১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পর্তুগাল-৫ স্পেন-৩

বিশ্বকাপ জয়ী স্পেনকে হারিয়ে ফের চ্যাম্পিয়ন রোনাল্ডোর পর্তুগাল

চামেলি দাস
  • আপডেট : ৯ জুন ২০২৫, সোমবার
  • / 97

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক:  আলিয়াঞ্জ এরিনায় অনুষ্ঠিত রোমাঞ্চকর ফাইনালের টাইব্রেকারে বিশ্বকাপজয়ী স্পেনকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে উয়েফা নেশন্স লিগের শিরোপা জিতল পর্তুগাল। মিউনিখে ১২০ মিনিটের লড়াই ২-২ সমতায় শেষ হলে খেলা গড়ায় পেনাল্টি শ্যুট আউটে। যেখানে স্পেনকে হতাশ করে শিরোপা জিতে নেয় পর্তুগিজরা।

এতে অপেক্ষা ঘুচলো পর্তুগালের, তারা ফিরে পেল সিংহাসন। দুই মরশুম ™র শিরোপা পুনরুদ্ধার করল তারা। এই জয়ের মাধ্যমে প্রথম দল হিসেবে দ্বিতীয়বার নেশন্স লিগ জয়ের অনন্য কীর্তি গড়ল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দল। এর আগে ২০১৯ সালে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রথমবার নেশন্স লিগের শিরোপা জিতেছিল পর্তুগাল।

আরও পড়ুন: অন্ধকারে ডুবল স্পেন-পর্তুগাল-ফ্রান্স, ইউরোপে সাইবার হামলা, উঠছে প্রশ্ন

আর এবারে তারা ফাইনালে স্পেনকে হারিয়ে প্রমাণ করল, তারাই এখন ইউরোপের অন্যতম সেরা দল। অন্যদিকে আরও একবার স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় বিদ্ধ হল স্পেন। স্বপ্নপূরণের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থেকেও হতাশ হয়ে খালি হাতে ফিরতে হল লামিনে ইয়ামালদের।

আরও পড়ুন: ২২৫৩ কোটি টাকায় বিশ্বের সবচেয়ে দামী রোনাল্ডো

ফুটবল বিশেষজ্ঞরা মনে করেছিলেন, তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এই ম্যাচে। বাস্তবে সেটাই হয়েছে। আক্রমণ-পালটা আক্রমণে জমে ওঠে লড়াই। যদিও নেশন্স লিগের ফাইনালে আধিপত্য বেশি ছিল স্পেনেরই। যার ফলে তারা শুরুতে গোলও পেয়ে যায়। ম্যাচের ২১ মিনিটে স্পেনের হয়ে প্রথম গোলটি পেয়ে যান মার্টন জুবিমেন্দি। যদিও এ ম্যাচে লড়াইয়ে ফিরতে খুব বেশি সময় নেয়নি পর্তুগাল।

আরও পড়ুন: ৪০-এর রোনাল্ডোর সঙ্গে নতুন চুক্তি আল নাসরের

ম্যাচের ২৬ মিনিটেই পর্তুগালের হয়ে গোল পরিশোধ করেন ন্যুনো মেন্ডেস। পেদ্রো নেতোর কাছ থেকে বল পেয়ে এক শট প্রতিপক্ষের জাল কাঁপিয়ে দেন পিএসজির এই লেফট ব্যাক। প্রথমার্ধের খেলা শেষ হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে গোল করে স্পেন আবারও এগিয়ে দেন মিকেল ওইয়ারজাবাল। ইয়ামালের বাড়ানো বল পেদ্রির পা থেকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোল করেন রিয়াল সোসিয়েদাদের এই ফরোয়ার্ড। এতে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ২০১০ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকার স্বস্তিটা অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কেড়ে নেয় পর্তুগাল। বলা ভালো পর্তুগালের অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ম্যাচের ৬১ মিনিটে মেন্দেসের ক্রস একজনের পায়ে লাগলে দিক বদলে যাওয়া বল পেয়ে যান পর্তুগিজ সুপারস্টার। সহজ সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভলিতে স্পেনের জাল কাঁপান রোনাল্ডো।

