১০ মে ২০২৫, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোকেয়ার সমাজ বিপ্লব থেকে অনুপ্রেরণা নিতে হবে:  ইমরান

অর্পিতা লাহিড়ী
  • আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার
  • / 16

বই- চিত্র সভাগৃহে ভূমির উদ্যোগে বেগম রোকেয়ার ওপর একটি আলোচনায় একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। রয়েছেন সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান, দীপক সাহা, গিয়াস উদ্দিন দালাল, সুরঞ্জন মিদ্দে

 

 

আরও পড়ুন: ৭৪ বছরে কোনওদিন ছুটি নেননি মহিলা কর্মী

 

আরও পড়ুন: সম্পূর্ণ অন্ধ দুই যুবক পাশ করলেন রাজ্যের সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায়

 

আরও পড়ুন: টুইন টাওয়ারের বিরুদ্ধে লড়াই, নেতৃত্ব দেওয়া ৪ প্রবীণের গল্প

পুবের কলম প্রতিবেদক: বাংলার নারীশিক্ষা ও জাগরণের অন্যতম পথিকৃত বেগম রোকেয়ার মৃত্যুদিন উপলক্ষে কলেজ স্ট্রিটে  কফি হাউসের উপরে  ‘বই-চিত্র হল’-এ একটি অনুষ্ঠান হয়। ভূমিপুত্র উন্নয়ন মোর্চা বা ভূমি আয়োজিত অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজনকে রোকেয়া স্মারক সম্মান প্রদান করা হয় এবং রোকেয়ার নানান দিক নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্টরা। পাশাপাশি এদিন রোকেয়া নিয়ে একটি স্মরণিকা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনা করেন বিশিষ্টরা। এ দিন ‘মহীয়সী রোকেয়া স্মারক সম্মান’ প্রদান করা হয় শিক্ষাবিদ মুন্সি আবুল কাশেম, সুরঞ্জন মিদ্দে, আনজুমানারা খাতুনকে।

এ দিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পুবের কলম-এর সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান। তিনি বলেন, বৈষম্যহীন ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন ও নারীশিক্ষার প্রসারে রোকেয়ার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, রোকেয়া ওপার বাংলায় জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর কর্মক্ষেত্র ছিল কলকাতায়।  কিন্তু আমরা এপার বাংলার মানুষ তাঁকে ভুলতে বসেছি। তাঁর কবর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারিনি। বাংলাদেশে বেগম রোকেয়া নামে বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বাংলাদেশ জ্যোতি বসু বা সুচিত্রা সেনের শ্বশুরবাড়ি পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রেখেছে।

আহমদ হাসান ইমরান উল্লেখ করেন, পুবের কলম সর্বদাই রোকেয়াকে নিয়ে লেখালেখি করেছে। তিনি আরও বলেন, অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং বাঙালি মুসলমান সমাজে নারীমুক্তির আন্দোলনের প্রথম সূত্রপাত করেছিলেন রোকেয়া। নারী-পুরুষ সম্পর্কে ইমরান বলেন, উভয়ই সমান, কিছুক্ষেত্রে ভূমিকা আলাদা। তা বোঝাতে ইমরান সাইকেলের দুই চাকার সঙ্গে নারী-পুরুষের তুলনা করে বলেন, নারী ও পুরুষ দুই বিবাদমান গোষ্ঠী নয়।

অনেকেই ধর্মকে টেনে নিয়ে আসেন। সেই কথা প্রসঙ্গে ইমরান বলেন, কোথাও কিছু হলেই ধর্ম ধর্ম করে সবাই তেড়ে আসে। হিটলারের ধর্ম তো কেউ দেখে না, হিরোশিমা, নাগাসাকিতে যে গণহত্যা হয়েছিল তা নিয়ে তো কেউ রাজনীতিবিদদের দায়ী করে না। এই ঘাতকরা কেউই ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ছিল না। ইমরান প্রশ্ন তোলেন, বর্তমানে ক’জন মুসলিম মাওলানার কথা শোনে বা হিন্দু পুরোহিতদের বিধান মেনে চলে? আসলে ধর্ম মানুষকে মানবিক হতে শেখায়। অপব্যাখা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সমাজ গঠন ও মানুষকে সঠিক পথ দেখাতে নারীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে গিয়ে ইমরান নবী মুহাম্মদ সা.-এর স্ত্রী মা খাদিজা ও আয়েশা র.-এর কথা উল্লেখ করেন। তারপর বলেন, বেগম রোকেয়া তাঁর লেখনী এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে অখণ্ড বাংলা, অসম, ত্রিপুরায় এক সমাজ বিপ্লবের সূচনা করেন। রোকেয়া চর্চার ক্ষেত্রে পার্থ সেনগুপ্তর কথাও বলেন ইমরান। বর্তমানে এজেসি বোস রোডে যেখানে ভুপেশ ভবন রয়েছে, সেখানে রোকেয়ার সাখাওয়াত মেমোরিয়াল  স্কুল ছিল, আর রোকেয়া থাকতেন উপরতলায়। সমাজের আইকন শেরে বাংলা ফজলুল হক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার আজিজুল হক’দের মতো মহান ব্যক্তিত্বদের মনে রাখা ও তাঁদের নিয়ে চর্চা করার কথাও বলেন ইমরান।

এ দিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক গিয়াসুদ্দিন দালাল, তথ্যচিত্র নির্মাতা সৌমিত্র দস্তিদার, কবি গৌতম মণ্ডল, শিক্ষক রুহুল আমিন, ভূমির প্রধান ড. রামিজ রাজা ও ছাত্রী মাকসুদা খাতুন-সহ অন্যান্যরা।

 

