ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের উপর ২৫% শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

- আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৫, বুধবার
- / 26
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ভারতের উপর কড়া অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিলেন। ১ অগস্ট থেকে কার্যকর হতে চলেছে ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক। শুধু শুল্কই নয়, ভারতের উপর অতিরিক্ত জরিমানাও চাপানো হবে বলে ঘোষণা করেছেন তিনি। রাশিয়া থেকে ভারতের তেল ও প্রতিরক্ষা সামগ্রী আমদানি এবং দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য বাধা—এই দু’টি কারণেই এই কড়া সিদ্ধান্ত বলে জানান ট্রাম্প।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ বুধবার পোস্ট করে ট্রাম্প লিখেছেন, “ভারতকে আমি বন্ধু হিসেবে দেখি, কিন্তু অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ এবং কঠিন অ-আর্থিক বাণিজ্য বাধা আমাদের সম্পর্ক থমকে রেখেছে।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতের শুল্ক বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ এবং তারা এমন কিছু অ-আর্থিক বাণিজ্য বাধা তৈরি করেছে, যা অত্যন্ত কঠোর ও বিরক্তিকর।”
ট্রাম্প সরাসরি অভিযোগ করেন, “ভারত সবসময় রাশিয়ার কাছ থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনে এবং চিনের সঙ্গে মিলে রাশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম জ্বালানি ক্রেতা। এটা এমন এক সময়ে, যখন গোটা বিশ্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ করতে চাইছে।”
এই প্রেক্ষিতে, রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি সম্পর্ক বজায় রাখায়, আমেরিকা ভারতের উপর শুধু ২৫% শুল্কই নয়, বাড়তি জরিমানাও চাপাবে। যদিও সেই জরিমানার পরিমাণ এখনই স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প।
এর আগে মঙ্গলবার, ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ভারত-আমেরিকার মধ্যে প্রস্তাবিত বাণিজ্য চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সে কারণেই এই ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে, এমন ইঙ্গিত তিনি আগেই দিয়েছিলেন।
গত কয়েক মাস ধরে দুই দেশের মধ্যে কৃষি ও দুগ্ধ শিল্পে ছাড় নিয়ে আলোচনা চললেও, ভারত কোনওরকম ছাড় দিতে রাজি না হওয়ায় চুক্তি আটকে যায়। ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের রপ্তানি নীতিতে নমনীয়তা চাইছিল, বিশেষত মার্কিন দুগ্ধ ও কৃষিজ পণ্যের প্রবেশাধিকার বাড়াতে। কিন্তু ভারত সেই দাবিতে সায় না দেওয়ায় চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি।
এর আগে, গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন। যদিও তা অল্প সময়ের মধ্যেই স্থগিত রাখা হয়। কিন্তু এবার ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করার ঘোষণা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কে টানাপোড়েন আরও বাড়তে চলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় রপ্তানি শিল্পে বড় ধাক্কা হতে পারে, বিশেষ করে প্রযুক্তি, বস্ত্র, রত্ন ও গয়না, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কৃষিপণ্য-নির্ভর শিল্পে। এখন দেখার, ভারত সরকার এই সিদ্ধান্তের পাল্টা কী পদক্ষেপ নেয় এবং দুই দেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক আলোচনার ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোয়।