এতে তার আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোল সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩৮টি। যেটা আন্তর্জাতিক ফুটবলে জাতীয় দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোল সংখ্যা। ৮৭তম মিনিটে মাঠ ছেড়ে উঠে যান রোনাল্ডো। তার আগেই অবশ্য তিনি রেফারিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মাঝমাঠে বসে পড়েন এবং ইশারায় জানিয়ে দেন তার পক্ষে আর চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। পরের মিনিটে মাঠ ছাড়েন পর্তুগালের অধিনায়ক, বদলি হিসেবে মাঠে নামেন গঞ্জালো রামোস। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ফের্নান্ডেজের দারুণ ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমোন। তাতে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

নেশন্স লিগের ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত পর্তুগাল। নেলসন সেমেদোর কাছ থেকে বল পেয়ে একটুর জন্য শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মেন্ডেস। তাতে নষ্ট হয় গোলের সুবর্ণ সুযোগ। এরপর পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডদের আক্রমণ সামলে পালটা আক্রমণে যায় স্পেনও। বেশকিছু সুযোগও তৈরি করে তারা। কিন্তু জালের দেখা পায়নি।

যার ফলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। প্রত্যাশামতো টাইব্রেকারে রুবেন নেভাস, গঞ্জালো রামোস, ভিতিনিয়া, ব্রুনো ফার্নান্ডেজ ও ন্যুনো মেন্ডেজ গোল করেন পর্তুগালের হয়ে। অন্যদিকে স্পেনের হয়ে প্রথম তিন শটে জালে পাঠিয়ে দেন মিকেল মেরিনো, আলেক্স বায়েনা ও ইসকো। তবে নিজের দলকে হতাশ করে টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হন মোরাতা।

এরপর নেভেস পঞ্চম শটে গোল করতেই নিশ্চিত হয়ে যায় পর্তুগালের জয়। এতেই নেশন্স লিগের শিরোপা হাতছাড়া হল স্পেনের। এরই সঙ্গে প্রথম আসরের পর পর্তুগাল আবারও শিরোপা নিজেদের ঘরে তুলল। ২০০৪-এর ইউরোতে স্পেনকে শেষবার কোনও প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে হারিয়েছিল পর্তুগাল। এবারে ফুরাল সেই অপেক্ষা। ২১ বছর পর ফের স্পেনকে হারাল পর্তুগাল। এতে একই সঙ্গে নেশন্স লিগের শিরোপা উঠল সিআরসেভেনের হাতে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পর্তুগাল-৫ স্পেন-৩

বিশ্বকাপ জয়ী স্পেনকে হারিয়ে ফের চ্যাম্পিয়ন রোনাল্ডোর পর্তুগাল

আপডেট : ৯ জুন ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক:  আলিয়াঞ্জ এরিনায় অনুষ্ঠিত রোমাঞ্চকর ফাইনালের টাইব্রেকারে বিশ্বকাপজয়ী স্পেনকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে উয়েফা নেশন্স লিগের শিরোপা জিতল পর্তুগাল। মিউনিখে ১২০ মিনিটের লড়াই ২-২ সমতায় শেষ হলে খেলা গড়ায় পেনাল্টি শ্যুট আউটে। যেখানে স্পেনকে হতাশ করে শিরোপা জিতে নেয় পর্তুগিজরা।

এতে অপেক্ষা ঘুচলো পর্তুগালের, তারা ফিরে পেল সিংহাসন। দুই মরশুম ™র শিরোপা পুনরুদ্ধার করল তারা। এই জয়ের মাধ্যমে প্রথম দল হিসেবে দ্বিতীয়বার নেশন্স লিগ জয়ের অনন্য কীর্তি গড়ল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দল। এর আগে ২০১৯ সালে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রথমবার নেশন্স লিগের শিরোপা জিতেছিল পর্তুগাল।

আরও পড়ুন: অন্ধকারে ডুবল স্পেন-পর্তুগাল-ফ্রান্স, ইউরোপে সাইবার হামলা, উঠছে প্রশ্ন

আর এবারে তারা ফাইনালে স্পেনকে হারিয়ে প্রমাণ করল, তারাই এখন ইউরোপের অন্যতম সেরা দল। অন্যদিকে আরও একবার স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় বিদ্ধ হল স্পেন। স্বপ্নপূরণের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থেকেও হতাশ হয়ে খালি হাতে ফিরতে হল লামিনে ইয়ামালদের।