বই- চিত্র সভাগৃহে ভূমির উদ্যোগে বেগম রোকেয়ার ওপর একটি আলোচনায় একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। রয়েছেন সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান  ইমরান, দীপক সাহা,  গিয়াস উদ্দিন দালাল, সুরঞ্জন মিদ্দে

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রোকেয়ার সমাজ বিপ্লব থেকে অনুপ্রেরণা নিতে হবে:  ইমরান

আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার

 

 

আরও পড়ুন: ৭৪ বছরে কোনওদিন ছুটি নেননি মহিলা কর্মী

 

আরও পড়ুন: সম্পূর্ণ অন্ধ দুই যুবক পাশ করলেন রাজ্যের সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায়

 

আরও পড়ুন: টুইন টাওয়ারের বিরুদ্ধে লড়াই, নেতৃত্ব দেওয়া ৪ প্রবীণের গল্প

পুবের কলম প্রতিবেদক: বাংলার নারীশিক্ষা ও জাগরণের অন্যতম পথিকৃত বেগম রোকেয়ার মৃত্যুদিন উপলক্ষে কলেজ স্ট্রিটে  কফি হাউসের উপরে  ‘বই-চিত্র হল’-এ একটি অনুষ্ঠান হয়। ভূমিপুত্র উন্নয়ন মোর্চা বা ভূমি আয়োজিত অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজনকে রোকেয়া স্মারক সম্মান প্রদান করা হয় এবং রোকেয়ার নানান দিক নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্টরা। পাশাপাশি এদিন রোকেয়া নিয়ে একটি স্মরণিকা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনা করেন বিশিষ্টরা। এ দিন ‘মহীয়সী রোকেয়া স্মারক সম্মান’ প্রদান করা হয় শিক্ষাবিদ মুন্সি আবুল কাশেম, সুরঞ্জন মিদ্দে, আনজুমানারা খাতুনকে।

এ দিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পুবের কলম-এর সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান। তিনি বলেন, বৈষম্যহীন ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন ও নারীশিক্ষার প্রসারে রোকেয়ার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, রোকেয়া ওপার বাংলায় জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর কর্মক্ষেত্র ছিল কলকাতায়।  কিন্তু আমরা এপার বাংলার মানুষ তাঁকে ভুলতে বসেছি। তাঁর কবর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারিনি। বাংলাদেশে বেগম রোকেয়া নামে বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বাংলাদেশ জ্যোতি বসু বা সুচিত্রা সেনের শ্বশুরবাড়ি পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রেখেছে।

আহমদ হাসান ইমরান উল্লেখ করেন, পুবের কলম সর্বদাই রোকেয়াকে নিয়ে লেখালেখি করেছে। তিনি আরও বলেন, অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং বাঙালি মুসলমান সমাজে নারীমুক্তির আন্দোলনের প্রথম সূত্রপাত করেছিলেন রোকেয়া। নারী-পুরুষ সম্পর্কে ইমরান বলেন, উভয়ই সমান, কিছুক্ষেত্রে ভূমিকা আলাদা। তা বোঝাতে ইমরান সাইকেলের দুই চাকার সঙ্গে নারী-পুরুষের তুলনা করে বলেন, নারী ও পুরুষ দুই বিবাদমান গোষ্ঠী নয়।

অনেকেই ধর্মকে টেনে নিয়ে আসেন। সেই কথা প্রসঙ্গে ইমরান বলেন, কোথাও কিছু হলেই ধর্ম ধর্ম করে সবাই তেড়ে আসে। হিটলারের ধর্ম তো কেউ দেখে না, হিরোশিমা, নাগাসাকিতে যে গণহত্যা হয়েছিল তা নিয়ে তো কেউ রাজনীতিবিদদের দায়ী করে না। এই ঘাতকরা কেউই ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ছিল না। ইমরান প্রশ্ন তোলেন, বর্তমানে ক’জন মুসলিম মাওলানার কথা শোনে বা হিন্দু পুরোহিতদের বিধান মেনে চলে? আসলে ধর্ম মানুষকে মানবিক হতে শেখায়। অপব্যাখা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সমাজ গঠন ও মানুষকে সঠিক পথ দেখাতে নারীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে গিয়ে ইমরান নবী মুহাম্মদ সা.-এর স্ত্রী মা খাদিজা ও আয়েশা র.-এর কথা উল্লেখ করেন। তারপর বলেন, বেগম রোকেয়া তাঁর লেখনী এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে অখণ্ড বাংলা, অসম, ত্রিপুরায় এক সমাজ বিপ্লবের সূচনা করেন। রোকেয়া চর্চার ক্ষেত্রে পার্থ সেনগুপ্তর কথাও বলেন ইমরান। বর্তমানে এজেসি বোস রোডে যেখানে ভুপেশ ভবন রয়েছে, সেখানে রোকেয়ার সাখাওয়াত মেমোরিয়াল  স্কুল ছিল, আর রোকেয়া থাকতেন উপরতলায়। সমাজের আইকন শেরে বাংলা ফজলুল হক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার আজিজুল হক’দের মতো মহান ব্যক্তিত্বদের মনে রাখা ও তাঁদের নিয়ে চর্চা করার কথাও বলেন ইমরান।

এ দিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক গিয়াসুদ্দিন দালাল, তথ্যচিত্র নির্মাতা সৌমিত্র দস্তিদার, কবি গৌতম মণ্ডল, শিক্ষক রুহুল আমিন, ভূমির প্রধান ড. রামিজ রাজা ও ছাত্রী মাকসুদা খাতুন-সহ অন্যান্যরা।

 

বই- চিত্র সভাগৃহে ভূমির উদ্যোগে বেগম রোকেয়ার ওপর একটি আলোচনায় একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। রয়েছেন সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান  ইমরান, দীপক সাহা,  গিয়াস উদ্দিন দালাল, সুরঞ্জন মিদ্দে