০২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের দৌলতে হতদরিদ্র লক্ষী নতুন জীবন ফিরে পেল

নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুর থানার মশিনাপুর গ্রামের বাসিন্দা লক্ষী আহেড়ী। জন্ম থেকেই তার হৃদযন্ত্রে ছিদ্র ধরা পড়ে। বছরের অধিকাংশ সময় তাকে জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হতে হয়। লক্ষ্মী আহেড়ীর বাবা সরোজ আহেড়ী দিন আনা দিন খাওয়া একজন ছাপোষা মানুষ। কোনরকমে সংসার চলে। তবে অভাব-অনটন নিত্য তাড়া করে বেড়ায় সরোজ আহেড়ীকে। তার উপর ছোট্ট একরত্তি মেয়ে লক্ষ্মীর হৃদযন্ত্রের ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানোর অর্থ নেই। দীর্ঘ কুড়িটা বছর অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন ডাক্তারের দুয়ারে দুয়ারে চিকিৎসার আর্জি নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছেন। কিন্তু কেউই তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন নি।  অবশেষে গ্রামীণ চিকিৎসক গোলাম মোর্তজা সাহেব অসহায় লক্ষ্মীর চিকিৎসায় সাহায্য করার জন্য হুগলি জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আওয়ার অবলম্বন’ সংস্থার সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। মুজিবুর রহমান দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালের ডাইরেক্টর সত্যজিৎ বোসের সঙ্গে লক্ষীর চিকিৎসার বিষয়ে সাহায্যের আর্জি জানান। মানবিক চিকিৎসক সত্যজিৎবাবুর সাহায্যে লক্ষ্মী আহেড়ীকে ওই মিশন হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত হয়।  গত ২৮ অক্টোবর আওয়ার অবলম্বন সংস্থার অ্যাম্বুলেন্স করে নিখরচায় লক্ষ্মী আহিড়ীকে নিয়ে গিয়ে দুর্গাপুরে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক সত্যজিৎ বোসের তত্ত্বাবধানে লক্ষীর হৃদযন্ত্রের অপারেশন করা হয়। তবে লক্ষ্মীর হৃদযন্ত্রের অপারেশন করতে একটি পয়সাও খরচ করতে হয়নি। রাজ্য সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমেই চিকিৎসক সত্যজিৎবাবু সম্পূর্ণ নিখরচায় তার হার্টের অপারেশন করার অবস্থা করেন। গত ১২ নভেম্বর নতুন জীবন ফিরে পেয়ে লক্ষ্মী আহেড়ী দীর্ঘ কুড়ি বছরের যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পায়। বাবা-মায়ের সঙ্গে সেই আওয়ার অবলম্বন সংস্থার অ্যাম্বুলেন্সে করে নিখরচায় তাদের মশিনাপুর গ্রামের বাড়িতে ফিরে যায়। 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder