২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জায়নবাদী সরকারের অর্থ প্রত্যাখ্যান,ফাঁদে পা দিলেন না ফিলিস্তিনিরা

অর্পিতা লাহিড়ী
  • আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২১, বুধবার
  • / 27

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ পূর্ব জেসরুালেমের ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত শেখ জাররাহ বসতিতে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলের জায়নবাদী সেনা। উদ্দেশ্য– ফিলিস্তিনিদের জমিজায়গা ছিনিয়ে নিয়ে সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপন। কয়েক যুগ ধরেই ইসরাইলের

রাষ্ট্রীয় নীতির মূল বিষয়বস্তু এটাই থেকেছে।  নিরীহ মুসলিমদের হত্যা করে– অন্য দেশের স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে নিয়ে– সাম্রাজ্যবাদী ও  জায়নবাদীদের দল আন্তর্জাতিক আইনকে পরিহাস করেছে। সেই ধারাবাহিকতা আজও চলছে। শেখ জাররাহর ফিলিস্তিনিরা ক্রমবর্ধমানভাবে বসতি স্থাপনকারী এবং ইসরাইলি পুলিশের হয়রানি ও আক্রমণের  শিকার হচ্ছেন। ফিলিস্তিনের বৈধ মানচিত্রের  এক টুকরো জমির প্রতি এমনই লোভ যে–  বাড়িঘর খালি করার বিনিময়ে ফিলিস্তিনিদের অর্থের ফাঁদে ফেলছে বসতি স্থাপনকারীরা। জায়গার বিনিময়ে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে ৫০ লক্ষ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে কি ইসলামি প্রতিরোধ থামবে? জবাবটা স্পষ্ট।

আরও পড়ুন: ৬ ইসরাইলি জিম্মিকে ছাড়ল হামাস, জেলমুক্তির অপেক্ষায় ৬০০ ফিলিস্তিনি

উল্লেখ্য– ১৯৪৮ সালে ইসরাইলি হামলায় পূর্ব জেরসালেমের বেশকিছু ফিলিস্তিনি পরিবার বাস্তুচু্যত হয়। জর্ডানের উন্নয়নমন্ত্রক এবং  ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য রাষ্ট্রসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থান দফতরের মধ্যে একটি চুক্তি হলে নয়া ঠিকানা পায় ফিলিস্তিনি  পরিবারগুলি। ১৯৫৬ সালের পর থেকে তারা শেখ জাররাহতে বসবাস করে আসছে।  কিন্তু এখন ইসরাইলি দখলদারদের দাবি– এই বাড়িগুলো ১৯৪৮ সালের আগে ইহুদিদের মালিকানাধীন জমিতে তৈরি করা হয়েছিল।  পরবর্তীতে– ১৯৭২ সালে ইসরাইলি সংস্থাগুলি ফিলিস্তিনিদের মালিকানাধীন শেখ জাররাহর জমির কাগজপত্র জাল করতে শুরু করে। এদিকে– ফিলিস্তিনিদের রক্ষার দায়িত্বে থাকা  আইনজীবীদের দল ওই জমির প্রাচীন তুর্কি কাগজপত্র খুঁজে পায় এবং এতে ইহুদিদের অধিকারকে অস্বীকার করে। ইসরাইলি আদালত অবশ্য শেখ জাররাহ বসতিতে ফিলিস্তিনি অধিকারকে কখনই মান্যতা দেয়নি এবং উচ্ছেদের সিদ্ধান্তেই অটল থেকেছে। ইসরাইলের প্রবল চাপ সত্ত্বেও নিজেদের ঘর ছেড়ে যেতে অস্বীকার করে ফিলিস্তিনিরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এরপর অন্য ফন্দি আঁটে তেল আবিব। একটি মধ্যস্থতা প্রস্তাবে ফিলিস্তিনিদের ১৫ বছরের জন্য ভাড়াটে হিসেবে রাখার কথা বলে তারা। কিন্তু ইসরাইলের এই পরিকল্পনাও ব্যর্থ হয়। ফিলিস্তিনিরা কোনও শর্তেই এলাকা ছাড়তে  নারাজ। এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের মোটা  অর্থের টোপ দিচ্ছে দখলদাররা। জানা গেছে–  শেখ জাররাহর ফিলিস্তিনি বাসিন্দা আবদেল ফাত্তাহ স্কাফিকে তার জায়গার বিনিময়ে ৫ মিলিয়ন ডলারের লোভনীয় প্রস্তাব   দেওয়া  হয়ে ছিল। কিন্তু তিনি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। স্কাফি বলেন– একদল বসতি স্থাপনকারী তাকে বাড়িটি কেনার জন্য ৫ মিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব দিয়েছিল– কিন্তু তা  প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ তার পরিবার আশপাশের অন্যান্য পরিবারের মতোই জায়নবাদী পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

আরও পড়ুন: সউদি আরবে বহু খালি জায়গা, সেখানে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হোক : নেতানিয়াহু

 

আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের কথা ভেবে ইসলাম গ্রহণ আমেরিকার মানবাধিকার কর্মী ও তাঁর স্ত্রীর

