আল-শারার প্রশংসা করলেন ট্রাম্প
সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার আমেরিকার

- আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, বুধবার
- / 446
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি আহমেদ আল-শারা বুধবার এক ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন মাত্র একদিন আগেই আমেরিকা সিরিয়ার উপর সকল ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। দীর্ঘ ২৫ বছর পর এই প্রথমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে এমন উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হল।
রিয়াধে অবস্থানকালে সউদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের আহ্বানে আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি হন ট্রাম্প । তিনি জানান, ‘সিরিয়ায় একটি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে, যারা যদি দেশের স্থিতিশীলতা ও শান্তি বজায় রাখতে পারে, সেটাই আমরা চাই।’ পরে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় ট্রাম্প বলেন তসিরিয়াকে নতুন করে গড়ে তুলতে ও শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের সুযোগ দিতে আমরা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছি। এই দেশটির আবারও মহত্ব অর্জনের সুযোগ থাকা উচিত।’
এরপর হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানায়, বৈঠকে ট্রাম্প সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারাকে তিনটি বিষয় অনুরোধ করেন: তা হল ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যাদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাদের বহিষ্কার; দ্বিতীয়, ইসরাইলের সঙ্গে আব্রাহাম চুক্তিতে স্বাক্ষর; আর সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আইএস বন্দিদের দায়িত্ব গ্রহণ। যদিও এই শর্তগুলির বিষয়ে আল-শারা কোনো মন্তব্য করেননি ।
সিরিয়ায় দীর্ঘ ৫৪ বছরের আসাদ শাসনের পতনের পর জানুয়ারিতে আল-শারা রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। হায়াত তাহরির আল-শাম নেতৃত্বে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক দখলের পর আল-শারার উত্থান হয়।
সউদি আরব থেকে কাতারের রাজধানী দোহা যাওয়ার পথে বিমানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, বৈঠকটা খুব ভালো হয়েছে। আল-শারা একজন তরুণ, আকর্ষণীয় ছেলে। কঠিন চরিত্রের মানুষ। অতীত খুবই শক্তিশালী;একেবারে লড়াকু। তিনি আরও বলেন, ‘ওর একটা বাস্তব সম্ভাবনা আছে দেশের পরিস্থিতি সামলানোর। তুর্কির প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে;তিনি ওর বন্ধু।এরদোগানও মনে করেন ও ভালো করতে পারে।’
আল জাজিরার বিশ্লেষক হাশেম আহেলবারা বলেন, এই ৩৩ মিনিটের বৈঠক ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সিরিয়ার নতুন সরকারের জন্য বৈশ্বিক স্বীকৃতির দিক থেকে একটি বড় অগ্রগতি। তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে উপসাগরীয় দেশগুলোও সিরিয়ার উন্নয়নে আর্থিক সহায়তা করতে আগ্রহী হবে। সিরিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির এক বিশাল মাইলফলক।
ট্রাম্পের ঘোষণার পর সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে জনগণের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। পাঁচ দশকের আসাদ শাসনের পতনের পর দেশটি নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির আশায় মানুষ আশাবাদী। সৌদি আরবের পর ট্রাম্প কাতারের রাজধানী দোহায় গেছেন। কাতার এই সফরে যুক্তরাষ্ট্রে শত শত বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, বোয়িংয়ের কাছ থেকে ১০০টি ওয়াইড-বডি জেট কেনার ঘোষণা আসতে পারে।
ট্রাম্প এরপর বৃহস্পতিবার আবুধাবিতে ইউএই নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। শুক্রবার তার ওয়াশিংটনে ফেরার কথা থাকলেও, তিনি জানিয়েছেন, তুরস্কে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সম্ভাব্য বৈঠকে যোগ দিতে পারেন।