব না।’

আরও পড়ুন: হেলিকপ্টারে করে পালালেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী

৩৬ বছর বয়সী গুরুং মূলত নেপালের তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গণ-অভ্যুত্থানের পরিচিত মুখ। ওই আন্দোলনে তাঁকে নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা গেছে। সরকার ফেসবুক, এক্স, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা আদান-প্রদানের প্লাটফর্ম বন্ধ করে দিলে তরুণেরা প্রতিবাদে রাজপথে নামেন।

আরও পড়ুন: চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক আন্দোলনের নেতা সুবল সোরেন প্রয়াত

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ে নিবন্ধন ও নজরদারির অধীন আসতে ব্যর্থ হয়েছে। শিগগিরই এই বিক্ষোভ দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে গণ,আন্দোলনে রূপ নেয়। বিক্ষোভ চলাকালে কয়েক ডজন তরুণ নিহত ও হাজার হাজার মানুষ আহত হন।

আরও পড়ুন: ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলনের ডাক ল’বোর্ডের

গুরুং বিশ্বাস করেন, তাঁরা দেশ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত। স্বেচ্ছাসেবকেরা আইন ও যোগাযোগ কমিটি গঠন করছে এবং ডিসকর্ড ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সারা দেশ থেকে নীতিগত দাবি সংগ্রহ করছে। বিক্ষোভের সময় সংগঠিত হতে এসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়েছিল। এই আন্দোলনের নেতা বলেন, তাঁদের দল ‘নেপালের প্রতিটি মানুষের কণ্ঠস্বর যাতে শোনা যায়’, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। গুরুংয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা কম। বরং তিনি ‘দলবদ্ধভাবে’ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। গুরুং বলেন, ‘আমি যদি কেবল এককভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি, তাহলে আমরা তরুণদের এই শক্তিকে কাজে লাগাতে পারব না। একসঙ্গে আমরা আরও শক্তিশালী।’

এই আন্দোলনের নেতারা দুর্নীতিবিরোধী এজেন্ডার বাইরেও কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তাঁরা নেপালের পর্যটন খাতকে চাঙা করতে এবং ‘বাইরের হস্তক্ষেপ’ ছাড়াই প্রতিবেশী ভারত ও চিনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার পরিকল্পনা করছেন। গুরুং বলেন, ‘আমাদের তাদের সম্মান করতে হবে, তাদেরও আমাদের সম্মান করতে হবে।’

নেপালের গণআন্দোলনের এই নেতা আগামী মার্চের নির্বাচনে পুরোনো রাজনৈতিক নেতাদের দেখতে চান না। তিনি বিক্ষোভকারীদের হত্যা ও দুর্নীতির দ্রুত তদন্ত করতে অন্তর্র্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গুরুং বলেন, ‘আমি ভয় পাই না…শুধু আমাকে হত্যা করে কিছুই হবে না। আমাকে আমার দেশকে বাঁচাতে হবে। কারণ, এখনই সময়, নইলে আর কখনো নয়।’

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নয়া রাজনৈতিক দল গড়ে দেশ বাঁচাতে চাই, ঘোষণা জেন-জি নেতার

আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম, আন্তর্জাতিক ডেস্ক:  নেপালে শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে জেন-জি প্রজন্মের তরুণদের আন্দোলনের নেতা ঘোষণা দিয়েছেন, দেশে আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। জনগণের সরকার গঠনের জন্য তাঁরা ‘শেষ পর্যন্ত লড়াই করবেন’। তরুণ নেপালিদের আন্দোলনে দুই দিনের মধ্যে অলি সরকারের পতন হয়েছিল।

এক সাক্ষাৎকারে আন্দোলনের নেতা সুদান গুরুং বলেন, প্রচলিত রাজনৈতিক দলের পরিবর্তে ‘পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন’ গড়ে তুলতে দেশজুড়ে তাঁরা সমর্থকদের সংগঠিত করার কাজ করছেন। ‘স্বার্থপর’ ও ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ সাবেক সরকার ও রাজনীতিকদের বিষয়ে গুরুং বলেন, ‘তাঁরা আমাদের রাজনীতিতে টেনে এনেছেন। যদি তাঁরা রাজনীতিই চান, তবে তা-ই পাবেন। আমরা পরবর্তী নির্বাচনে লড়ব। কারণ, আমরা এখন পিছু হটব না।’

আরও পড়ুন: হেলিকপ্টারে করে পালালেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী

৩৬ বছর বয়সী গুরুং মূলত নেপালের তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গণ-অভ্যুত্থানের পরিচিত মুখ। ওই আন্দোলনে তাঁকে নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা গেছে। সরকার ফেসবুক, এক্স, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা আদান-প্রদানের প্লাটফর্ম বন্ধ করে দিলে তরুণেরা প্রতিবাদে রাজপথে নামেন।

আরও পড়ুন: চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক আন্দোলনের নেতা সুবল সোরেন প্রয়াত

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ে নিবন্ধন ও নজরদারির অধীন আসতে ব্যর্থ হয়েছে। শিগগিরই এই বিক্ষোভ দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে গণ,আন্দোলনে রূপ নেয়। বিক্ষোভ চলাকালে কয়েক ডজন তরুণ নিহত ও হাজার হাজার মানুষ আহত হন।

আরও পড়ুন: ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলনের ডাক ল’বোর্ডের

গুরুং বিশ্বাস করেন, তাঁরা দেশ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত। স্বেচ্ছাসেবকেরা আইন ও যোগাযোগ কমিটি গঠন করছে এবং ডিসকর্ড ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সারা দেশ থেকে নীতিগত দাবি সংগ্রহ করছে। বিক্ষোভের সময় সংগঠিত হতে এসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়েছিল। এই আন্দোলনের নেতা বলেন, তাঁদের দল ‘নেপালের প্রতিটি মানুষের কণ্ঠস্বর যাতে শোনা যায়’, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। গুরুংয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা কম। বরং তিনি ‘দলবদ্ধভাবে’ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। গুরুং বলেন, ‘আমি যদি কেবল এককভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি, তাহলে আমরা তরুণদের এই শক্তিকে কাজে লাগাতে পারব না। একসঙ্গে আমরা আরও শক্তিশালী।’

এই আন্দোলনের নেতারা দুর্নীতিবিরোধী এজেন্ডার বাইরেও কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তাঁরা নেপালের পর্যটন খাতকে চাঙা করতে এবং ‘বাইরের হস্তক্ষেপ’ ছাড়াই প্রতিবেশী ভারত ও চিনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার পরিকল্পনা করছেন। গুরুং বলেন, ‘আমাদের তাদের সম্মান করতে হবে, তাদেরও আমাদের সম্মান করতে হবে।’

নেপালের গণআন্দোলনের এই নেতা আগামী মার্চের নির্বাচনে পুরোনো রাজনৈতিক নেতাদের দেখতে চান না। তিনি বিক্ষোভকারীদের হত্যা ও দুর্নীতির দ্রুত তদন্ত করতে অন্তর্র্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গুরুং বলেন, ‘আমি ভয় পাই না…শুধু আমাকে হত্যা করে কিছুই হবে না। আমাকে আমার দেশকে বাঁচাতে হবে। কারণ, এখনই সময়, নইলে আর কখনো নয়।’