পাক-চর সন্দেহে গ্রেফতার জনপ্রিয় ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা

- আপডেট : ১৭ মে ২০২৫, শনিবার
- / 114
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানের চরবৃত্তির অভিযোগে জ্যোতি মালহোত্রা নামে এক জনপ্রিয় ইউটিউবারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। হরিয়ানার ওই ইউটিউবার ‘ট্রাভেল ভ্লগার’ (ভ্রমণরসিক) হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। তাঁর করা ভ্রমণ-ভিডিয়োগুলির ফলোয়ার লক্ষাধিক। তাঁর ইউটিউব চ্যানেল ‘ট্রাভেল উইথ জো’র ফলোয়ার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৭৭ হাজারের বেশি। ২০২৩ সালে পাকিস্তান সফরেও গিয়েছিলেন তিনি। সেই সফর নিয়ে ভিডিয়োও করেছিলেন। সেইসব ভিডিয়োতে পাকিস্তানকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখিয়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন একাধিক রিলও। দু’মাস আগে সেগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছিলেন। তারপর থেকেই গোয়েন্দাদের নজরে পড়ে যান তিনি। তাঁর ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত পার করার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। লাহোরের আনারকলি বাজার নিয়ে ভিডিয়ো ও রিল তৈরি করেছিলেন। পাকিস্তানের বৃহত্তম শ্রী কটাসরাজ মন্দির পরিদর্শন করেছিলেন। তার ভিডিয়োও পোস্ট করেছিলেন। এ ছাড়াও ভারত-পাকিস্তান দু’দেশের সংস্কৃতি তুলে ধরেছিলেন। পাকিস্তানি খাবার নিয়ে একাধিক ভিডিয়ো করেছিলেন। তাঁর ইনস্টাগ্রামে একটি ফটো রয়েছে। উর্দুতে তার ক্যাপশন লেখা ‘ইশ্ক লাহোর’ (প্রেমের লাহোর)। গত বছর তিনি কাশ্মীর সফরেও গিয়েছিলেন। ডাল লেকে ‘সিকারা’ উপভোগ করতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। শ্রীনগর থেকে বানিহাল ট্রেনযাত্রাও ভিডিয়ো-বন্দি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা নিয়েও ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন তিনি। সেখানে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আমরা কি ফের কাশ্মীর ভ্রমণে যাব?’ গোয়েন্দাদের মতে, পাকিস্তানে চরবৃত্তির পাশাপাশি পাকিস্তানকে নিয়ে প্রপাগান্ডা তৈরি করাও তাঁর অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। এ দিন পূজা সহ মোট ৬জনকে পাকিস্তানি চরবৃত্তির অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গোয়েন্দাদের দাবি, হরিয়ানা ছাড়াও পাঞ্জাবে পূজার নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে রয়েছে। বাকি অভিযুক্তরা হলেন মালেরকোটলার ইয়ামিন মুহাম্মদ, কৈথালের দেবি¨র সিং ধিলন, নূহ-র আরমান এবং পাঞ্জাবের গজালা। পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে। ৩২ বছরের বিধবা মহিলা গাজালার সঙ্গে দানিশ নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে পুলিশ ও গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। দানিশ আবার নয়াদিল্লির পাক হাইকমিশনের এক সদস্য। ভিসার প্রয়োজনে হাইকমিশনে গিয়েছিলেন গাজালা। সেখানেই দানিশের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় ও পরবর্তীতে তাঁরা আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। যদিও গত মঙ্গলবার দানিশকে ‘অযাচিত ব্যক্তি’ আখ্যা দিয়ে ভারতছাড়া করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অভিযোগ, এই দানিশই ‘পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভ’ (পিআইএ) বা গুপ্তচর বিভাগের সঙ্গে যুক্ত আরও একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন জ্যোতির। হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাটের মতো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে পাক এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন জ্যোতি। শাকির ওরফে রানা শাহবাজ নামে এক পাক এজেন্টের নম্বর ‘জাঠ রানধাওয়া’ নামে সেভ করা ছিল জ্যোতির ফোনে। এই দানিশ একাধিকবার গাজালাকে টাকা দিয়েছেন। কখনও ১০ হাজার, কখনও ২০ হাজার করে অনলাইনে গাজালাকে টাকা পাঠাতেন দানিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে দেশের গোপন তথ্য পাকিস্তানে পাচার করার উদ্দেশ্যে।