১৯ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউনিফর্ম পরে সংঘের প্যারেডে সরকারি কর্মী, বরখাস্ত করল কর্নাটক সরকার

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার
  • / 50

প্রতীকী ছবি

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কদিন আগেই আরএসএসকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছিলেন কংগ্রেস নেতা। এরমধ্যে কর্নাটকে আরএসএসের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া কারণে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে বরখাস্ত হলেন সরকারি কর্মী। প্রবীণ কুমার কেপি নামের এক কর্মীকে বরখাস্ত করেছে সিদ্দারামাইয়ার সরকার।

সূত্রের খবর, কর্নাটকের রায়চুর জেলার লিংকসুগুড়ে শতবর্ষের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল আরএসএস। সেই অনুষ্ঠানে কর্নাটকের পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিক সম্প্রতি আরএসএসের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সংঘের ইউনিফর্ম পরে প্যারেডেও অংশ নেন বলে অভিযোগ। ঘটনার ছবি ও ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। তারপরই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। অবশেষে সরকারি কর্মীকে সাসপেন্ড করল সরকার। এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতর।

আরও পড়ুন: মুসলিম যুবককে হত্যা, প্রতিবাদে গণইস্তফা কর্নাটকের সংখ্যালঘু নেতাদের

এনিয়ে গেরুয়া শিবিরের প্রশ্ন, আরএসএস তো কোনও নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। সংঘের অনুষ্ঠানে যোগ দিলে সরকারি চাকরি যায় কোন যুক্তিতে? কংগ্রেস অবশ্য বলেছে, সার্ভিস রুলেই বলা আছে সরকারি কর্মীরা প্রকাশ্যে কোনওরকম রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যকলাপে অংশ নিতে পারবে না। আর আরএসএস নিঃসন্দেহে একটি রাজনৈতিক সংগঠন।

আরও পড়ুন: ইসরাইল বিমানবন্দরে হামলা, অল্পের জন্য রক্ষা তেল আবিবগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান

উল্লেখ্য, কর্নাটকের সরকারি জায়গায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) কর্মসূচি আয়োজনের তীব্র আপত্তি তোলেন কর্নাটকের মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্ক খাড়গে। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি লিখে সরকারি স্কুল ও কলেজের জায়গায় আরএসএসের অনুষ্ঠান পরিচালনার অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানিয়ে কংগ্রেস নেতার বক্তব্য ছিল, যে পাবলিক পার্ক এবং মুজরাই মন্দিরগুলিতেও যাতে আরএসএস-এর কর্মসূচির অনুমতি না দেওয়া হয়। চিঠিতে খাড়গে লেখেন, “রাষ্ট্রীয় দাস্তেয়মসেবক সংঘ নামে একটি সংগঠন সরকারি স্কুল এবং সরকারি মাঠ ব্যবহার করে বিক্ষোভ সংগঠিত করছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে। যা শিশুদের মনে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা জাগিয়ে তুলছে।” চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, পুলিশও লাঠি নিয়ে অননুমোদিত বিক্ষোভ চালাচ্ছে এবং নিরীহ শিশু ও যুবকদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কংগ্রেস নেতা ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “শিশু, যুবক, জনসাধারণ এবং সমাজের কল্যাণের স্বার্থে আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি সরকারি স্কুল ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল এবং মুজরাই বিভাগের মাঠ, পার্ক, মন্দির, প্রত্নতাত্ত্বিক দফতরের জায়গা সহ যে কোনও সরকারি স্থানে কোনও শাখা, সংসদ বা বৈথকের নামে আরএসএস সংগঠনের সমস্ত ধরণের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করুন।”

আরও পড়ুন: সরকারি ট্রেন্ডারে মুসলিমদের ৪ শতাংশ সংরক্ষণ, সিদ্ধান্ত কর্নাটক সরকারের

সম্প্রীতি আরএসএসের শতবর্ষ উদযাপনের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ বিজেপি নেতাদের দেখা গিয়েছিল। শতবর্ষ উদযাপনে সংগঠনটির প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকার আরএসএসের ১০০ তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ স্মারক মুদ্রা এবং ডাকটিকিট প্রকাশ করে। যা নিয়ে বির্তকের জন্ম হয়। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, যে ৬০ টাকার মুদ্রা চালু করা উচিত ছিল, কারণ ব্রিটিশদের হয়ে কাজ করে ৬০ টাকা করে পেতেন বিনায়ক দামোদর সাভারকর। ২ অক্টোবর এক এক্স পোস্টে কংগ্রেস নেতা লেখেন, “যদি আরএসএসের জন্য মুদ্রা চালু করারই হত, তাহলে তাদের ৬০ টাকার কয়েন চালু করা উচিত ছিল। এই টাকা ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে পেতেন সাভারকর। তাদের ব্রিটিশ ডাক বিভাগের জন্য একটি মুদ্রা জারি করা উচিত ছিল, যার মাধ্যমে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত। আপনি যতই ডাকটিকিট ছাপান, নতুন মুদ্রা চালু করুন, অথবা পাঠ্যক্রমে আরএসএসকে যতই সন্নিবেশ করান না কেন – এই দেশ গান্ধীর ছিল, গান্ধীরই থাকবে।”

