০১ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এবার সোনিয়ার মন্তব্যে ‘অপমানিত’ ধনকর

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার
  • / 71

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকার সময় তিনি প্রায়শই অভিযোগ করতেন, শাসক দলের আচরণে ‘অপমানিত’ বোধ করেছেন। এক্ষেত্রে অবশ্য তিনি সরাসরি স্বীকার করেননি ‘অপমানিত’ বোধ করেছেন, তবে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস সুপ্রিমো সোনিয়া গান্ধির মন্তব্যে তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

রাজনৈতিক মহলের অবশ্য বক্তব্য, বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সংঘাতে জড়িয়ে ছিলেন তিনি। আর এখন উপ-রাষ্ট্রপতি হয়ে সংসদে বিরোধীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন। এর আগেও সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে দ্বন্দ্বে    জড়িয়ে ছিলেন তিনি। যদিও উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোনও অবস্থাতেই আইন ভঙ্গ করেননি।

শুক্রবার সরাসরি ‘ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধির নাম ধরে সরাসরি আক্রমণে নামলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপ-রাষ্ট্রপতি ধনকর। এদিন ধনকর বলেন, ‘‘২১ ডিসেম্বর ইউপিএ চেয়ারপারসনের দেওয়া বিবৃতিতে আমার সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছিল। এই সংসদের প্রত্যেক সদস্য সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী। সংসদের সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্রের জন্য জরুরি। তা নিয়ে কোনও আপস করা যায় না।

আমি সেটার উপরই জোর দিয়েছিলাম। বিচারবিভাগকে অসম্মান করা আমার কল্পনার বাইরে। এই চেয়ারে (রাজ্যসভার চেয়ারম্যান) বসে আমি কোনও রাজনৈতিক দলের হাতে পরিচালিত হব না।’’ এরপরই নিজের সাংবিধানিক পদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সোনিয়া গান্ধির উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ‘সাংবিধানিক পদে আসীন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যেন কোনও পক্ষপাতের অভিযোগ তোলা না হয়।’

উল্লেখ্য, বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ধনকর। সেই মন্তব্যের রেশ ধরে কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে সোনিয়া গান্ধি অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রের মোদি সরকার বিচার বিভাগের বৈধতাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

তারা সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিকে রাজনীতির ময়দানে নামিয়ে বিচার বিভাগকে টার্গেট করছে। সোনিয়ার এই মন্তব্যেরই জবাব দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন উপরাষ্ট্রপতি। এদিন সোনিয়াকে নিশানা করে তাঁর পালটা তোপ, ‘ইউপিএ সভানেত্রীর মন্তব্যে গণতন্ত্রে প্রতি তাঁর অনাস্থার মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।’

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেই ধনকর  কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘বিচারপতি নিয়োগের নতুন ব্যবস্থা তৈরি করতে বিল পাস হয়েছিল লোকসভা ও রাজ্যসভায়। সুপ্রিম কোর্ট সেই বিল বাতিল করে দিয়েছে। সংসদের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জনতার রায়কে অস্বীকার করা হয়েছে।’ ধনকরের এই মন্তব্যের সমালোচনা করেই সোনিয়া বলেছিলেন, ‘বিচারবিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতাকে খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে। মন্ত্রীদের পাশাপাশি সাংবিধানিক পদে থাকা এক ব্যক্তিকে দিয়ে বিচারবিভাগের বিরুদ্ধে  বক্তৃতা দেওয়া করাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষের চোখে বিচারবিভাগকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

এবার সোনিয়ার মন্তব্যে ‘অপমানিত’ ধনকর

আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকার সময় তিনি প্রায়শই অভিযোগ করতেন, শাসক দলের আচরণে ‘অপমানিত’ বোধ করেছেন। এক্ষেত্রে অবশ্য তিনি সরাসরি স্বীকার করেননি ‘অপমানিত’ বোধ করেছেন, তবে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস সুপ্রিমো সোনিয়া গান্ধির মন্তব্যে তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

রাজনৈতিক মহলের অবশ্য বক্তব্য, বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সংঘাতে জড়িয়ে ছিলেন তিনি। আর এখন উপ-রাষ্ট্রপতি হয়ে সংসদে বিরোধীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন। এর আগেও সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে দ্বন্দ্বে    জড়িয়ে ছিলেন তিনি। যদিও উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোনও অবস্থাতেই আইন ভঙ্গ করেননি।

শুক্রবার সরাসরি ‘ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধির নাম ধরে সরাসরি আক্রমণে নামলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপ-রাষ্ট্রপতি ধনকর। এদিন ধনকর বলেন, ‘‘২১ ডিসেম্বর ইউপিএ চেয়ারপারসনের দেওয়া বিবৃতিতে আমার সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছিল। এই সংসদের প্রত্যেক সদস্য সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী। সংসদের সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্রের জন্য জরুরি। তা নিয়ে কোনও আপস করা যায় না।

আমি সেটার উপরই জোর দিয়েছিলাম। বিচারবিভাগকে অসম্মান করা আমার কল্পনার বাইরে। এই চেয়ারে (রাজ্যসভার চেয়ারম্যান) বসে আমি কোনও রাজনৈতিক দলের হাতে পরিচালিত হব না।’’ এরপরই নিজের সাংবিধানিক পদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সোনিয়া গান্ধির উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ‘সাংবিধানিক পদে আসীন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যেন কোনও পক্ষপাতের অভিযোগ তোলা না হয়।’

উল্লেখ্য, বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ধনকর। সেই মন্তব্যের রেশ ধরে কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে সোনিয়া গান্ধি অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রের মোদি সরকার বিচার বিভাগের বৈধতাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

তারা সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিকে রাজনীতির ময়দানে নামিয়ে বিচার বিভাগকে টার্গেট করছে। সোনিয়ার এই মন্তব্যেরই জবাব দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন উপরাষ্ট্রপতি। এদিন সোনিয়াকে নিশানা করে তাঁর পালটা তোপ, ‘ইউপিএ সভানেত্রীর মন্তব্যে গণতন্ত্রে প্রতি তাঁর অনাস্থার মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।’

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেই ধনকর  কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘বিচারপতি নিয়োগের নতুন ব্যবস্থা তৈরি করতে বিল পাস হয়েছিল লোকসভা ও রাজ্যসভায়। সুপ্রিম কোর্ট সেই বিল বাতিল করে দিয়েছে। সংসদের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জনতার রায়কে অস্বীকার করা হয়েছে।’ ধনকরের এই মন্তব্যের সমালোচনা করেই সোনিয়া বলেছিলেন, ‘বিচারবিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতাকে খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে। মন্ত্রীদের পাশাপাশি সাংবিধানিক পদে থাকা এক ব্যক্তিকে দিয়ে বিচারবিভাগের বিরুদ্ধে  বক্তৃতা দেওয়া করাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষের চোখে বিচারবিভাগকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’