০১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সামাজিক বয়কট, ধর্মীয় পীঠস্থান নিয়ে বিবাদে গৃহবন্দি ১২ পরিবার

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 11

পুবের কলম প্রতিবেদক, হুগলি: হুগলির তারকেশ্বর থানার তেঘরি গ্রামে ধর্মীয় পীঠস্থান নিয়ে পুরানো বিবাদের জেরে হালদার সম্প্রদায়ভুক্ত ১২টি পরিবার সামাজিকভাবে বয়কটের শিকার হয়েছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ১০-১২ দিন ধরে ওই পরিবারগুলির প্রায় ৬০ জন সদস্য গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

অভিযোগ, স্থানীয় দুষ্কৃতীরা বাজার থেকে সবজি, খাদ্যদ্রব্য কেনা থেকে শুরু করে শিশুদের দুধ সংগ্রহ পর্যন্ত বাধা দিচ্ছে। এমনকী প্রাইভেট টিউটররাও পড়াতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন। চাষের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর বা শ্রমিকদেরও কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। হালদার পরিবারের দাবি, গ্রামের প্রায় ৩০০ বছরের পুরানো ধর্মীয় পীঠস্থানটি বংশ পরম্পরায় তাঁরাই পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু গত ৬ বছর ধরে কিছু ব্যক্তি জোরপূর্বক তা দখল করে রেখেছে। বিষয়টি গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। সেখান থেকে রায় হালদার পরিবারের পক্ষেই এসেছে। তবুও পীঠস্থানটি দখলমুক্ত হয়নি, বরং উলটে শুরু হয়েছে সামাজিকভাবে কোণঠাসা করার চক্রান্ত।

হালদার পরিবার জানিয়েছে, বার বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কার্যত কোনও সুরাহা মেলেনি। তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় এ বিষয়ে জানান, ঘটনাটি তার জানা ছিল না। জানা মাত্রই তিনি পদক্ষেপ করেছেন। দলের ব্লক সভাপতিকে ওই হালদার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন।

বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় তিনি আরও জানান, যে সমস্যাই হোক না কেন তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। তবে বাম জামানার মতো কথায় কথায় সামাজিক বয়কট করা বরদাস্ত করা হবে না।

তারকেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান জানান, বিষয়টি তাদের নজরে আসার পরই তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে এখন সক্রিয়তা দেখা গেলেও নিরীহ পরিবারগুলির উপর চলা এই নিষ্ঠুরতা ও সামাজিক বয়কটের ঘটনায় মানবিকতা প্রশ্নের মুখে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, অবিলম্বে শক্ত হাতে ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সামাজিক বয়কট, ধর্মীয় পীঠস্থান নিয়ে বিবাদে গৃহবন্দি ১২ পরিবার

আপডেট : ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার

পুবের কলম প্রতিবেদক, হুগলি: হুগলির তারকেশ্বর থানার তেঘরি গ্রামে ধর্মীয় পীঠস্থান নিয়ে পুরানো বিবাদের জেরে হালদার সম্প্রদায়ভুক্ত ১২টি পরিবার সামাজিকভাবে বয়কটের শিকার হয়েছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ১০-১২ দিন ধরে ওই পরিবারগুলির প্রায় ৬০ জন সদস্য গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

অভিযোগ, স্থানীয় দুষ্কৃতীরা বাজার থেকে সবজি, খাদ্যদ্রব্য কেনা থেকে শুরু করে শিশুদের দুধ সংগ্রহ পর্যন্ত বাধা দিচ্ছে। এমনকী প্রাইভেট টিউটররাও পড়াতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন। চাষের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর বা শ্রমিকদেরও কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। হালদার পরিবারের দাবি, গ্রামের প্রায় ৩০০ বছরের পুরানো ধর্মীয় পীঠস্থানটি বংশ পরম্পরায় তাঁরাই পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু গত ৬ বছর ধরে কিছু ব্যক্তি জোরপূর্বক তা দখল করে রেখেছে। বিষয়টি গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। সেখান থেকে রায় হালদার পরিবারের পক্ষেই এসেছে। তবুও পীঠস্থানটি দখলমুক্ত হয়নি, বরং উলটে শুরু হয়েছে সামাজিকভাবে কোণঠাসা করার চক্রান্ত।

হালদার পরিবার জানিয়েছে, বার বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কার্যত কোনও সুরাহা মেলেনি। তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় এ বিষয়ে জানান, ঘটনাটি তার জানা ছিল না। জানা মাত্রই তিনি পদক্ষেপ করেছেন। দলের ব্লক সভাপতিকে ওই হালদার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন।

বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় তিনি আরও জানান, যে সমস্যাই হোক না কেন তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। তবে বাম জামানার মতো কথায় কথায় সামাজিক বয়কট করা বরদাস্ত করা হবে না।

তারকেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান জানান, বিষয়টি তাদের নজরে আসার পরই তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে এখন সক্রিয়তা দেখা গেলেও নিরীহ পরিবারগুলির উপর চলা এই নিষ্ঠুরতা ও সামাজিক বয়কটের ঘটনায় মানবিকতা প্রশ্নের মুখে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, অবিলম্বে শক্ত হাতে ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।