১০ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রীলঙ্কায় পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিপুল বিজয় পেল বামপন্থী প্রেসিডেন্ট অনূঢ়ার জোট

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার
  • / 89

কলম্বো: ফের জয় বামেদের। তবে এ দেশে নয়, পড়শি দেশে। শ্রীলঙ্কায় আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনে দেশটির নতুন বামপন্থী প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকের নির্বাচনী জোট ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। শুক্রবার দেশটির নির্বাচন কমিশনের সবশেষ ফলাফলে এই চিত্র পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কায় আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়। পার্লামেন্টের আসনসংখ্যা ২২৫। এর মধ্যে ১৯৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। বাকি ২৯টি ‘জাতীয়ভিত্তিক আসন’। এগুলো রাজনৈতিক দলগুলো পাবে ১৯৬ আসনে প্রাপ্ত ভোটের হিস্যা অনুযায়ী।

দেশটির নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা ফলাফলের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬ আসনের মধ্যে বামপন্থী এনপিপি ১৩৭টিতে জয় পেয়েছে। অর্থাৎ, তারা দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। তারা প্রায় ৬২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। অন্যদিকে এনপিপি জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ সমাগি জনা বালাবেগায়া (এসজেবি) ৩৫টি আসনে জয় পেয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে এনপিপির আসনসংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত সেপ্টেম্বরে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন অনূঢ়া। কিন্তু তখন পার্লামেন্টে তাঁর নির্বাচনী জোট এনপিপির আসন ছিল মাত্র তিনটি। পার্লামেন্টে নিজ জোটের আসনসংখ্যা বাড়াতে তিনি আগাম নির্বাচন দেন। এখন তাঁর জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করল। ভোট দেওয়ার পর অনূঢ়া বলেছিলেন, ‘আমরা একটি শক্তিশালী পার্লামেন্ট গঠনের জন্য ম্যান্ডেট পাওয়ার আশা করছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে জনগণ আমাদের এই ম্যান্ডেট দেবে।’ অনূঢ়া আরও বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সংßৃñতিতে পরিবর্তন এসেছে, যার শুরু গত সেপ্টেম্বরে। এই পরিবর্তন অবশ্যই অব্যাহত থাকবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, পার্লামেন্টে অনূঢ়ার জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন তাঁর হাতকে শক্তিশালী করল। এখন তিনি তাঁর অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য নীতি সহজেই বাস্তবায়ন করতে পারবেন। ২০২২ সালে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যায় বহুগুণ। প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন দেশটির বিক্ষুব্ধ জনগণ। ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালান। এর প্রায় দুই বছর পর গত সেপ্টেম্বরে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এতে জয়ী হন বামপন্থী রাজনীতিক অনূঢ়া। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। ১৪ নভেম্বর আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। শ্রীলঙ্কায় ২০২০ সালের আগস্টে পাঁচ বছর মেয়াদে পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়েছিল। সে হিসাবে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক বছর আগে দেশটিতে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়।

Tag :

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শ্রীলঙ্কায় পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিপুল বিজয় পেল বামপন্থী প্রেসিডেন্ট অনূঢ়ার জোট

আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার

কলম্বো: ফের জয় বামেদের। তবে এ দেশে নয়, পড়শি দেশে। শ্রীলঙ্কায় আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনে দেশটির নতুন বামপন্থী প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকের নির্বাচনী জোট ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। শুক্রবার দেশটির নির্বাচন কমিশনের সবশেষ ফলাফলে এই চিত্র পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কায় আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়। পার্লামেন্টের আসনসংখ্যা ২২৫। এর মধ্যে ১৯৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। বাকি ২৯টি ‘জাতীয়ভিত্তিক আসন’। এগুলো রাজনৈতিক দলগুলো পাবে ১৯৬ আসনে প্রাপ্ত ভোটের হিস্যা অনুযায়ী।

দেশটির নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা ফলাফলের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬ আসনের মধ্যে বামপন্থী এনপিপি ১৩৭টিতে জয় পেয়েছে। অর্থাৎ, তারা দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। তারা প্রায় ৬২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। অন্যদিকে এনপিপি জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ সমাগি জনা বালাবেগায়া (এসজেবি) ৩৫টি আসনে জয় পেয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে এনপিপির আসনসংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত সেপ্টেম্বরে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন অনূঢ়া। কিন্তু তখন পার্লামেন্টে তাঁর নির্বাচনী জোট এনপিপির আসন ছিল মাত্র তিনটি। পার্লামেন্টে নিজ জোটের আসনসংখ্যা বাড়াতে তিনি আগাম নির্বাচন দেন। এখন তাঁর জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করল। ভোট দেওয়ার পর অনূঢ়া বলেছিলেন, ‘আমরা একটি শক্তিশালী পার্লামেন্ট গঠনের জন্য ম্যান্ডেট পাওয়ার আশা করছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে জনগণ আমাদের এই ম্যান্ডেট দেবে।’ অনূঢ়া আরও বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সংßৃñতিতে পরিবর্তন এসেছে, যার শুরু গত সেপ্টেম্বরে। এই পরিবর্তন অবশ্যই অব্যাহত থাকবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, পার্লামেন্টে অনূঢ়ার জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন তাঁর হাতকে শক্তিশালী করল। এখন তিনি তাঁর অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য নীতি সহজেই বাস্তবায়ন করতে পারবেন। ২০২২ সালে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যায় বহুগুণ। প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন দেশটির বিক্ষুব্ধ জনগণ। ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালান। এর প্রায় দুই বছর পর গত সেপ্টেম্বরে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এতে জয়ী হন বামপন্থী রাজনীতিক অনূঢ়া। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। ১৪ নভেম্বর আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। শ্রীলঙ্কায় ২০২০ সালের আগস্টে পাঁচ বছর মেয়াদে পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়েছিল। সে হিসাবে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক বছর আগে দেশটিতে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়।