০৫ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এসআইআর নিয়ে কোনও আলোচনা নয় পার্লামেন্টে! কেন্দ্রের নিদান

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৫ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 21

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  বিহার ও বাংলায় ভোটের মুখে ভোটার তালিকা সংশোধন বা ‘স্যর’ প্রক্রিয়া নিয়ে  বিরোধীরা লাগাতার বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পার্লামেন্টের বাদল অধিবেশনে। তবে কেন্দ্র তাদের চুপ করিয়ে দিতে চায়। পার্লামেন্টের  খোলামেলা মুক্ত পরিসরকে শাসকের লাঠি দিয়ে দাবিয়ে রাখতে চায় বলে অভিযোগ তুলেছেন  বিরোধীরা। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারপার্সন হরিবংশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, পার্লামেন্টে নির্বাচন কমিশনের কোনও কাজ বা সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। অথচ এটাই সময়ের দাবি, জ্বলন্ত ইস্যু।

বিরোধী দলগুলো সংসদের বাদল অধিবেশনে বিহার এবং অন্যান্য রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের বিষয়ে আলোচনার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারপার্সন হরিবংশ বিরোধী দলগুলোর এই দাবি খারিজ করে দেন। তিনি জানান যে,যেহেতু নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সংস্থা, তাই তাদের নেওয়া সিদ্ধান্ত বা কাজের বিষয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক করা যায় না।

একই নিয়ম লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজুও উল্লেখ করেছেন। বিরোধী দলগুলো এই বিষয়ে জরুরি আলোচনা চেয়েছিল। যদিও পরে তারা তাদের দাবি পরিবর্তন করে নির্বাচনী সংস্কারের উপর একটি বিস্তৃত আলোচনার কথা বলেন। এদিকে হরিবংশ আরও উল্লেখ করেন যে, বাদল অধিবেশন শুরুর পর থেকে বিরোধী দলের ক্রমাগত প্রতিবাদের কারণে সংসদের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।

এ বিষয়ে ওয়াকিফহাল মহলের মত, গণতন্ত্রে নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কাজ করে। এই স্বাধীনতা বজায় রাখা খুবই জরুরি, যাতে কোনও রাজনৈতিক দল বা সরকার তাদের উপর প্রভাব খাটাতে না পারে। পার্লামেন্টে যদি কমিশনের প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক করা হয়, তাহলে তাদের কাজের নিরপেক্ষতা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া বা বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার মতো অন্যান্য গণতান্ত্রিক পথ খোলা আছে।

গণতন্ত্রে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকেই জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। পার্লামেন্ট যদি নির্বাচন কমিশনের কাজ নিয়ে আলোচনা করতে না পারে, তাহলে কমিশনের জবাবদিহিতা কমে যায়। এর ফলে, তারা নিজেদের ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

পাশাপাশি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের অন্যতম প্রধান কাজ হল সরকারের এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের ওপর নজর রাখা এবং প্রশ্ন তোলা। আলোচনা করতে না দেওয়া মানে বিরোধীদের সেই গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক ভূমিকা পালনে বাধা দেওয়া। ভোটার তালিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা বন্ধ করে দেওয়া হলে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। গণতন্ত্রে সব পক্ষের মতামত প্রকাশ ও আলোচনা হওয়া জরুরি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

এসআইআর নিয়ে কোনও আলোচনা নয় পার্লামেন্টে! কেন্দ্রের নিদান

আপডেট : ৫ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  বিহার ও বাংলায় ভোটের মুখে ভোটার তালিকা সংশোধন বা ‘স্যর’ প্রক্রিয়া নিয়ে  বিরোধীরা লাগাতার বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পার্লামেন্টের বাদল অধিবেশনে। তবে কেন্দ্র তাদের চুপ করিয়ে দিতে চায়। পার্লামেন্টের  খোলামেলা মুক্ত পরিসরকে শাসকের লাঠি দিয়ে দাবিয়ে রাখতে চায় বলে অভিযোগ তুলেছেন  বিরোধীরা। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারপার্সন হরিবংশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, পার্লামেন্টে নির্বাচন কমিশনের কোনও কাজ বা সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। অথচ এটাই সময়ের দাবি, জ্বলন্ত ইস্যু।

বিরোধী দলগুলো সংসদের বাদল অধিবেশনে বিহার এবং অন্যান্য রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের বিষয়ে আলোচনার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারপার্সন হরিবংশ বিরোধী দলগুলোর এই দাবি খারিজ করে দেন। তিনি জানান যে,যেহেতু নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সংস্থা, তাই তাদের নেওয়া সিদ্ধান্ত বা কাজের বিষয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক করা যায় না।

একই নিয়ম লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজুও উল্লেখ করেছেন। বিরোধী দলগুলো এই বিষয়ে জরুরি আলোচনা চেয়েছিল। যদিও পরে তারা তাদের দাবি পরিবর্তন করে নির্বাচনী সংস্কারের উপর একটি বিস্তৃত আলোচনার কথা বলেন। এদিকে হরিবংশ আরও উল্লেখ করেন যে, বাদল অধিবেশন শুরুর পর থেকে বিরোধী দলের ক্রমাগত প্রতিবাদের কারণে সংসদের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।

এ বিষয়ে ওয়াকিফহাল মহলের মত, গণতন্ত্রে নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কাজ করে। এই স্বাধীনতা বজায় রাখা খুবই জরুরি, যাতে কোনও রাজনৈতিক দল বা সরকার তাদের উপর প্রভাব খাটাতে না পারে। পার্লামেন্টে যদি কমিশনের প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক করা হয়, তাহলে তাদের কাজের নিরপেক্ষতা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া বা বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার মতো অন্যান্য গণতান্ত্রিক পথ খোলা আছে।

গণতন্ত্রে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকেই জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। পার্লামেন্ট যদি নির্বাচন কমিশনের কাজ নিয়ে আলোচনা করতে না পারে, তাহলে কমিশনের জবাবদিহিতা কমে যায়। এর ফলে, তারা নিজেদের ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

পাশাপাশি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের অন্যতম প্রধান কাজ হল সরকারের এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের ওপর নজর রাখা এবং প্রশ্ন তোলা। আলোচনা করতে না দেওয়া মানে বিরোধীদের সেই গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক ভূমিকা পালনে বাধা দেওয়া। ভোটার তালিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা বন্ধ করে দেওয়া হলে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। গণতন্ত্রে সব পক্ষের মতামত প্রকাশ ও আলোচনা হওয়া জরুরি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।