০৮ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিন কাশ্মীরি মহিলাকে আটক পুলিশের

সুস্মিতা
  • আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 148

রমযান উপলক্ষে কুরআন ও হিজাব বিতরণ

শ্রীনগর: সপ্তাহ ঘুরলেই শুরু হবে পবিত্র মাহে রমযান। এই মাসকে ফযিলতের মাস হিসেবে বিবেচনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ইবাদত ও আমলের মধ্য দিয়ে পালিত হয় মাহে রমযান। এই পবিত্র মাসকে সামনে রেখেই পুণ্যের আশায় কুরআন ও হিজাব বিতরণের কর্মসূচি নিয়েছিলেন কাশ্মীরি এক দল মহিলা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে জনসাধারণের হাতে কুরআন তুলে দিচ্ছিলেন তারা। শিশুদের যত্ন করে পরিয়ে দিচ্ছিলেন হিজাব। কুরআন ও হিজাব নিতে ভিড় করছিলেন অনেকেই। কিন্তু এক পর্যায়ে তাদের উপর নেমে প্রশাসনের রোষানল। ধর্মীয় গ্রন্থ ও হিজাব বিতরণ করার দায়ে তিন মুসলিম মহিলাকে আটক করে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।

জানা গিয়েছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার শ্রীনগরের রাজবাগ এলাকায় কুরআন ও হিজাব বিতরণ কর্মসূচি চালাচ্ছিলেন কাশ্মীরি মহিলারা। কিন্তু অমিত শাহের পুলিশ ওই কর্মসূচিকে ভালো চোখে নেয়নি। প্রথমেই পুলিশ গিয়ে কর্মসূচিটি বন্ধ করে দেয়। তারপর তিনজন মহিলাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ আধিকারিকরা। সন্দেহজনক কিছু না পাওয়ায় তিনজন মহিলাকেই ছেড়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু ঠিক কী কারণে তাদের আটক করা হয়েছিল, সে-বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি পুলিশ প্রশাসন। তবে অনেকেই বলেছেন, ধর্মপ্রচারকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ হিসেবে দেখেছিল পুলিশ। অন্যায়ভাবে তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে হেনস্থা করা হয়েছে। কুরআন বিতরণ কি অপরাধ! স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে ধর্মপ্রচার কি অপরাধ! প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্টরা।

আরও পড়ুন: কর্নাটকের নার্সিং কলেজে কাশ্মীরি ছাত্রীদের হিজাব নিষেধাজ্ঞা! মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি ছাত্র সংগঠনের

এ দিকে পুলিশি এই আচরণ নিয়ে জনমানসে ব্যাপক বিতর্ক ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সরব হয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা। ধর্মীয় কর্মসূচিতে পুলিশি বাধার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) নেতা ও পুলওয়ামার বিধানসভার বিধায়ক ওয়াহিদ পারা। তিনি বলেছেন, কুরআন শান্তি ও ন্যায়বিচারের কথা বলে। অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে কুরআনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে মহিলাদের আটক করা বেআইনি এবং অন্যায়। এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে পুলিশকে সতর্ক করে দিয়েছেন পিডিপি বিধায়ক। তাঁর কথায়, পরবর্তীতে যাতে মহিলাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের বেআইনি পদক্ষেপ না নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: Iran: নারীদের পোশাকবিধি নিশ্চিত করতে নয়া প্রযুক্তি

উল্লেখ্য, ক’দিন আগে শ্রীনগরে একটি বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে ৬০০টিরও বেশি ধর্মীয় বই বাজেয়াপ্ত করে তারা। পুলিশ দাবি করে, বইগুলি নাকি নিষিদ্ধ এবং তা আইন লঙ্ঘন করে। বই মজুতকারীরা জামায়াতে ইসলামি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বলেও দাবি করে শাহের পুলিশ। অন্যদিকে শবে বরাত উপলক্ষে এক মসজিদে নামাজ পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ। মসজিদ থেকে মুসলিমদের বের করে দিয়ে গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে উপত্যকা রাজ্যে লাগাতার পুলিশি অভিযান ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মত প্রকাশে হস্তক্ষেপ বলেই মনে করছেন অনেকেই।