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইউনিফর্ম পরে সংঘের প্যারেডে সরকারি কর্মী, বরখাস্ত করল কর্নাটক সরকার

আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কদিন আগেই আরএসএসকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছিলেন কংগ্রেস নেতা। এরমধ্যে কর্নাটকে আরএসএসের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া কারণে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে বরখাস্ত হলেন সরকারি কর্মী। প্রবীণ কুমার কেপি নামের এক কর্মীকে বরখাস্ত করেছে সিদ্দারামাইয়ার সরকার।

সূত্রের খবর, কর্নাটকের রায়চুর জেলার লিংকসুগুড়ে শতবর্ষের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল আরএসএস। সেই অনুষ্ঠানে কর্নাটকের পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিক সম্প্রতি আরএসএসের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সংঘের ইউনিফর্ম পরে প্যারেডেও অংশ নেন বলে অভিযোগ। ঘটনার ছবি ও ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। তারপরই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। অবশেষে সরকারি কর্মীকে সাসপেন্ড করল সরকার। এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতর।

আরও পড়ুন: মুসলিম যুবককে হত্যা, প্রতিবাদে গণইস্তফা কর্নাটকের সংখ্যালঘু নেতাদের

এনিয়ে গেরুয়া শিবিরের প্রশ্ন, আরএসএস তো কোনও নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। সংঘের অনুষ্ঠানে যোগ দিলে সরকারি চাকরি যায় কোন যুক্তিতে? কংগ্রেস অবশ্য বলেছে, সার্ভিস রুলেই বলা আছে সরকারি কর্মীরা প্রকাশ্যে কোনওরকম রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যকলাপে অংশ নিতে পারবে না। আর আরএসএস নিঃসন্দেহে একটি রাজনৈতিক সংগঠন।

আরও পড়ুন: ইসরাইল বিমানবন্দরে হামলা, অল্পের জন্য রক্ষা তেল আবিবগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান

উল্লেখ্য, কর্নাটকের সরকারি জায়গায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) কর্মসূচি আয়োজনের তীব্র আপত্তি তোলেন কর্নাটকের মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্ক খাড়গে। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি লিখে সরকারি স্কুল ও কলেজের জায়গায় আরএসএসের অনুষ্ঠান পরিচালনার অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানিয়ে কংগ্রেস নেতার বক্তব্য ছিল, যে পাবলিক পার্ক এবং মুজরাই মন্দিরগুলিতেও যাতে আরএসএস-এর কর্মসূচির অনুমতি না দেওয়া হয়। চিঠিতে খাড়গে লেখেন, “রাষ্ট্রীয় দাস্তেয়মসেবক সংঘ নামে একটি সংগঠন সরকারি স্কুল এবং সরকারি মাঠ ব্যবহার করে বিক্ষোভ সংগঠিত করছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে। যা শিশুদের মনে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা জাগিয়ে তুলছে।” চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, পুলিশও লাঠি নিয়ে অননুমোদিত বিক্ষোভ চালাচ্ছে এবং নিরীহ শিশু ও যুবকদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কংগ্রেস নেতা ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “শিশু, যুবক, জনসাধারণ এবং সমাজের কল্যাণের স্বার্থে আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি সরকারি স্কুল ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল এবং মুজরাই বিভাগের মাঠ, পার্ক, মন্দির, প্রত্নতাত্ত্বিক দফতরের জায়গা সহ যে কোনও সরকারি স্থানে কোনও শাখা, সংসদ বা বৈথকের নামে আরএসএস সংগঠনের সমস্ত ধরণের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করুন।”

আরও পড়ুন: সরকারি ট্রেন্ডারে মুসলিমদের ৪ শতাংশ সংরক্ষণ, সিদ্ধান্ত কর্নাটক সরকারের

সম্প্রীতি আরএসএসের শতবর্ষ উদযাপনের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ বিজেপি নেতাদের দেখা গিয়েছিল। শতবর্ষ উদযাপনে সংগঠনটির প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকার আরএসএসের ১০০ তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ স্মারক মুদ্রা এবং ডাকটিকিট প্রকাশ করে। যা নিয়ে বির্তকের জন্ম হয়। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, যে ৬০ টাকার মুদ্রা চালু করা উচিত ছিল, কারণ ব্রিটিশদের হয়ে কাজ করে ৬০ টাকা করে পেতেন বিনায়ক দামোদর সাভারকর। ২ অক্টোবর এক এক্স পোস্টে কংগ্রেস নেতা লেখেন, “যদি আরএসএসের জন্য মুদ্রা চালু করারই হত, তাহলে তাদের ৬০ টাকার কয়েন চালু করা উচিত ছিল। এই টাকা ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে পেতেন সাভারকর। তাদের ব্রিটিশ ডাক বিভাগের জন্য একটি মুদ্রা জারি করা উচিত ছিল, যার মাধ্যমে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত। আপনি যতই ডাকটিকিট ছাপান, নতুন মুদ্রা চালু করুন, অথবা পাঠ্যক্রমে আরএসএসকে যতই সন্নিবেশ করান না কেন – এই দেশ গান্ধীর ছিল, গান্ধীরই থাকবে।”