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জায়নবাদী সরকারের অর্থ প্রত্যাখ্যান,ফাঁদে পা দিলেন না ফিলিস্তিনিরা

আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২১, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ পূর্ব জেসরুালেমের ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত শেখ জাররাহ বসতিতে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলের জায়নবাদী সেনা। উদ্দেশ্য– ফিলিস্তিনিদের জমিজায়গা ছিনিয়ে নিয়ে সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপন। কয়েক যুগ ধরেই ইসরাইলের

রাষ্ট্রীয় নীতির মূল বিষয়বস্তু এটাই থেকেছে।  নিরীহ মুসলিমদের হত্যা করে– অন্য দেশের স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে নিয়ে– সাম্রাজ্যবাদী ও  জায়নবাদীদের দল আন্তর্জাতিক আইনকে পরিহাস করেছে। সেই ধারাবাহিকতা আজও চলছে। শেখ জাররাহর ফিলিস্তিনিরা ক্রমবর্ধমানভাবে বসতি স্থাপনকারী এবং ইসরাইলি পুলিশের হয়রানি ও আক্রমণের  শিকার হচ্ছেন। ফিলিস্তিনের বৈধ মানচিত্রের  এক টুকরো জমির প্রতি এমনই লোভ যে–  বাড়িঘর খালি করার বিনিময়ে ফিলিস্তিনিদের অর্থের ফাঁদে ফেলছে বসতি স্থাপনকারীরা। জায়গার বিনিময়ে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে ৫০ লক্ষ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে কি ইসলামি প্রতিরোধ থামবে? জবাবটা স্পষ্ট।

আরও পড়ুন: ৬ ইসরাইলি জিম্মিকে ছাড়ল হামাস, জেলমুক্তির অপেক্ষায় ৬০০ ফিলিস্তিনি

উল্লেখ্য– ১৯৪৮ সালে ইসরাইলি হামলায় পূর্ব জেরসালেমের বেশকিছু ফিলিস্তিনি পরিবার বাস্তুচু্যত হয়। জর্ডানের উন্নয়নমন্ত্রক এবং  ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য রাষ্ট্রসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থান দফতরের মধ্যে একটি চুক্তি হলে নয়া ঠিকানা পায় ফিলিস্তিনি  পরিবারগুলি। ১৯৫৬ সালের পর থেকে তারা শেখ জাররাহতে বসবাস করে আসছে।  কিন্তু এখন ইসরাইলি দখলদারদের দাবি– এই বাড়িগুলো ১৯৪৮ সালের আগে ইহুদিদের মালিকানাধীন জমিতে তৈরি করা হয়েছিল।  পরবর্তীতে– ১৯৭২ সালে ইসরাইলি সংস্থাগুলি ফিলিস্তিনিদের মালিকানাধীন শেখ জাররাহর জমির কাগজপত্র জাল করতে শুরু করে। এদিকে– ফিলিস্তিনিদের রক্ষার দায়িত্বে থাকা  আইনজীবীদের দল ওই জমির প্রাচীন তুর্কি কাগজপত্র খুঁজে পায় এবং এতে ইহুদিদের অধিকারকে অস্বীকার করে। ইসরাইলি আদালত অবশ্য শেখ জাররাহ বসতিতে ফিলিস্তিনি অধিকারকে কখনই মান্যতা দেয়নি এবং উচ্ছেদের সিদ্ধান্তেই অটল থেকেছে। ইসরাইলের প্রবল চাপ সত্ত্বেও নিজেদের ঘর ছেড়ে যেতে অস্বীকার করে ফিলিস্তিনিরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এরপর অন্য ফন্দি আঁটে তেল আবিব। একটি মধ্যস্থতা প্রস্তাবে ফিলিস্তিনিদের ১৫ বছরের জন্য ভাড়াটে হিসেবে রাখার কথা বলে তারা। কিন্তু ইসরাইলের এই পরিকল্পনাও ব্যর্থ হয়। ফিলিস্তিনিরা কোনও শর্তেই এলাকা ছাড়তে  নারাজ। এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের মোটা  অর্থের টোপ দিচ্ছে দখলদাররা। জানা গেছে–  শেখ জাররাহর ফিলিস্তিনি বাসিন্দা আবদেল ফাত্তাহ স্কাফিকে তার জায়গার বিনিময়ে ৫ মিলিয়ন ডলারের লোভনীয় প্রস্তাব   দেওয়া  হয়ে ছিল। কিন্তু তিনি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। স্কাফি বলেন– একদল বসতি স্থাপনকারী তাকে বাড়িটি কেনার জন্য ৫ মিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব দিয়েছিল– কিন্তু তা  প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ তার পরিবার আশপাশের অন্যান্য পরিবারের মতোই জায়নবাদী পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

আরও পড়ুন: সউদি আরবে বহু খালি জায়গা, সেখানে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হোক : নেতানিয়াহু

 

আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের কথা ভেবে ইসলাম গ্রহণ আমেরিকার মানবাধিকার কর্মী ও তাঁর স্ত্রীর