আরও পড়ুন: হিজাবে ঢাকল Eiffel Tower

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

তিন কাশ্মীরি মহিলাকে আটক পুলিশের

আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, মঙ্গলবার

রমযান উপলক্ষে কুরআন ও হিজাব বিতরণ

শ্রীনগর: সপ্তাহ ঘুরলেই শুরু হবে পবিত্র মাহে রমযান। এই মাসকে ফযিলতের মাস হিসেবে বিবেচনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ইবাদত ও আমলের মধ্য দিয়ে পালিত হয় মাহে রমযান। এই পবিত্র মাসকে সামনে রেখেই পুণ্যের আশায় কুরআন ও হিজাব বিতরণের কর্মসূচি নিয়েছিলেন কাশ্মীরি এক দল মহিলা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে জনসাধারণের হাতে কুরআন তুলে দিচ্ছিলেন তারা। শিশুদের যত্ন করে পরিয়ে দিচ্ছিলেন হিজাব। কুরআন ও হিজাব নিতে ভিড় করছিলেন অনেকেই। কিন্তু এক পর্যায়ে তাদের উপর নেমে প্রশাসনের রোষানল। ধর্মীয় গ্রন্থ ও হিজাব বিতরণ করার দায়ে তিন মুসলিম মহিলাকে আটক করে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।

জানা গিয়েছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার শ্রীনগরের রাজবাগ এলাকায় কুরআন ও হিজাব বিতরণ কর্মসূচি চালাচ্ছিলেন কাশ্মীরি মহিলারা। কিন্তু অমিত শাহের পুলিশ ওই কর্মসূচিকে ভালো চোখে নেয়নি। প্রথমেই পুলিশ গিয়ে কর্মসূচিটি বন্ধ করে দেয়। তারপর তিনজন মহিলাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ আধিকারিকরা। সন্দেহজনক কিছু না পাওয়ায় তিনজন মহিলাকেই ছেড়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু ঠিক কী কারণে তাদের আটক করা হয়েছিল, সে-বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি পুলিশ প্রশাসন। তবে অনেকেই বলেছেন, ধর্মপ্রচারকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ হিসেবে দেখেছিল পুলিশ। অন্যায়ভাবে তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে হেনস্থা করা হয়েছে। কুরআন বিতরণ কি অপরাধ! স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে ধর্মপ্রচার কি অপরাধ! প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্টরা।

আরও পড়ুন: কর্নাটকের নার্সিং কলেজে কাশ্মীরি ছাত্রীদের হিজাব নিষেধাজ্ঞা! মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি ছাত্র সংগঠনের

এ দিকে পুলিশি এই আচরণ নিয়ে জনমানসে ব্যাপক বিতর্ক ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সরব হয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা। ধর্মীয় কর্মসূচিতে পুলিশি বাধার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) নেতা ও পুলওয়ামার বিধানসভার বিধায়ক ওয়াহিদ পারা। তিনি বলেছেন, কুরআন শান্তি ও ন্যায়বিচারের কথা বলে। অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে কুরআনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে মহিলাদের আটক করা বেআইনি এবং অন্যায়। এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে পুলিশকে সতর্ক করে দিয়েছেন পিডিপি বিধায়ক। তাঁর কথায়, পরবর্তীতে যাতে মহিলাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের বেআইনি পদক্ষেপ না নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: Iran: নারীদের পোশাকবিধি নিশ্চিত করতে নয়া প্রযুক্তি

উল্লেখ্য, ক’দিন আগে শ্রীনগরে একটি বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে ৬০০টিরও বেশি ধর্মীয় বই বাজেয়াপ্ত করে তারা। পুলিশ দাবি করে, বইগুলি নাকি নিষিদ্ধ এবং তা আইন লঙ্ঘন করে। বই মজুতকারীরা জামায়াতে ইসলামি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বলেও দাবি করে শাহের পুলিশ। অন্যদিকে শবে বরাত উপলক্ষে এক মসজিদে নামাজ পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ। মসজিদ থেকে মুসলিমদের বের করে দিয়ে গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে উপত্যকা রাজ্যে লাগাতার পুলিশি অভিযান ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মত প্রকাশে হস্তক্ষেপ বলেই মনে করছেন অনেকেই।

আরও পড়ুন: হিজাবে ঢাকল Eiffel Tower