রাজ্যের প্রকল্প ‘অযোধ্যায় রামমন্দিরে বিনামূল্যে প্রবেশ’ কোন যুক্তিতে ধর্মনিরপেক্ষতাকে নষ্ট করছে, জনস্বার্থ মামলা খারিজ আদালতের

- আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার
- / 0
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : অযোধ্যা রাম মন্দিরে তীর্থযাত্রীদের বিনামূল্যে অবাধ প্রবেশ নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকার একটি প্রকল্প আনে। নাম শ্রী রামলালা দর্শন। এই প্রকল্পের অধীনে দর্শনার্থীরা অযোধ্যায় যাওয়ার এবং শ্রী রামলালার দর্শনের সুযোগ পাবে। ছত্তিশগড় পর্যটন বোর্ড শ্রী রামলালা দর্শন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এর জন্য বাজেট দেবে পর্যটন বিভাগ।
গত ১০ জানুয়ারি রাজ্য মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয় প্রতি বছর ২০ হাজার দর্শনার্থীকে রামলালার দর্শনের জন্য তীর্থযাত্রায় নিয়ে যাওয়া হবে। রাজ্যের এই প্রকল্প খারিজের দাবিতে এক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় ছত্তিশগড় হাইকোর্টে। সেই আবদন খারিজ করে দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। মামলার পর্যবেক্ষণে আদালতের প্রধান বিচারপতি রমেশ সিনহা জানান, এই জনস্বার্থ মামলা কেন দায়ের করেছেন তার স্বপক্ষে আবেদনকারি নির্ধারিত কোনও যুক্তি দিতে পারেননি। মূলত এই প্রকল্পটি দরিদ্র মানুষ সহ সকলের অবাধ প্রবেশের জন্য। কিন্তু আবেদনকারি এটি বোঝাতে পারেনি যে, রাজ্যে এই প্রকল্প হিন্দু ছাড়া অন্য ধর্মের মানুষকে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। এই প্রকল্প কিভাবে ধর্ম নিরপেক্ষতাকে নষ্ট করছে, অসাংবিধানিক তাও বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে জনস্বার্থ মামলা দায়েরকারি।
আবেদনকারী উল্লেখ করতে ব্যর্থ হয়েছেন যে রাজ্য সরকারের পরিকল্পনাটি ভারতের সংবিধানের সঙ্গে কীভাবে অসঙ্গতিপূর্ণ বা স্বেচ্ছাচারী বা অযৌক্তিক বা বৈষম্যমূলক। এই মামলা খারিজ করা হল।
প্রধান বিচারপতি রমেশ সিনহা ও বিচারপতি রবীন্দ্র কুমার আগরওয়ালের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অযোধ্যা ধাম নিয়ে শ্রী রামলালা দর্শন প্রকল্পটি রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই তাদের দলের ইশতেহারে ছিল। প্রকল্পটি মূলত দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে অবাধ প্রবেশের জন্য। আদালত জানায়, আবেনকারি লক্ষ্ণণ সুবোধ একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আগে কমিউনিস্ট দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তারপরে তিনি বিএসপিতে আসেন। আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, আবেদনটি ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ ছাড়া আর কিছু বলে মনে হচ্ছে না। আবেদনকারি অবশ্য জানিয়েছেন তিনি বর্তমানে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।
আদালত সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে, একটি জনস্বার্থ মামলা গ্রহণ করার আগে আবেদনকারির প্রমাণপত্র যাচাই করে আদালতকে দেখে নিতে হবে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হতে হবে যে, জনস্বার্থ মামলাটি প্রকৃতপক্ষে জনসাধারণের ভালোর জন্য কিনা। জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার পিছনে কোনও ব্যক্তিগত লাভ, উদ্দেশ্য প্রণোদিত কিনা তাও খতিয়ে দেখতে হবে।