১৩ অক্টোবর ২০২৫, সোমবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমেরিকার জন্য কৃষি-বাণিজ্য হুমকির মুখে, ক্ষোভ চিনের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৪ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার
  • / 187

পুবের কলম, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চিন ও আমেরিকার মধ্যে চলমান বাণিজ্যিক উত্তেজনা এবার সরাসরি প্রভাব ফেলেছে কৃষিপণ্যের উপর। চিনের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘র‌্যাম্প্যান্ট প্রোটেকশনিজম’ বা অতিমাত্রার সুরক্ষা নীতি দুই দেশের কৃষি বাণিজ্যকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে এক আলোচনায় চিনা রাষ্ট্রদূত ঝি ফেং বলেন, এই ধরনের নীতির কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষি হওয়া উচিত শান্তিপূর্ণ সহযোগিতার ক্ষেত্র, রাজনীতির মঞ্চ নয়।

চিন দাবি করেছে, আমেরিকার নানা ধরনের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা এবং ট্যারিফের কারণে তারা আমেরিকান কৃষিপণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক আরোপে বাধ্য হয়েছে। এ বছরের মার্চ মাসে চিন আমেরিকার প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্যের উপর ১৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিনে কৃষিপণ্যের রফতানি ব্যাপকভাবে কমেছে।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রের চিনে কৃষিপণ্য রফতানি ৫৩ শতাংশ কমে গেছে। সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে সয়াবিন খাতে, যেখানে রফতানি কমেছে প্রায় ৫১ শতাংশ। চিনের বাজারে যেসব আমেরিকান কৃষিপণ্য দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তার করেছিল, সেগুলোর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন: Donald Trump-Shehbaz Sharif: শাহবাজ-মুনিরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প

 

আরও পড়ুন: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির আহ্বান চিনের

চিনা রাষ্ট্রদূত ঝি ফেং আরও বলেন, চিন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি খাত পরস্পরের পরিপূরক। আমেরিকার রয়েছে প্রচুর জমি ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, আর চিনের রয়েছে বিশাল বাজার। এই সহযোগিতা ভেঙে গেলে উভয় দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিন ও আমেরিকার এই বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব শুধু দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এর ঢেউ ছড়িয়ে পড়বে বিশ্ব-বাজারে।

আরও পড়ুন: ভারত থেকে আমেরিকার আয় কত? ট্রাম্পের দাবি ভুয়ো, জানাচ্ছে রিপোর্ট

 

ইতিমধ্যেই ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা চিনের বিকল্প কৃষি সরবরাহকারী হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে। ফলে বিশ্বব্যাপী কৃষিপণ্যের দামে পরিবর্তন আসতে পারে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই পরিস্থিতি নতুন সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ দুটোই তৈরি করতে পারে। যেমন, কৃষিপণ্যের দাম বাড়লে স্থানীয় বাজারে প্রভাব পড়বে। আবার অন্যদিকে, কিছু ক্ষেত্রে নতুন রফতানি বাজার তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে এই টানাপোড়েন নিরসনে উভয় দেশেরই উচিত কৃষিকে রাজনৈতিক বিবাদের বাইরে রাখা এবং গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজা।

 

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আমেরিকার জন্য কৃষি-বাণিজ্য হুমকির মুখে, ক্ষোভ চিনের

আপডেট : ২৪ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চিন ও আমেরিকার মধ্যে চলমান বাণিজ্যিক উত্তেজনা এবার সরাসরি প্রভাব ফেলেছে কৃষিপণ্যের উপর। চিনের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘র‌্যাম্প্যান্ট প্রোটেকশনিজম’ বা অতিমাত্রার সুরক্ষা নীতি দুই দেশের কৃষি বাণিজ্যকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে এক আলোচনায় চিনা রাষ্ট্রদূত ঝি ফেং বলেন, এই ধরনের নীতির কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষি হওয়া উচিত শান্তিপূর্ণ সহযোগিতার ক্ষেত্র, রাজনীতির মঞ্চ নয়।

চিন দাবি করেছে, আমেরিকার নানা ধরনের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা এবং ট্যারিফের কারণে তারা আমেরিকান কৃষিপণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক আরোপে বাধ্য হয়েছে। এ বছরের মার্চ মাসে চিন আমেরিকার প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্যের উপর ১৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিনে কৃষিপণ্যের রফতানি ব্যাপকভাবে কমেছে।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রের চিনে কৃষিপণ্য রফতানি ৫৩ শতাংশ কমে গেছে। সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে সয়াবিন খাতে, যেখানে রফতানি কমেছে প্রায় ৫১ শতাংশ। চিনের বাজারে যেসব আমেরিকান কৃষিপণ্য দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তার করেছিল, সেগুলোর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন: Donald Trump-Shehbaz Sharif: শাহবাজ-মুনিরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প

 

আরও পড়ুন: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির আহ্বান চিনের

চিনা রাষ্ট্রদূত ঝি ফেং আরও বলেন, চিন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি খাত পরস্পরের পরিপূরক। আমেরিকার রয়েছে প্রচুর জমি ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, আর চিনের রয়েছে বিশাল বাজার। এই সহযোগিতা ভেঙে গেলে উভয় দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিন ও আমেরিকার এই বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব শুধু দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এর ঢেউ ছড়িয়ে পড়বে বিশ্ব-বাজারে।

আরও পড়ুন: ভারত থেকে আমেরিকার আয় কত? ট্রাম্পের দাবি ভুয়ো, জানাচ্ছে রিপোর্ট

 

ইতিমধ্যেই ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা চিনের বিকল্প কৃষি সরবরাহকারী হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে। ফলে বিশ্বব্যাপী কৃষিপণ্যের দামে পরিবর্তন আসতে পারে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই পরিস্থিতি নতুন সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ দুটোই তৈরি করতে পারে। যেমন, কৃষিপণ্যের দাম বাড়লে স্থানীয় বাজারে প্রভাব পড়বে। আবার অন্যদিকে, কিছু ক্ষেত্রে নতুন রফতানি বাজার তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে এই টানাপোড়েন নিরসনে উভয় দেশেরই উচিত কৃষিকে রাজনৈতিক বিবাদের বাইরে রাখা এবং গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজা।