০১ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গ্রামবাসীদের প্রতিবাদের পর স্কুল থেকে সরিয়ে ফেলা হল মালালা ইউসুফজাই-এর পোস্টার

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৯ মে ২০২৩, সোমবার
  • / 124

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: স্কুলপড়ুয়াদের অনুপ্রাণিত করতে ক্লাসরুমে টাঙানো হয়েছিল মালাল ইউসুফজাইয়ের ছবি। কিন্তু গ্রামবাসীদের আপত্তিতে খুলে ফেলতে হল সেই ছবি। ঝাড়খণ্ডের রামগড়ের মান্ডু ব্লকের কুজুতে এক সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এমনই ঘটনায় নিন্দায় সরব এলাকার শিক্ষাব্রতীরা।  গ্রামবাসীদের বক্তব্য, একজন পাকিস্তানির কাছ থেকে কিছু শেখার দরকার নেই। তাই বাধ্য হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ মালালার ছবি খুলে ফেলতে বাধ্য হয়।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়াদের অনুপ্রাণিত করতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মালালা ইউসুফজাইয়ের কিছু পোস্টার স্কুলরুমে টাঙানো  হয়েছিল।  এই স্কুলে প্রায় ৫০০ শিশু পড়াশোনা করে, সম্প্রতি ক্লাসরুমে টাঙানো মালালার ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এলাকার বাসিন্দাদের নজরে   আসে। এরপরই গ্রামবাসীরা ওই ছবিগুলি খুলে ফেলার জন্য চাপ দিতে থাকে। গ্রামবাসীরা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান, ভারতে অনুপ্রেরিত করার  মতো কি কোনও ব্যক্তিত্ব নেই যে একজন পাকিস্তানির ছবি স্কুল রুমে টাঙিয়ে পড়ুয়াদের অনুপ্রেরিত করতে হবে?

বিজেপি-আরএসএসের ধর্মীয় মেরুকরণ কোন জায়গায় পৌঁছেছে তা কুজুর গ্রামবাসীদের মন্তব্যেই পরিষ্কার। কুজু পশ্চিম পঞ্চায়েত প্রধান জয় কুমার ওঝা বলেন, ‘এটা বিশ্বব্যাপী সবাই জানেন যে, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে এবং তার জন্য বারবার আমাদের মূল্য চোকাতে হয়েছে। পাকিস্তানি সমাজকর্মীর কাছে থেকে আমাদের শান্তির পাঠ নেওয়ার দরকার নেই। তাই বিতর্ক এড়াতে স্কুল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি মালালা ইউসুফজাইয়ের ছবিগুলো সরিয়ে নেয়।

২০১৪-র নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী মালালা ইউসুফজাই কুজুর গ্রামবাসীদের কাছে শুধুমাত্র একজন পাকিস্তানি। বিশ্বব্যাপী শিক্ষার প্রসার এবং শিক্ষার জন্য তাঁর লড়াইয়ের প্রতীক সমাজকর্মী মালালা ইউসুফজাই।

 শিক্ষার প্রসারে সমাজকর্মী মালালা ইউসুফজাই মেয়েদের শিক্ষার বিশ্বব্যাপী আইকন হতে পারে, কিন্তু ঝাড়খণ্ডের রামগড় জেলার একটি গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য, ২০১৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কেবল একজন পাকিস্তানি। তারা মান্ডু ব্লকের অধীন কুজুতে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মালালার ছবিসহ পোস্টার অপসারণ করতে বাধ্য করে, যেগুলো শিশুদের অনুপ্রাণিত করার জন্য লাগানো হয়েছিল।

অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র প্রসাদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল বিষয়গুলি তুলে ধরার চেষ্টা করেন। এই পোস্টারটির মাধ্যমে মালালাকে ছাত্রদের সামনে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা ছিল মাত্র।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গ্রামবাসীদের প্রতিবাদের পর স্কুল থেকে সরিয়ে ফেলা হল মালালা ইউসুফজাই-এর পোস্টার

আপডেট : ২৯ মে ২০২৩, সোমবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: স্কুলপড়ুয়াদের অনুপ্রাণিত করতে ক্লাসরুমে টাঙানো হয়েছিল মালাল ইউসুফজাইয়ের ছবি। কিন্তু গ্রামবাসীদের আপত্তিতে খুলে ফেলতে হল সেই ছবি। ঝাড়খণ্ডের রামগড়ের মান্ডু ব্লকের কুজুতে এক সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এমনই ঘটনায় নিন্দায় সরব এলাকার শিক্ষাব্রতীরা।  গ্রামবাসীদের বক্তব্য, একজন পাকিস্তানির কাছ থেকে কিছু শেখার দরকার নেই। তাই বাধ্য হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ মালালার ছবি খুলে ফেলতে বাধ্য হয়।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়াদের অনুপ্রাণিত করতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মালালা ইউসুফজাইয়ের কিছু পোস্টার স্কুলরুমে টাঙানো  হয়েছিল।  এই স্কুলে প্রায় ৫০০ শিশু পড়াশোনা করে, সম্প্রতি ক্লাসরুমে টাঙানো মালালার ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এলাকার বাসিন্দাদের নজরে   আসে। এরপরই গ্রামবাসীরা ওই ছবিগুলি খুলে ফেলার জন্য চাপ দিতে থাকে। গ্রামবাসীরা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান, ভারতে অনুপ্রেরিত করার  মতো কি কোনও ব্যক্তিত্ব নেই যে একজন পাকিস্তানির ছবি স্কুল রুমে টাঙিয়ে পড়ুয়াদের অনুপ্রেরিত করতে হবে?

বিজেপি-আরএসএসের ধর্মীয় মেরুকরণ কোন জায়গায় পৌঁছেছে তা কুজুর গ্রামবাসীদের মন্তব্যেই পরিষ্কার। কুজু পশ্চিম পঞ্চায়েত প্রধান জয় কুমার ওঝা বলেন, ‘এটা বিশ্বব্যাপী সবাই জানেন যে, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে এবং তার জন্য বারবার আমাদের মূল্য চোকাতে হয়েছে। পাকিস্তানি সমাজকর্মীর কাছে থেকে আমাদের শান্তির পাঠ নেওয়ার দরকার নেই। তাই বিতর্ক এড়াতে স্কুল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি মালালা ইউসুফজাইয়ের ছবিগুলো সরিয়ে নেয়।

২০১৪-র নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী মালালা ইউসুফজাই কুজুর গ্রামবাসীদের কাছে শুধুমাত্র একজন পাকিস্তানি। বিশ্বব্যাপী শিক্ষার প্রসার এবং শিক্ষার জন্য তাঁর লড়াইয়ের প্রতীক সমাজকর্মী মালালা ইউসুফজাই।

 শিক্ষার প্রসারে সমাজকর্মী মালালা ইউসুফজাই মেয়েদের শিক্ষার বিশ্বব্যাপী আইকন হতে পারে, কিন্তু ঝাড়খণ্ডের রামগড় জেলার একটি গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য, ২০১৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কেবল একজন পাকিস্তানি। তারা মান্ডু ব্লকের অধীন কুজুতে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মালালার ছবিসহ পোস্টার অপসারণ করতে বাধ্য করে, যেগুলো শিশুদের অনুপ্রাণিত করার জন্য লাগানো হয়েছিল।

অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র প্রসাদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল বিষয়গুলি তুলে ধরার চেষ্টা করেন। এই পোস্টারটির মাধ্যমে মালালাকে ছাত্রদের সামনে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা ছিল মাত্র।