০২ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনী নথি জালিয়াতি মামলায় সিবিআই নয়,  পুলিশকে তদন্তভার ডিভিশন বেঞ্চের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৬ জুন ২০২৩, সোমবার
  • / 89

পারিজাত মোল্লা:   সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বড়সড় আইনি স্বস্তি পেল রাজ্য সরকার। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পেশে নির্বাচনী নথি জালিয়াতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। উলুবেড়িয়ার দুই সিপিএম প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বিকৃতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সোমবার বিচারপতি সিনহার সেই নির্দেশ খারিজ করে দিল ডিভিশন বেঞ্চে।

এদিন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে রাজ্যপুলিশের হাতেই তদন্তভার দিল।

আরও পড়ুন: SBI fraud case: ED-র পরে এ বার CBI-এর নজরে অনিল আম্বানি

তবে এদিন ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়,  ‘আদালতের নজরদারিতে রাজ্য পুলিশই এই মামলার তদন্ত করবে’। সেই সঙ্গে এক বিচারপতির কমিশনও গড়ে দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে’কে।

আরও পড়ুন: পার্থের জামিন মামলায় হাইকোর্টে রিপোর্ট জানাতে ‘সময়’ নিল সিবিআই

উল্লেখ্য,  দুই সিপিএম প্রার্থী কাশ্মীরা বিবি ও ওমজা বিবির অভিযোগ,  তাঁদের মনোনয়নপত্র বিকৃত করা হয়েছে। সেই কারণেই স্ক্রুটিনিতে তাঁদের মনোনয়ন বাদ পড়েছে।

আরও পড়ুন: ইডি সিবিআই সেজে লুটপাটের ঘটনা ঠেকাতে সিসিটিভি নজরদারি বাড়াচ্ছে লালবাজার

এ বিষয়ে বিডিওর কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি সেই অভিযোগ নেননি’। বাধ্য হয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন কাশ্মীরা এবং ওমজা। বিচারপতি অমৃতা সিনহা মামলাকারী পক্ষের বক্তব্য শোনার পর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।

বিচারপতি সিনহা নির্দেশ দানে উল্লেখ করেন,  যেহেতু রাজ্য সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাই রাজ্য পুলিশকে এই তদন্তভার দিলে নিরপেক্ষতা রক্ষিত হবে না’। সেই যুক্তিতেও তিনি সিবিআইকে তদন্তভার দেন। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। সোমবার ছিল শুনানি।

সওয়াল জবাবের পর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘ এই মামলার তদন্ত করবে রাজ্যপুলিশই। তবে আদালতের নজরদারিতে এই কাজ করবেন তাঁরা’। পঞ্চায়েত সংক্রান্ত বিরোধীদের বহু মামলার মধ্যে একটি মামলা ছিল মনোনয়নে নথি বিকৃত করা সংক্রান্ত। সিপিএমের দুই মহিলা প্রার্থী এ ব্যাপারে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

তাঁদের অভিযোগ,  পঞ্চায়েতের রিটার্নিং অফিসার তাঁদের মনোনয়নপত্রের নথি বিকৃত করেছেন। এই মামলা প্রথমে ওঠে হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার সিঙ্গেল বেঞ্চে। তিনি এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয় ডিভিশন বেঞ্চে। সোমবার ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে সিঙ্গেল বেঞ্চের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দেয়। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেয়, রাজ্য পুলিশই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।

হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ”অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নজরদারিতে এই মামলার তদন্ত করবে রাজ্য পুলিশ। এক সদস্যের এই কমিশনকে সব রকম সাহায্য করতে হবে রাজ্যকে।”

একই সঙ্গে তিন সপ্তাহ পরে নথি বিকৃতির অভিযোগের তদন্ত রিপোর্ট সিঙ্গেল বেঞ্চে জমা দিতে হবে বলেও জানায় ডিভিশন বেঞ্চ।

প্রসঙ্গত,  গত ৮ জুন রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণা করা হয়। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট হবে। তার আগে ৯ থেকে ১৫ জুন মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। তবে ওই কয়েক দিনে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অশান্তির অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে নথি বিকৃত করার অভিযোগ করেছিলেন সিপিএমের দুই প্রার্থী কাশ্মীরা বেগম খান এবং তনুজা বেগম মল্লিক।

উলুবেড়িয়া-১ নম্বর ব্লকের বহিরা-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি আলাদা আসনে সিপিএম প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন তাঁরা। সিঙ্গেল বেঞ্চ সিবিআইকে তদন্তভার দিলেও এদিন ডিভিশন বেঞ্চ একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে রাজ্য পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ জারি করলো। তিন সপ্তাহ পর তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিঙ্গেল বেঞ্চে।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নির্বাচনী নথি জালিয়াতি মামলায় সিবিআই নয়,  পুলিশকে তদন্তভার ডিভিশন বেঞ্চের

