২৮ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কথা-কবিতা ও সংগীতের মূর্ছনায় উৎসবের আমেজ ঈদ মিলনীতে

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার
  • / 132

আসিফ রেজা আনসারীঃ দেশভাগ ও স্বাধীনতার পর এপার বাংলায় সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চার এক সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। কেননা, বেশিরভাগ বুদ্ধিজীবী ও ধনাঢ্যব্যক্তি সীমান্তের ওপারে (অধুনা বাংলাদেশ) চলে যান। আর এই সঙ্কট শুধু শিক্ষা-সংস্কৃতির দিকেই প্রকট হয়নি, পত্র-পত্রিকা প্রকাশনার জগতেও দেখা দিয়েছিল শূন্যতা। তারপর অবশ্য বেশ কিছু উদ্যোগ লক্ষ্য করা গিয়েছিল। হাতেগোনা কয়েকটি পত্রিকা ছাড়া সেভাবে কোনও পত্রিকা অবশ্য টিকে থাকতে পারেনি।

পক্ষান্তরে মাসিক হিসাবে পথচলা শুরু করে সাপ্তাহিক ক্রমান্বয়ে দৈনিক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে ‘কলম’ যা বর্তমানে  ‘পুবের কলম’ নামে দৈনিক প্রকাশিত হচ্ছে। কলমের এই দীর্ঘ যাত্রাপথে প্রকাশিত হয়ে আসছে ঈদ সংখ্যা। পূর্ববর্তী বছরগুলির মতো এবারও ঈদ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। কেমন হয়েছে ঈদ সংখ্যা, ঈদ নিয়ে কী ভাবছেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিদগ্ধ মানুষরা। এ সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করতে একটি মহতী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শনিবার সেই অনুষ্ঠানকে ঘিরে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়াম হয়ে ওঠে মহামিলন ও চাঁদেরহাট।

আরও পড়ুন: উৎসব শেষে রুফটপ রেস্তরাঁ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ: রাজ্যজুড়ে সমীক্ষা শুরু করছে নবান্ন

এ দিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুবের কলম-এর ‘ঈদ মিলন’ ও ঈদ সংখ্যার পাঠ-পরিক্রমা অনুষ্ঠান হয়। সেখানে দর্শক-শ্রোতা হিসাবে এই মূহুর্তের সাক্ষী হতে দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষের সমাগম ঘটে।

আরও পড়ুন: আম লিচু উৎসব

নদিয়ার হরিণঘাটা থেকে সুন্দরবন এলাকার হিঙ্গলগঞ্জ, বিভিন্ন জেলা থেকে পুবের কলমের বহু অনুরাগীর আগমন ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশিষ্টদের অনেকেই সবার সঙ্গে ভাগ করে নিলেন ঈদ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা, কেউবা বর্তমান পরিস্থিতি ও সমাজের উত্তরণের পথ বাতলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কবিতা পাঠ, ইসলামী সংগীত পরিবেশনা সেই অনুষ্ঠানে বাড়তি মাত্রা যোগ করে।

আরও পড়ুন: পাথরচাপুড়িতে হযরত দাতা মেহবুব শাহ (রহ.)-এর উরস উপলক্ষে শুক্রবার শুরু হচ্ছে উরস উৎসব ও মেলা

অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে গিয়ে হাওড়ার অঙ্কুরহাটির এক স্কুল শিক্ষিকা ও কবি মোনালিসা রহমান বলেন, ‘আরও একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলাম, ভেবেছিলাম সেখানেও যাব। কিন্তু পুবের কলম-এর অনুষ্ঠানের মুগ্ধতায় আর যেতে পারলাম না।’

হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. শেখ কামাল উদ্দীন জানান, ‘পুবের কলম-এর আজকের অনুষ্ঠান যেন চাঁদেরহাট। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান আমাকে মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন করে রেখেছে।’ কবিতা আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট থেকে এসেছিলেন শিফা পারভীন। তিনি বলেন, আনন্দ-ঘন মূহুর্তের সাক্ষী হতে পারলাম, এটা বড় পাওনা।

শুধু কথা-কবিতা বা নজরুলের সংগীত পরিবেশনা নয়, ছিল পবিত্র কুরআন পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা পর্ব। এ নিয়েও প্রশংসার কথা শোনা গেল বিশিষ্টদের মুখে। ডায়মন্ড হারবার থেকে আগত সাংবাদিক সাকিল আহমেদ, সাঁতরাগাছির মতিয়ার রহমান, কবি আবদুর রব খান, পীরজাদা উজায়ের সিদ্দিকী, আজিজুর রহমান, মুহাম্মদ সামিম এমন বহু মানুষ উপস্থিতি ছিলেন।

অনুষ্ঠানের একেবারে শেষ লগ্নে শুধু কলকাতা কেন্দ্রিক লোকজন নয়, জলপাইগুড়ির আবদুল জলিল, মালদার স্কুল শিক্ষক রাজিব দাস, হুগলির পান্ডুয়ার রোশনারা খাতুনদের মতো অসংখ্য পুবের কলম অনুরাগীর মুখে মুখে ফিরল ঈদ সংখ্যার প্রশংসা। অনুষ্ঠানের মিশ্রসংস্কৃতি ও মিলনের সুর মনে গেঁথে বাড়ি ফিরলেন তাঁরা।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কথা-কবিতা ও সংগীতের মূর্ছনায় উৎসবের আমেজ ঈদ মিলনীতে

আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার

আসিফ রেজা আনসারীঃ দেশভাগ ও স্বাধীনতার পর এপার বাংলায় সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চার এক সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। কেননা, বেশিরভাগ বুদ্ধিজীবী ও ধনাঢ্যব্যক্তি সীমান্তের ওপারে (অধুনা বাংলাদেশ) চলে যান। আর এই সঙ্কট শুধু শিক্ষা-সংস্কৃতির দিকেই প্রকট হয়নি, পত্র-পত্রিকা প্রকাশনার জগতেও দেখা দিয়েছিল শূন্যতা। তারপর অবশ্য বেশ কিছু উদ্যোগ লক্ষ্য করা গিয়েছিল। হাতেগোনা কয়েকটি পত্রিকা ছাড়া সেভাবে কোনও পত্রিকা অবশ্য টিকে থাকতে পারেনি।

পক্ষান্তরে মাসিক হিসাবে পথচলা শুরু করে সাপ্তাহিক ক্রমান্বয়ে দৈনিক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে ‘কলম’ যা বর্তমানে  ‘পুবের কলম’ নামে দৈনিক প্রকাশিত হচ্ছে। কলমের এই দীর্ঘ যাত্রাপথে প্রকাশিত হয়ে আসছে ঈদ সংখ্যা। পূর্ববর্তী বছরগুলির মতো এবারও ঈদ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। কেমন হয়েছে ঈদ সংখ্যা, ঈদ নিয়ে কী ভাবছেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিদগ্ধ মানুষরা। এ সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করতে একটি মহতী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শনিবার সেই অনুষ্ঠানকে ঘিরে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়াম হয়ে ওঠে মহামিলন ও চাঁদেরহাট।

আরও পড়ুন: উৎসব শেষে রুফটপ রেস্তরাঁ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ: রাজ্যজুড়ে সমীক্ষা শুরু করছে নবান্ন

এ দিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুবের কলম-এর ‘ঈদ মিলন’ ও ঈদ সংখ্যার পাঠ-পরিক্রমা অনুষ্ঠান হয়। সেখানে দর্শক-শ্রোতা হিসাবে এই মূহুর্তের সাক্ষী হতে দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষের সমাগম ঘটে।

আরও পড়ুন: আম লিচু উৎসব

নদিয়ার হরিণঘাটা থেকে সুন্দরবন এলাকার হিঙ্গলগঞ্জ, বিভিন্ন জেলা থেকে পুবের কলমের বহু অনুরাগীর আগমন ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশিষ্টদের অনেকেই সবার সঙ্গে ভাগ করে নিলেন ঈদ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা, কেউবা বর্তমান পরিস্থিতি ও সমাজের উত্তরণের পথ বাতলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কবিতা পাঠ, ইসলামী সংগীত পরিবেশনা সেই অনুষ্ঠানে বাড়তি মাত্রা যোগ করে।

আরও পড়ুন: পাথরচাপুড়িতে হযরত দাতা মেহবুব শাহ (রহ.)-এর উরস উপলক্ষে শুক্রবার শুরু হচ্ছে উরস উৎসব ও মেলা

অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে গিয়ে হাওড়ার অঙ্কুরহাটির এক স্কুল শিক্ষিকা ও কবি মোনালিসা রহমান বলেন, ‘আরও একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলাম, ভেবেছিলাম সেখানেও যাব। কিন্তু পুবের কলম-এর অনুষ্ঠানের মুগ্ধতায় আর যেতে পারলাম না।’

হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. শেখ কামাল উদ্দীন জানান, ‘পুবের কলম-এর আজকের অনুষ্ঠান যেন চাঁদেরহাট। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান আমাকে মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন করে রেখেছে।’ কবিতা আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট থেকে এসেছিলেন শিফা পারভীন। তিনি বলেন, আনন্দ-ঘন মূহুর্তের সাক্ষী হতে পারলাম, এটা বড় পাওনা।

শুধু কথা-কবিতা বা নজরুলের সংগীত পরিবেশনা নয়, ছিল পবিত্র কুরআন পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা পর্ব। এ নিয়েও প্রশংসার কথা শোনা গেল বিশিষ্টদের মুখে। ডায়মন্ড হারবার থেকে আগত সাংবাদিক সাকিল আহমেদ, সাঁতরাগাছির মতিয়ার রহমান, কবি আবদুর রব খান, পীরজাদা উজায়ের সিদ্দিকী, আজিজুর রহমান, মুহাম্মদ সামিম এমন বহু মানুষ উপস্থিতি ছিলেন।

অনুষ্ঠানের একেবারে শেষ লগ্নে শুধু কলকাতা কেন্দ্রিক লোকজন নয়, জলপাইগুড়ির আবদুল জলিল, মালদার স্কুল শিক্ষক রাজিব দাস, হুগলির পান্ডুয়ার রোশনারা খাতুনদের মতো অসংখ্য পুবের কলম অনুরাগীর মুখে মুখে ফিরল ঈদ সংখ্যার প্রশংসা। অনুষ্ঠানের মিশ্রসংস্কৃতি ও মিলনের সুর মনে গেঁথে বাড়ি ফিরলেন তাঁরা।