২৮ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

SIR নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদবের ১৪টি প্রশ্ন

মোক্তার হোসেন মন্ডল
  • আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 111

 

SIR নিয়ে দেশের নির্বাচন কমিশনের কাছে সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদব সমাজ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে ১৪টি প্রশ্ন করেছেন। প্রশ্নগুলি হল –

১. বিহারে SIR প্রয়োগের অভিজ্ঞতা থেকে নির্বাচন কমিশন কী শিক্ষা নিয়েছে? সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এবার আগের নির্দেশে কী পরিবর্তন আনা হয়েছে?

২. যখন জানা গেছে যে ২০০২/২০০৩ সালের নিবিড় সংশোধনের সময় নাগরিকত্ব যাচাই হয়নি, তখন কমিশন কীভাবে ওই বছরকেই ‘কাট-অফ’ বছর হিসেবে ধরে নিচ্ছে?
(২০০২ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী তখন কোনও গণনাপত্র ছিল না, কোনও নথি চাওয়া হয়নি এবং নাগরিকত্ব যাচাই নিষিদ্ধ ছিল।)

৩. অবৈধ বিদেশিদের বাদ দেওয়া কি এখনও SIR-এর লক্ষ্য? যদি তাই হয়, তাহলে বিহারে কতজন বিদেশি শনাক্ত হয়ে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন?
(SIR আদেশে এই উদ্দেশ্য উল্লেখ ছিল, কিন্তু পরে কোনও পরিসংখ্যান দেওয়া হয়নি।)

৪. আধার যদি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয় বলে একক নথি হিসেবে গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে কেন বাকি ৯টি নথি (পাসপোর্ট ও জন্মসনদ ছাড়া) একক নথি হিসেবে ধরা হচ্ছে? যেগুলোর কোনোটিই নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়।

৫. ২০০২/২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকলে ছাড় কারা পাবেন— শুধু সেই ব্যক্তি, নাকি তাঁর সন্তান বা আত্মীয়রাও?
(কমিশন একাধিকবার অবস্থান বদলেছে, অথচ মূল আদেশ সংশোধন করেনি। বিহারে ‘বংশাবলি’ ব্যবহার করে এই ছাড় আত্মীয়দের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ হয়েছে।)

৬. খসড়া ভোটার তালিকা তৈরির সময় নতুন ভোটার যুক্ত করতে কি বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে?
(বিহারে ১ আগস্ট খসড়া তালিকা প্রকাশের আগে পর্যন্ত নতুন কেউ যোগ হয়নি, অথচ ৬৫ লক্ষ ভোটার বাদ পড়েছিলেন।)

৭. যারা গণনাপত্র বা নথি জমা দেবেন, তাঁদের প্রত্যেককে স্বীকৃতি রসিদ (acknowledgement) দেওয়া কীভাবে নিশ্চিত করবে কমিশন?
(বিহারে প্রায় কেউই রসিদ পাননি, যদিও আদেশে তা বাধ্যতামূলক ছিল।)

৮. কমিশন কি এমন কোনও জালিয়াতির ঘটনা পেয়েছে, যেখানে BLO বা অন্য কেউ কারও অজান্তে ফর্ম পূরণ করেছেন? ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?
(বিহারে BLO-দের ফর্ম পূরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে গিয়ে এমন অভিযোগ প্রচুর ছিল।)

৯. পরিযায়ী ও অভিবাসী শ্রমিকদের নাম যাতে বাদ না পড়ে, তার জন্য কোনও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি?
(বিহারে এমন বহু রিপোর্ট ছিল যে তাঁরা অ্যাপ ব্যবহার করতে না পারায় তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।)

১০. বিহারের মতো এবারও ভোটার তালিকায় নারীর সংখ্যা কমে যাওয়া রোধে কমিশন কী পদক্ষেপ নিয়েছে?
(সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা কমিশনের হলফনামায়ই এই তথ্যের সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে।)

১১. যাঁরা খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বেন, তাঁদের কি নোটিশ ও শুনানির সুযোগ দেওয়া হবে?
(বিহারে ৬৫ লক্ষ বাদ পড়া মানুষকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি; তাঁদের নতুন ভোটার হিসেবে আবেদন করতে হয়েছিল।)

১২. কেন গ্রহণযোগ্য নথির তালিকায় প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এমজিএনআরইজিএ জব কার্ড, রেশন কার্ড বা ব্যাংক পাসবই নেই— যেগুলো নতুন ভোটারদের ক্ষেত্রে কমিশন নিজেই গ্রহণ করে এবং যেগুলির প্রমাণমূল্য আরও বেশি?

১৩. কমিশনের কি ডুপ্লিকেট ভোটার শনাক্ত করার (de-duplication) কোনও সফটওয়্যার আছে? থাকলে তা কি এবার SIR প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হবে?
(বিহারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় লক্ষাধিক পুনরাবৃত্তি ও ভুল নাম পাওয়া গেছে।)

১৪. কমিশন কি খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা মেশিনে পড়ার উপযোগী ফাইল আকারে প্রকাশ করবে?
যেহেতু এই তথ্য জনসাধারণেরই, তাহলে তা প্রকাশে বাধা কোথায়?