আরও পড়ুন: ২২৫৩ কোটি টাকায় বিশ্বের সবচেয়ে দামী রোনাল্ডো

ফুটবল বিশেষজ্ঞরা মনে করেছিলেন, তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এই ম্যাচে। বাস্তবে সেটাই হয়েছে। আক্রমণ-পালটা আক্রমণে জমে ওঠে লড়াই। যদিও নেশন্স লিগের ফাইনালে আধিপত্য বেশি ছিল স্পেনেরই। যার ফলে তারা শুরুতে গোলও পেয়ে যায়। ম্যাচের ২১ মিনিটে স্পেনের হয়ে প্রথম গোলটি পেয়ে যান মার্টন জুবিমেন্দি। যদিও এ ম্যাচে লড়াইয়ে ফিরতে খুব বেশি সময় নেয়নি পর্তুগাল।

আরও পড়ুন: ৪০-এর রোনাল্ডোর সঙ্গে নতুন চুক্তি আল নাসরের

ম্যাচের ২৬ মিনিটেই পর্তুগালের হয়ে গোল পরিশোধ করেন ন্যুনো মেন্ডেস। পেদ্রো নেতোর কাছ থেকে বল পেয়ে এক শট প্রতিপক্ষের জাল কাঁপিয়ে দেন পিএসজির এই লেফট ব্যাক। প্রথমার্ধের খেলা শেষ হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে গোল করে স্পেন আবারও এগিয়ে দেন মিকেল ওইয়ারজাবাল। ইয়ামালের বাড়ানো বল পেদ্রির পা থেকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোল করেন রিয়াল সোসিয়েদাদের এই ফরোয়ার্ড। এতে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ২০১০ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকার স্বস্তিটা অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কেড়ে নেয় পর্তুগাল। বলা ভালো পর্তুগালের অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ম্যাচের ৬১ মিনিটে মেন্দেসের ক্রস একজনের পায়ে লাগলে দিক বদলে যাওয়া বল পেয়ে যান পর্তুগিজ সুপারস্টার। সহজ সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভলিতে স্পেনের জাল কাঁপান রোনাল্ডো।

এতে তার আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোল সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩৮টি। যেটা আন্তর্জাতিক ফুটবলে জাতীয় দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোল সংখ্যা। ৮৭তম মিনিটে মাঠ ছেড়ে উঠে যান রোনাল্ডো। তার আগেই অবশ্য তিনি রেফারিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মাঝমাঠে বসে পড়েন এবং ইশারায় জানিয়ে দেন তার পক্ষে আর চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। পরের মিনিটে মাঠ ছাড়েন পর্তুগালের অধিনায়ক, বদলি হিসেবে মাঠে নামেন গঞ্জালো রামোস। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ফের্নান্ডেজের দারুণ ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমোন। তাতে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

নেশন্স লিগের ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত পর্তুগাল। নেলসন সেমেদোর কাছ থেকে বল পেয়ে একটুর জন্য শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মেন্ডেস। তাতে নষ্ট হয় গোলের সুবর্ণ সুযোগ। এরপর পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডদের আক্রমণ সামলে পালটা আক্রমণে যায় স্পেনও। বেশকিছু সুযোগও তৈরি করে তারা। কিন্তু জালের দেখা পায়নি।

যার ফলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। প্রত্যাশামতো টাইব্রেকারে রুবেন নেভাস, গঞ্জালো রামোস, ভিতিনিয়া, ব্রুনো ফার্নান্ডেজ ও ন্যুনো মেন্ডেজ গোল করেন পর্তুগালের হয়ে। অন্যদিকে স্পেনের হয়ে প্রথম তিন শটে জালে পাঠিয়ে দেন মিকেল মেরিনো, আলেক্স বায়েনা ও ইসকো। তবে নিজের দলকে হতাশ করে টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হন মোরাতা।

এরপর নেভেস পঞ্চম শটে গোল করতেই নিশ্চিত হয়ে যায় পর্তুগালের জয়। এতেই নেশন্স লিগের শিরোপা হাতছাড়া হল স্পেনের। এরই সঙ্গে প্রথম আসরের পর পর্তুগাল আবারও শিরোপা নিজেদের ঘরে তুলল। ২০০৪-এর ইউরোতে স্পেনকে শেষবার কোনও প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে হারিয়েছিল পর্তুগাল। এবারে ফুরাল সেই অপেক্ষা। ২১ বছর পর ফের স্পেনকে হারাল পর্তুগাল। এতে একই সঙ্গে নেশন্স লিগের শিরোপা উঠল সিআরসেভেনের হাতে।