কেন্দ্রের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুর নয়া শিক্ষানীতি

- আপডেট : ৯ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার
- / 16
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : তামিলনাড়ুর স্টেট এডুকেশন পলিসি শুধুমাত্র একটি শিক্ষামূলক সংস্কার নয়, এটি কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বার্তা। মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন এই নয়া নীতি উন্মোচন করে যে বক্তব্য রেখেছেন, তাতে এই জেহাদের প্রতিফলন স্পষ্ট।
তিনি বলেছেন, স্টেট এডুকেশন পলিসি তামিলনাড়ুর ‘অনন্য চরিত্র’ প্রতিফলিত করবে এবং প্রগতিশীল চিন্তাভাবনাকে ভবিষ্যতের উপযোগী দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে তুলে ধরবে। এটি প্রকারান্তরে কেন্দ্রের নীতির সঙ্গে রাজ্যের ভিন্নতাকে তুলে ধরেছে। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের কাছে যে দক্ষিণ ভারত মাথানত করবে না, তার সুষ্পষ্ট প্রমাণ এই নীতি প্রণয়ন।
ভাষার দৃষ্টিকোণ থেকে, এই নীতি একটি শক্তিশালী প্রতিবাদ। স্টালিন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন যে রাজ্য কঠোরভাবে দুই-ভাষা নীতি অনুসরণ করবে, যেখানে তামিল এবং ইংরেজিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। এটি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত ত্রি-ভাষা নীতির সরাসরি বিরোধিতা, যা প্রায়শই হিন্দি ভাষাকে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখা হয়।
তামিলনাড়ু বরাবরই ভাষার প্রশ্নে আপসহীন থেকেছে, এবং এই এসইপি সেই ঐতিহ্যকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। উপ-মুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্টালিনও এই বিষয়টিকে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে এনেছেন। তিনি বলেছেন যে দ্রাবিড় আন্দোলন শিক্ষার অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য শুরু হয়েছিল এবং পেরিয়ার ই ভি রামাস্বামী ‘কুলা কালভি’ প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিলেন। এনইপিকে একটি বখাটে হাতি এবং সেটিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য এসইপিকে ‘আসল অঙ্কুশ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা এই রাজনৈতিক সংঘাতের তীব্রতা প্রমাণ করে।
শিক্ষার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সাফল্যকে তুলে ধরে স্টালিন বলেছেন যে সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় ভর্তির হার গত বছর ৭৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এটি কেন্দ্রের নীতির বিপরীতে রাজ্যের নিজস্ব পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রমাণ করে। এই নীতিটি প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ এবং সৃজনশীল শিক্ষার্থীদের তৈরি করার উপরও জোর দেয়, যা আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সামগ্রিকভাবে, তামিলনাড়ুর স্টেট এডুকেশন পলিসি শুধুমাত্র একটি শিক্ষা দলিল নয়; এটি কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে দ্রাবিড় রাজনৈতিক আদর্শ, ভাষাগত স্বাতন্ত্র এবং রাজ্যের নিজস্ব উন্নয়ন মডেলের একটি দৃঢ় ঘোষণা। এটি প্রমাণ করে যে শিক্ষানীতি অনেক সময়ই রাজনৈতিক লড়াই এবং সাংস্কৃতিক আত্মমর্যাদার প্রতীক হয়ে ওঠে।