২৫টি ভাষায় পারদর্শী তুর্কি ইমাম ইব্রাহিম তাসদেমির

- আপডেট : ১১ অগাস্ট ২০২২, বৃহস্পতিবার
- / 24
পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ইব্রাহিম তাসদেমির। পশ্চিম তুরস্কের ‘ঈসা বে’ মসজিদের অন্যতম এক ইমাম। তিনি তাঁর সহকর্মী ইমামদের থেকে একটু আলাদা বললেই চলে। সেলজুকদের গড়া ইজমির প্রদেশের সুপরিচিত এই মসজিদটি পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।প্রতিদিনই কেউ না কেউ এই ঐতিহাসিক মসজিদ ভ্রমণে আসেন। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পর্যটকদের ইসলামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া তাসদেমির এক অন্যতম কাজ।
তাসদেমির ইসলামের বার্তা ছড়িয়ে দিতে পর্যটকদের সঙ্গে ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। যার মধ্যে ইসলামের মৌলিক বিষয়বস্তু ও প্রাথমিক নির্দেশনাগুলি থাকে।ইংরেজি, হিব্রু, পর্তুগিজসহ ২৫টি ভাষার মৌলিক জ্ঞান রয়েছে তার।এ্তগুলো ভাষা জানায় সহজেই তার প্রতি আগ্রহ জন্মায় টুরিস্টদের। এই ভাষাগুলিতে তিনি একটি সহজবোধ্য নোটসও বানিয়েছেন।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, প্রায় ৭ বছর আগে ইব্রাহিম তাসদেমির ঐতিহাসিক এই মসজিদ ‘ঈসা বে’ – এর ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হন।তাঁর অন্যতম কাজের মধ্যে একটি হল তিনি নিয়োগ পাওয়ার পর বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম ও বর্ণের পর্যটকদের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন যার মাধ্যমে তিনি সকলের সঙ্গেই খুব সহজেই যোগাযোগ করতে পারেন।
তাঁর আতিথেয়তা শুরু হয় চকোলেট ও সুগন্ধি দিয়ে। এটি অতিথিদের সম্মান জানানোর জন্য তুর্কীদের বহু প্রাচীন রীতি।এরপর কুশল বিনিময় অর্থাৎ পর্যটকরা কে কোন দেশ থেকে এসেছেন, তারা কোন ভাষায় কথা বলেন, ইসলাম সমন্ধে তাঁদের ধারণা কী ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা গড়ায়। এরপরই তিনি তাঁর বিভিন্ন ভাষায় রচিত ইসলাম সম্পর্কিত নোটটি তুলে দেন তাঁদের হাতে।
এই নোটগুলির মধ্যে নবী সা.–এর হাদিস ও অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে কুরআনের আয়াতের উদ্ধৃতি লেখা থাকে। তারপর তিনি ওই পর্যটকদের একটি বুক সেলফ এর কাছে নিয়ে যান যেখানে ২০ টি ভাষায় পবিত্র কুরআন শরিফ অনুবাদ করা হয়েছে।তিনি পর্যটকদের শুধু ইসলাম বিষয়ক নোট উপহার দেন তা নয়। বরং তারা যে ধর্মের অনুসারী সে ধর্মের গ্রন্থও উপহার দেন।
পর্যটকদের মধ্যে যদি কেউ আরও কিছু শিখতে ও জানতে আগ্রহী হয়, তবে তাঁদের মসজিদ প্রাঙ্গণে নিকটবর্তী একটি ঝরনার কাছে নিয়ে যান। তারপর ওজু কিভাবে করে ও নামায আদায় কিভাবে করে সবটাই দেখান।
এই প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাসদেমির জানিয়েছেন, যখন ওই পর্যটকগুলো তাঁদের দেশে ফিরে যান।তারা তাঁর কাজের প্রশংসা করে চিঠি পাঠান। তখন তাঁর মনে হয় তাঁর প্রচেষ্টা সফল।
তিনি আরও জানান, আমি সকলকেই দেখাতে চাই ইসলাম কত সুন্দর।আমি যখন তাঁদের মাতৃভাষায় কথা বলি, তখন তারা খুব মুগ্ধ হয়ে যায়।আমি মূলত ডাচ ও ইংলিশ ভাষায় কথা বলতে পারি। কারো মাতৃভাষায় কথা বলা হলে সে কতটা খুশি হয় তা লক্ষ্য করার মতো। তারা বিস্মিত হয় যখন একজন ইমাম তাদের মাতৃভাষায় কথা বলে। তারা যখন সন্তুষ্টি প্রকাশ করে, তখন আমি তাদের হাতে নোট তুলে দিই। এমনকি ভ্রমণে আসা পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন বলেও জানান তিনি।