০২ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিন্দু ধর্মীয় শোভাযাত্রায় দাঙ্গা! ধৃত ৮ বছরের মুসলিম বালকের জামিন! ছোট বালকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে সমালোচিত বিহার

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবার
  • / 26

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগে ধৃত আট বছরের মুসলিম বালককে অবশেষে জামিন দিল বিহারের স্থানীয় আদালত। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পরে বুধবার জামিন দেওয়া হল ওই বালককে। বিহার রাজ্যের এই ঘটনায় আট বছরের বালকের গ্রেফতারিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

গত ৮ সেপ্টেম্বর বিহারের সিওয়ান জেলার বাহরিয়া গ্রামে একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই শোভাযাত্রায় দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগ তুলে ওই আট বছরের বালককে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: রামনবমী উপলক্ষে কলকাতাজুড়ে ৪২টি মিছিলের আয়োজন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কড়া নজরদারি প্রশাসনের

ধৃত বালকের খুড়তুতো দিদি শামা পারভীন জানান, ৭০ বছরের দাদুর সঙ্গে তার ৮ বছরের নাতি দুপুরে নামাযে গিয়েছিল। সেই সময় হিন্দুদের ধর্মীয় শোভাযাত্রা মহাবীর আকাড়া চলছিল। ওরা জানত না মসজিদের সামনে কি ঘটনা ঘটেছে। পরে জানা যায় এই শোভাযাত্রাকে ঘিরে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওরা ওই সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। এর পর দাদু আর নাতি দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। দাদু মঙ্গলবার জামিন পান আর নাতিকে জামিন দেওয়া হল বুধবার।

আরও পড়ুন: বন্ধ থাকবে মিটিং, মিছিল, মাইক মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে বার্তা দিলেন মুখ্যসচিব

বারহিয়ার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর শরীরে গেরুয়া ওড়না জড়িয়ে মসজিদের সামনে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে থাকে বেশ কয়েকজন মানুষ। শুধু স্লোগানই নয়, অস্ত্র নিয়ে দাপাদাপি শুরু করে তারা।

মিম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি এই ঘটনার কঠোর নিন্দা করে একটি ট্যুইট করে বলেছেন, ‘যারা এই সংঘর্ষ বাধালো তাদের না ধরে পুলিশ মুসলিম কিশোরদের টার্গেট করে। পুলিশ কর্মীদের কঠোর শাস্তির পাশাপাশি, শিশুটির পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত’।

অন্যদিকে হিন্দু বজরং দলের সদস্য রঞ্জন কুমার সিং বলেন, ‘সংঘর্ষ শুরু হয় যখন মুসলিম যুবকেরা শোভাযাত্রা উপরে পাথর ছুড়তে থাকে। মুসলিমরা বলেন এখন তারা নামায পড়বেন তাই তারা যেন শোভাযাত্রা থামিয়ে দেয়। আমরা থামলাম, কিন্তু তারাই মসজিদের দিকে পাথর নিক্ষেপ করল’।
ঘটনার দিন পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ আধিকারিক প্রবীণ প্রভাকর হিন্দু-মুসলিম না দেখে সংঘর্ষকারীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। প্রাথমিকভাবে অনুমান পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তবে আট বছরের বালকের একটি পাথর ছোড়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। দাঙ্গা বাধানো, বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে ১০ জন হিন্দু সহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ রেকর্ড অনুযায়ী ওই ধৃত বালকের বয়স ১৩, তবে তার পরিবার এই বয়সের সার্টিফিকেট অস্বীকার করেছেন।

ঘটনায় ধৃত ৮ বছরের খুড়তুতো দিদি শামা পারভীন আরও জানিয়েছেন, পুলিশ ৮ বছরের ছোট ছেলের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আনায় অবাক হয়ে পড়ি। আমরা তার গ্রেফতারের কথা শুনে থানায় যাই। গিয়ে দেখি তাকে হাত-পা বাধা অবস্থায় পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। বাড়ি যাওয়ার জন্য কাঁদছিল। গ্রেফতারের একসপ্তাহ পরে তাকে জামিন দেওয়া হল।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হিন্দু ধর্মীয় শোভাযাত্রায় দাঙ্গা! ধৃত ৮ বছরের মুসলিম বালকের জামিন! ছোট বালকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে সমালোচিত বিহার

আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগে ধৃত আট বছরের মুসলিম বালককে অবশেষে জামিন দিল বিহারের স্থানীয় আদালত। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পরে বুধবার জামিন দেওয়া হল ওই বালককে। বিহার রাজ্যের এই ঘটনায় আট বছরের বালকের গ্রেফতারিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

গত ৮ সেপ্টেম্বর বিহারের সিওয়ান জেলার বাহরিয়া গ্রামে একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই শোভাযাত্রায় দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগ তুলে ওই আট বছরের বালককে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: রামনবমী উপলক্ষে কলকাতাজুড়ে ৪২টি মিছিলের আয়োজন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কড়া নজরদারি প্রশাসনের

ধৃত বালকের খুড়তুতো দিদি শামা পারভীন জানান, ৭০ বছরের দাদুর সঙ্গে তার ৮ বছরের নাতি দুপুরে নামাযে গিয়েছিল। সেই সময় হিন্দুদের ধর্মীয় শোভাযাত্রা মহাবীর আকাড়া চলছিল। ওরা জানত না মসজিদের সামনে কি ঘটনা ঘটেছে। পরে জানা যায় এই শোভাযাত্রাকে ঘিরে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওরা ওই সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। এর পর দাদু আর নাতি দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। দাদু মঙ্গলবার জামিন পান আর নাতিকে জামিন দেওয়া হল বুধবার।

আরও পড়ুন: বন্ধ থাকবে মিটিং, মিছিল, মাইক মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে বার্তা দিলেন মুখ্যসচিব

বারহিয়ার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর শরীরে গেরুয়া ওড়না জড়িয়ে মসজিদের সামনে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে থাকে বেশ কয়েকজন মানুষ। শুধু স্লোগানই নয়, অস্ত্র নিয়ে দাপাদাপি শুরু করে তারা।

মিম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি এই ঘটনার কঠোর নিন্দা করে একটি ট্যুইট করে বলেছেন, ‘যারা এই সংঘর্ষ বাধালো তাদের না ধরে পুলিশ মুসলিম কিশোরদের টার্গেট করে। পুলিশ কর্মীদের কঠোর শাস্তির পাশাপাশি, শিশুটির পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত’।

অন্যদিকে হিন্দু বজরং দলের সদস্য রঞ্জন কুমার সিং বলেন, ‘সংঘর্ষ শুরু হয় যখন মুসলিম যুবকেরা শোভাযাত্রা উপরে পাথর ছুড়তে থাকে। মুসলিমরা বলেন এখন তারা নামায পড়বেন তাই তারা যেন শোভাযাত্রা থামিয়ে দেয়। আমরা থামলাম, কিন্তু তারাই মসজিদের দিকে পাথর নিক্ষেপ করল’।
ঘটনার দিন পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ আধিকারিক প্রবীণ প্রভাকর হিন্দু-মুসলিম না দেখে সংঘর্ষকারীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। প্রাথমিকভাবে অনুমান পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তবে আট বছরের বালকের একটি পাথর ছোড়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। দাঙ্গা বাধানো, বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে ১০ জন হিন্দু সহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ রেকর্ড অনুযায়ী ওই ধৃত বালকের বয়স ১৩, তবে তার পরিবার এই বয়সের সার্টিফিকেট অস্বীকার করেছেন।

ঘটনায় ধৃত ৮ বছরের খুড়তুতো দিদি শামা পারভীন আরও জানিয়েছেন, পুলিশ ৮ বছরের ছোট ছেলের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আনায় অবাক হয়ে পড়ি। আমরা তার গ্রেফতারের কথা শুনে থানায় যাই। গিয়ে দেখি তাকে হাত-পা বাধা অবস্থায় পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। বাড়ি যাওয়ার জন্য কাঁদছিল। গ্রেফতারের একসপ্তাহ পরে তাকে জামিন দেওয়া হল।