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

SIR নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদবের ১৪টি প্রশ্ন

আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার

 

SIR নিয়ে দেশের নির্বাচন কমিশনের কাছে সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদব সমাজ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে ১৪টি প্রশ্ন করেছেন। প্রশ্নগুলি হল –

১. বিহারে SIR প্রয়োগের অভিজ্ঞতা থেকে নির্বাচন কমিশন কী শিক্ষা নিয়েছে? সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এবার আগের নির্দেশে কী পরিবর্তন আনা হয়েছে?

২. যখন জানা গেছে যে ২০০২/২০০৩ সালের নিবিড় সংশোধনের সময় নাগরিকত্ব যাচাই হয়নি, তখন কমিশন কীভাবে ওই বছরকেই ‘কাট-অফ’ বছর হিসেবে ধরে নিচ্ছে?
(২০০২ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী তখন কোনও গণনাপত্র ছিল না, কোনও নথি চাওয়া হয়নি এবং নাগরিকত্ব যাচাই নিষিদ্ধ ছিল।)

৩. অবৈধ বিদেশিদের বাদ দেওয়া কি এখনও SIR-এর লক্ষ্য? যদি তাই হয়, তাহলে বিহারে কতজন বিদেশি শনাক্ত হয়ে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন?
(SIR আদেশে এই উদ্দেশ্য উল্লেখ ছিল, কিন্তু পরে কোনও পরিসংখ্যান দেওয়া হয়নি।)

৪. আধার যদি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয় বলে একক নথি হিসেবে গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে কেন বাকি ৯টি নথি (পাসপোর্ট ও জন্মসনদ ছাড়া) একক নথি হিসেবে ধরা হচ্ছে? যেগুলোর কোনোটিই নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়।

৫. ২০০২/২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকলে ছাড় কারা পাবেন— শুধু সেই ব্যক্তি, নাকি তাঁর সন্তান বা আত্মীয়রাও?
(কমিশন একাধিকবার অবস্থান বদলেছে, অথচ মূল আদেশ সংশোধন করেনি। বিহারে ‘বংশাবলি’ ব্যবহার করে এই ছাড় আত্মীয়দের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ হয়েছে।)

৬. খসড়া ভোটার তালিকা তৈরির সময় নতুন ভোটার যুক্ত করতে কি বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে?
(বিহারে ১ আগস্ট খসড়া তালিকা প্রকাশের আগে পর্যন্ত নতুন কেউ যোগ হয়নি, অথচ ৬৫ লক্ষ ভোটার বাদ পড়েছিলেন।)

৭. যারা গণনাপত্র বা নথি জমা দেবেন, তাঁদের প্রত্যেককে স্বীকৃতি রসিদ (acknowledgement) দেওয়া কীভাবে নিশ্চিত করবে কমিশন?
(বিহারে প্রায় কেউই রসিদ পাননি, যদিও আদেশে তা বাধ্যতামূলক ছিল।)

৮. কমিশন কি এমন কোনও জালিয়াতির ঘটনা পেয়েছে, যেখানে BLO বা অন্য কেউ কারও অজান্তে ফর্ম পূরণ করেছেন? ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?
(বিহারে BLO-দের ফর্ম পূরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে গিয়ে এমন অভিযোগ প্রচুর ছিল।)

৯. পরিযায়ী ও অভিবাসী শ্রমিকদের নাম যাতে বাদ না পড়ে, তার জন্য কোনও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি?
(বিহারে এমন বহু রিপোর্ট ছিল যে তাঁরা অ্যাপ ব্যবহার করতে না পারায় তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।)

১০. বিহারের মতো এবারও ভোটার তালিকায় নারীর সংখ্যা কমে যাওয়া রোধে কমিশন কী পদক্ষেপ নিয়েছে?
(সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা কমিশনের হলফনামায়ই এই তথ্যের সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে।)

১১. যাঁরা খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বেন, তাঁদের কি নোটিশ ও শুনানির সুযোগ দেওয়া হবে?
(বিহারে ৬৫ লক্ষ বাদ পড়া মানুষকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি; তাঁদের নতুন ভোটার হিসেবে আবেদন করতে হয়েছিল।)

১২. কেন গ্রহণযোগ্য নথির তালিকায় প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এমজিএনআরইজিএ জব কার্ড, রেশন কার্ড বা ব্যাংক পাসবই নেই— যেগুলো নতুন ভোটারদের ক্ষেত্রে কমিশন নিজেই গ্রহণ করে এবং যেগুলির প্রমাণমূল্য আরও বেশি?

১৩. কমিশনের কি ডুপ্লিকেট ভোটার শনাক্ত করার (de-duplication) কোনও সফটওয়্যার আছে? থাকলে তা কি এবার SIR প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হবে?
(বিহারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় লক্ষাধিক পুনরাবৃত্তি ও ভুল নাম পাওয়া গেছে।)

১৪. কমিশন কি খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা মেশিনে পড়ার উপযোগী ফাইল আকারে প্রকাশ করবে?
যেহেতু এই তথ্য জনসাধারণেরই, তাহলে তা প্রকাশে বাধা কোথায়?