আপডেট : ২৬ জুন ২০২৩, সোমবার

পারিজাত মোল্লা:   সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বড়সড় আইনি স্বস্তি পেল রাজ্য সরকার। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পেশে নির্বাচনী নথি জালিয়াতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। উলুবেড়িয়ার দুই সিপিএম প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বিকৃতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সোমবার বিচারপতি সিনহার সেই নির্দেশ খারিজ করে দিল ডিভিশন বেঞ্চে।

এদিন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে রাজ্যপুলিশের হাতেই তদন্তভার দিল।

আরও পড়ুন: SBI fraud case: ED-র পরে এ বার CBI-এর নজরে অনিল আম্বানি

তবে এদিন ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়,  ‘আদালতের নজরদারিতে রাজ্য পুলিশই এই মামলার তদন্ত করবে’। সেই সঙ্গে এক বিচারপতির কমিশনও গড়ে দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে’কে।

আরও পড়ুন: পার্থের জামিন মামলায় হাইকোর্টে রিপোর্ট জানাতে ‘সময়’ নিল সিবিআই

উল্লেখ্য,  দুই সিপিএম প্রার্থী কাশ্মীরা বিবি ও ওমজা বিবির অভিযোগ,  তাঁদের মনোনয়নপত্র বিকৃত করা হয়েছে। সেই কারণেই স্ক্রুটিনিতে তাঁদের মনোনয়ন বাদ পড়েছে।

আরও পড়ুন: ইডি সিবিআই সেজে লুটপাটের ঘটনা ঠেকাতে সিসিটিভি নজরদারি বাড়াচ্ছে লালবাজার

এ বিষয়ে বিডিওর কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি সেই অভিযোগ নেননি’। বাধ্য হয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন কাশ্মীরা এবং ওমজা। বিচারপতি অমৃতা সিনহা মামলাকারী পক্ষের বক্তব্য শোনার পর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।

বিচারপতি সিনহা নির্দেশ দানে উল্লেখ করেন,  যেহেতু রাজ্য সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাই রাজ্য পুলিশকে এই তদন্তভার দিলে নিরপেক্ষতা রক্ষিত হবে না’। সেই যুক্তিতেও তিনি সিবিআইকে তদন্তভার দেন। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। সোমবার ছিল শুনানি।

সওয়াল জবাবের পর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘ এই মামলার তদন্ত করবে রাজ্যপুলিশই। তবে আদালতের নজরদারিতে এই কাজ করবেন তাঁরা’। পঞ্চায়েত সংক্রান্ত বিরোধীদের বহু মামলার মধ্যে একটি মামলা ছিল মনোনয়নে নথি বিকৃত করা সংক্রান্ত। সিপিএমের দুই মহিলা প্রার্থী এ ব্যাপারে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

তাঁদের অভিযোগ,  পঞ্চায়েতের রিটার্নিং অফিসার তাঁদের মনোনয়নপত্রের নথি বিকৃত করেছেন। এই মামলা প্রথমে ওঠে হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার সিঙ্গেল বেঞ্চে। তিনি এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয় ডিভিশন বেঞ্চে। সোমবার ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে সিঙ্গেল বেঞ্চের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দেয়। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেয়, রাজ্য পুলিশই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।

হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ”অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নজরদারিতে এই মামলার তদন্ত করবে রাজ্য পুলিশ। এক সদস্যের এই কমিশনকে সব রকম সাহায্য করতে হবে রাজ্যকে।”

একই সঙ্গে তিন সপ্তাহ পরে নথি বিকৃতির অভিযোগের তদন্ত রিপোর্ট সিঙ্গেল বেঞ্চে জমা দিতে হবে বলেও জানায় ডিভিশন বেঞ্চ।

প্রসঙ্গত,  গত ৮ জুন রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণা করা হয়। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট হবে। তার আগে ৯ থেকে ১৫ জুন মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। তবে ওই কয়েক দিনে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অশান্তির অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে নথি বিকৃত করার অভিযোগ করেছিলেন সিপিএমের দুই প্রার্থী কাশ্মীরা বেগম খান এবং তনুজা বেগম মল্লিক।

উলুবেড়িয়া-১ নম্বর ব্লকের বহিরা-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি আলাদা আসনে সিপিএম প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন তাঁরা। সিঙ্গেল বেঞ্চ সিবিআইকে তদন্তভার দিলেও এদিন ডিভিশন বেঞ্চ একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে রাজ্য পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ জারি করলো। তিন সপ্তাহ পর তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিঙ্গেল বেঞ্চে।