২৮ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘সতী’ হতে চাপ! সবরমতীতে ডুবে আত্মঘাতী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পুত্রবধূ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৫ মে ২০২৩, বৃহস্পতিবার
  • / 110

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : ধর্মকে শিখণ্ডি করে মধ্যযুগীয় বর্বরতার ঘটনা আহমদবাদে। ডিজিটাল যুগেও বিধবা পুত্রবধূকে সতী (স্বামীর মৃত্যুর পর, তার চিতায় জীবিত অবস্থায় স্ত্রীয়ের সহমরণ) হওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। মানসিক নির্যাতনে জর্জরিত হয়ে সবরমতীতে ডুবে আত্মহত্যা করেছেন ২৮ বছরের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পুত্রবধূ। মৃতার নাম সংগীতা লাখরা।

রাজস্থানের ভিলওয়াড়ার বাসিন্দা ছিলেন সংগীতা। সুইসাইড নোটে সংগীতা লিখেছেন, ‘গত ১০ ফেব্রুয়ারি তার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির পরিবারের তরফে নানাভাবে হেনস্থার শিকার তিনি। শাশুড়ি কৈলাশ দেবী লাখারা এবং তার শ্বশুরবাড়ির পরিবারের আরও চারজন সদস্য তাকে ‘সতী’ হওয়ার নির্দেশ দেন।। সংগীতা নোটে লিখেছেন যে ‘তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে বলতেন যে, তিনি যদি একজন ‘ভালো চরিত্রের’ মহিলা হন তবে তাকে অবশ্যই সতী হতে হবে’।

আরও পড়ুন: Block Everything, সরকার বদলের দাবিতে এবার উত্তাল ফ্রান্স

সংগীতার বাবা রমেশ লাখরা সুরাটের একজন মুদি ব্যবসায়ী। সবরমতী রিভারফ্রন্ট (ওয়েস্ট) থানায় সংগীতার শাশুড়ি সহ আরও চার জনের নামে গার্হস্থ্য হিংসা সহ আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছেন সংগীতার বাবা।
রমেশ লাখরা জানান, তার মেয়ে ফের মূল স্রোতে ফিরে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়ি থেকে নানাভাবে তাকে হেনস্থা করায় সব সময় বিষণ্ণ থাকত।

আরও পড়ুন:     মুখোমুখি হতে চলেছে মোদি- জেলেনস্কি! ভারতের পদক্ষেপে চাপে রাশিয়া

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১০ মে বাড়ি থেকে অফিস যাচ্ছি বলে বের হন সংগীতা। সবরমতী থেকে ১১ মে সংগীতার দেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর আগে সংগীতা তাঁর ভাই নিমেশকে কাছে একটি অডিও দিয়ে জানান, শ্বশুরবাড়ীর মানসিক নির্যাতনে বাধ্য হয়ে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর সংগীতা তার স্বামীর মৃত্যুর পর সুরাটে তার বাপেরবাড়িতে চলে আসেন। গত মাসে ভেসুরের একটি মলে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন।

আরও পড়ুন: রাহুলের পর চাপ বাড়ল তেজস্বীর, দায়ের মানহানি মামলা

সংগীতার স্বামী বিষ্ণু কুমার রাজস্থানের রাজাসামন্দের একজন ডেভেলপার ছিলেন। এক দুর্ঘটনায় ২০২২ সালের ১০ মে তিনি মারা যান।

উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে সতী-প্রথা রদ আইন পাশ হয়। এই আইনে বলা হয়েছে যে, সতীপ্রথায় নারীদের স্বেচ্ছামৃত্যু হয় না, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এই সতীপ্রথার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তিদানের বিধান এই আইনে আছে। এছাড়া এ আইনে বলা হয়েছে যে, সতীপ্রথাকে গৌরবান্বিত করার চেষ্টা করাও একটি অপরাধ।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘সতী’ হতে চাপ! সবরমতীতে ডুবে আত্মঘাতী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পুত্রবধূ

আপডেট : ২৫ মে ২০২৩, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : ধর্মকে শিখণ্ডি করে মধ্যযুগীয় বর্বরতার ঘটনা আহমদবাদে। ডিজিটাল যুগেও বিধবা পুত্রবধূকে সতী (স্বামীর মৃত্যুর পর, তার চিতায় জীবিত অবস্থায় স্ত্রীয়ের সহমরণ) হওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। মানসিক নির্যাতনে জর্জরিত হয়ে সবরমতীতে ডুবে আত্মহত্যা করেছেন ২৮ বছরের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পুত্রবধূ। মৃতার নাম সংগীতা লাখরা।

রাজস্থানের ভিলওয়াড়ার বাসিন্দা ছিলেন সংগীতা। সুইসাইড নোটে সংগীতা লিখেছেন, ‘গত ১০ ফেব্রুয়ারি তার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির পরিবারের তরফে নানাভাবে হেনস্থার শিকার তিনি। শাশুড়ি কৈলাশ দেবী লাখারা এবং তার শ্বশুরবাড়ির পরিবারের আরও চারজন সদস্য তাকে ‘সতী’ হওয়ার নির্দেশ দেন।। সংগীতা নোটে লিখেছেন যে ‘তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে বলতেন যে, তিনি যদি একজন ‘ভালো চরিত্রের’ মহিলা হন তবে তাকে অবশ্যই সতী হতে হবে’।

আরও পড়ুন: Block Everything, সরকার বদলের দাবিতে এবার উত্তাল ফ্রান্স

সংগীতার বাবা রমেশ লাখরা সুরাটের একজন মুদি ব্যবসায়ী। সবরমতী রিভারফ্রন্ট (ওয়েস্ট) থানায় সংগীতার শাশুড়ি সহ আরও চার জনের নামে গার্হস্থ্য হিংসা সহ আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছেন সংগীতার বাবা।
রমেশ লাখরা জানান, তার মেয়ে ফের মূল স্রোতে ফিরে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়ি থেকে নানাভাবে তাকে হেনস্থা করায় সব সময় বিষণ্ণ থাকত।

আরও পড়ুন:     মুখোমুখি হতে চলেছে মোদি- জেলেনস্কি! ভারতের পদক্ষেপে চাপে রাশিয়া

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১০ মে বাড়ি থেকে অফিস যাচ্ছি বলে বের হন সংগীতা। সবরমতী থেকে ১১ মে সংগীতার দেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর আগে সংগীতা তাঁর ভাই নিমেশকে কাছে একটি অডিও দিয়ে জানান, শ্বশুরবাড়ীর মানসিক নির্যাতনে বাধ্য হয়ে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর সংগীতা তার স্বামীর মৃত্যুর পর সুরাটে তার বাপেরবাড়িতে চলে আসেন। গত মাসে ভেসুরের একটি মলে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন।

আরও পড়ুন: রাহুলের পর চাপ বাড়ল তেজস্বীর, দায়ের মানহানি মামলা

সংগীতার স্বামী বিষ্ণু কুমার রাজস্থানের রাজাসামন্দের একজন ডেভেলপার ছিলেন। এক দুর্ঘটনায় ২০২২ সালের ১০ মে তিনি মারা যান।

উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে সতী-প্রথা রদ আইন পাশ হয়। এই আইনে বলা হয়েছে যে, সতীপ্রথায় নারীদের স্বেচ্ছামৃত্যু হয় না, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এই সতীপ্রথার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তিদানের বিধান এই আইনে আছে। এছাড়া এ আইনে বলা হয়েছে যে, সতীপ্রথাকে গৌরবান্বিত করার চেষ্টা করাও একটি অপরাধ।