পুবের কলম প্রতিবেদক: বুধবার সংসদে যখন ওয়াকফ বিল পেশ হচ্ছে, সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে চলছে তুমুল বাদানুবাদ। সেইসময় কলকাতার রাজপথে বিলের বিরুদ্ধে মিছিলে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া বা এসডিপিআই।

নয়া আইনের মাধ্যমে কেন্দ্র সরকার মুসলিমদের দানকৃত ওয়াকফ সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে চাইছে। সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ভেঙে বেআইনিভাবে বিল এনে মুসলিমদের সবকিছু কেড়ে নেওয়ার ছক হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এসডিপিআই নেতৃত্ব। শহর কলকাতার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকেও বহু মানুষ এই মিছিলে যোগ দেন।

শিয়ালদহ থেকে শুরু হয়ে এসডিপিআইয়ের মিছিল পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্টে এসে শেষ হয়। পথে এজেসি বোস রোড, নিউ পার্ক স্ট্রিট প্রভৃতি এলাকা পরিক্রমা করে মিছিলটি। সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি জেলার নেতা-কর্মীরাও শামিল হন মিছিলে।

এ দিন মিছিল শেষে পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্টে মোদি সরকারের আনা ওয়াকফ সংশোধনী বিলের প্রতীকী কপি পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান এসডিপিআই নেতা-কর্মীরা। এ দিনের কর্মসূচিতে ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি হাকিকুল ইসলাম, নেতা সুমন মণ্ডল, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ডা. কামাল বাসিরুজ্জান, মাওলানা কাসেমি, ওয়াকফ বিল বিরোধী জয়েন্ট কাউন্সিলের  আহ্বায়ক  উমর আওয়াবিস প্রমুখ।

মিছিল থেকে ওয়াকফ বিল বাতিল করার দাবি যেমন ওঠে তেমনি দলের কেন্দ্রীয় নেতা এম কে ফাইজির মুক্তির দাবিতেও সরব হয় এসডিপিআই।

মিছিলে অংশ নিয়ে হাকিকুল ইসলাম বলেন, আল্লাহ্‌র নামে দান করা এই ওয়াকফ সম্পত্তি জোর করে দখল করতে চাইছে বিজেপি। তাঁর প্রশ্ন, ওয়াকফ বোর্ডে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুইজন প্রতিনিধি নিয়োগের নামে দুর্নীতি দমন করার অজুহাত দেখানো হচ্ছে।

তাহলে দেশের অন্যান্য দুর্নীতিগ্রস্ত সংস্থাগুলোতে কি বিদেশি প্রতিনিধি নিয়োগ করা হবে? নয়া বিল মূলত মুসলিমদের আর্থ-সামাজিক ভিত্তি দুর্বল করার ষড়যন্ত্র বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, বিলের বিরুদ্ধে এসডিপিআই প্রথম থেকেই মাঠে রয়েছে, অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে আন্দোলনে শামিল হয়েছে দল। আর তাই এম কে ফাইজিকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে বলেই মন্তব্য করেন হাকিকুল ইসলাম।

অন্যদিকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ডা. কামাল বাসিরুজ্জান বলেন, ওয়াকফ নিয়ে এসডিপিআই দেশের ৫০০-এর বেশি স্থানে বিক্ষোভ করেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। যদি এই বিল পাশ হয়, তবে সিএএ বিরোধী আন্দোলনের মতো আরও বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। একই কথা বলেন রাজ্য সম্পাদক মাসুদুল ইসলাম, গোলাম মোর্তুজা-সহ কলকাতা জেলা কমিটির নেতারাও।