০১ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শরণার্থীদের ২২ লক্ষ ইউরো লুট করেছে গ্রিসের সেনা!

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩, সোমবার
  • / 37

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ও ফোন কেড়ে নিয়ে তাদের ফেরত পাঠানোর অভিযোগ  উঠেছে গ্রিক সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে। গত ৬ বছরে তারা এভাবে অন্তত ২২ লক্ষ ইউরো সমপরিমাণ অর্থসম্পদ ছিনিয়ে নিয়েছে। তুর্কি সীমান্ত দিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর সময় গ্রিক বাহিনী এই অর্থ ছিনতাই করেছে বলে জানিয়েছে স্প্যানিশ দৈনিক ‘এল পাইস’। নগদ অর্থের পাশাপাশি অভিবাসন প্রত্যাশীদের সঙ্গে থাকা অলঙ্কার, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদও ছিনিয়ে নেয় গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা। এরপর তাদের জোর করে তুরস্কের দিকে ফেরত পাঠানো হয়। তবে গ্রিক বাহিনীর ছিনিয়ে নেওয়া সম্পদের অর্থমূল্য ২২ লক্ষ ইউরোর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে।

কারণ যেসব অভিবাসন প্রত্যাশী বা শরণার্থীকে পুশব্যাক করা হয়েছে, তাদের অনেকেরই তথ্য পাওয়া যায়নি। ইভরোস সীমান্ত অঞ্চলে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও, মাইগ্রেশন অ্যাডভোকেসি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে এল পাইস। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রিসের সীমান্তে পৌঁছানো উদ্বাস্তু ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের অর্থ এবং পণ্য ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা বেড়েছে।

২০১৭ সালের দিকেও এমন ঘটনার কথা শোনা যায়নি। কিন্তু গত কয়েক বছরে গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা এটিকে নিয়মিত করে তুলেছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক ইভা কসে জানিয়েছেন, অনিয়মিত পথে যাওয়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঠেকাতে এবং আগমনে নিরুৎসাহিত করতে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও অর্থ ছিনিয়ে নিচ্ছে গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা।

 তিনি বলেন, ‘আপনি যখন ফোন কেড়ে নেন, তখন তারা যে সেখানে ছিল, সেটি হয়তো আর প্রমাণ করা যায় না। কিন্তু যখন অর্থ লুট করেন, তখন আপনি তাদের জীবনকে আরও বিপন্ন করে তোলেন।’ বলকান ও গ্রিসকেন্দ্রিক অভিবাসন বিষয়ক প্রতিষ্ঠান বর্ডার ভায়োলেন্স মনিটরিং নেটওয়ার্কের সিনিয়র পলিসি অ্যানালিস্ট হোপ বার্কার বলেছেন, অভিবাসন প্রতাশীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোনগুলো কখনও রাখা হয়, আবার কখনও নষ্ট করে ফেলা হয়।

 তবে সীমান্তরক্ষীরা অর্থটা রেখে দেয়।’  ২০২২ সালে গ্রিক ন্যাশনাল কমিশন ফর হিউম্যান রাইটস থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, গ্রিসের সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠানো বা পুশব্যাকের শিকার অভিবাসন প্রত্যাশীদের ৯৩ শতাংশই সীমান্তরক্ষীদের হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। এল পাইসের অনুসন্ধান বলছে, সীমান্ত থেকে অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের ধরে পুলিশ স্টেশন বা সামরিক ব্যারাকে নিয়ে যায় গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা। সেখানে তাদের জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়া হয় এবং মারধর করা হয়। এরপর তাদের জোর করে তুরস্কের দিকে ফেরত পাঠানো হয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শরণার্থীদের ২২ লক্ষ ইউরো লুট করেছে গ্রিসের সেনা!

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ও ফোন কেড়ে নিয়ে তাদের ফেরত পাঠানোর অভিযোগ  উঠেছে গ্রিক সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে। গত ৬ বছরে তারা এভাবে অন্তত ২২ লক্ষ ইউরো সমপরিমাণ অর্থসম্পদ ছিনিয়ে নিয়েছে। তুর্কি সীমান্ত দিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর সময় গ্রিক বাহিনী এই অর্থ ছিনতাই করেছে বলে জানিয়েছে স্প্যানিশ দৈনিক ‘এল পাইস’। নগদ অর্থের পাশাপাশি অভিবাসন প্রত্যাশীদের সঙ্গে থাকা অলঙ্কার, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদও ছিনিয়ে নেয় গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা। এরপর তাদের জোর করে তুরস্কের দিকে ফেরত পাঠানো হয়। তবে গ্রিক বাহিনীর ছিনিয়ে নেওয়া সম্পদের অর্থমূল্য ২২ লক্ষ ইউরোর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে।

কারণ যেসব অভিবাসন প্রত্যাশী বা শরণার্থীকে পুশব্যাক করা হয়েছে, তাদের অনেকেরই তথ্য পাওয়া যায়নি। ইভরোস সীমান্ত অঞ্চলে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও, মাইগ্রেশন অ্যাডভোকেসি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে এল পাইস। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রিসের সীমান্তে পৌঁছানো উদ্বাস্তু ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের অর্থ এবং পণ্য ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা বেড়েছে।

২০১৭ সালের দিকেও এমন ঘটনার কথা শোনা যায়নি। কিন্তু গত কয়েক বছরে গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা এটিকে নিয়মিত করে তুলেছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক ইভা কসে জানিয়েছেন, অনিয়মিত পথে যাওয়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঠেকাতে এবং আগমনে নিরুৎসাহিত করতে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও অর্থ ছিনিয়ে নিচ্ছে গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা।

 তিনি বলেন, ‘আপনি যখন ফোন কেড়ে নেন, তখন তারা যে সেখানে ছিল, সেটি হয়তো আর প্রমাণ করা যায় না। কিন্তু যখন অর্থ লুট করেন, তখন আপনি তাদের জীবনকে আরও বিপন্ন করে তোলেন।’ বলকান ও গ্রিসকেন্দ্রিক অভিবাসন বিষয়ক প্রতিষ্ঠান বর্ডার ভায়োলেন্স মনিটরিং নেটওয়ার্কের সিনিয়র পলিসি অ্যানালিস্ট হোপ বার্কার বলেছেন, অভিবাসন প্রতাশীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোনগুলো কখনও রাখা হয়, আবার কখনও নষ্ট করে ফেলা হয়।

 তবে সীমান্তরক্ষীরা অর্থটা রেখে দেয়।’  ২০২২ সালে গ্রিক ন্যাশনাল কমিশন ফর হিউম্যান রাইটস থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, গ্রিসের সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠানো বা পুশব্যাকের শিকার অভিবাসন প্রত্যাশীদের ৯৩ শতাংশই সীমান্তরক্ষীদের হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। এল পাইসের অনুসন্ধান বলছে, সীমান্ত থেকে অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের ধরে পুলিশ স্টেশন বা সামরিক ব্যারাকে নিয়ে যায় গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা। সেখানে তাদের জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়া হয় এবং মারধর করা হয়। এরপর তাদের জোর করে তুরস্কের দিকে ফেরত পাঠানো হয়।