হঠাৎই ছবির নামবদল বিবেক অগ্নিহোত্রীর, ২৬-এর ভোটের আগেই মুক্তি ‘বেঙ্গল ফাইলস’-এর
- আপডেট : ১০ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 90
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ কাশ্মীর ঘুরে পশ্চিমবঙ্গের উপর নজর পড়েছিল আগেই। এবার নিজের পরবর্তী ছবির নামও পাল্টে দিলেন পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। তাঁর পরবর্তী ছবির নাম এতদিন ‘দ্য দিল্লি ফাইলস’ ছিল। কিন্তু ছবির নাম পাল্টে ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস: রাইট টু লাইফ’ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন বিবেক। তাঁর দাবি, ছবির নাম পশ্চিমবঙ্গের নামানুসারে হোক বলে মানুষের তরফে দাবি তোলা হচ্ছিল। মানুষের সেই দাবিই মেনে নিলেন তিনি। এতদিন ছবিটির নাম ছিল ‘দ্য দিল্লি ফাইলস : দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’ (দ্য বেঙ্গল ফাইলস)
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবির নয়া নামকরণের ঘোষণা করেন বিবেক। তিনি লেখেন, ‘বড় ঘোষণা: দ্য দিল্লি ফাইলস এখন দ্য বেঙ্গল ফাইলস ১২ জুন বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ছবির টিজার আসছে। ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর’। ছবির টিজার মুক্তির আগে গত কয়েক দিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে পোস্ট করে চলেছেন বিবেক।
একটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ওদের টাকা ছিল। ওদের কাপড় ছিল। ওদের বাড়ি ছিল। তার পরও হিন্দুদের পিতৃপুরুষের ভিটে ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। কেন? আমরা কি এর উত্তর জানিনা? সময় থাকতে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন। অপেক্ষা করুন বাংলা নিয়ে আমাদের পরবর্তী ছবির জন্য’।
সম্প্রতি ওয়াকফ আইন বিরোধী বিক্ষোভে যখন তেতে ওঠে মুর্শিদাবাদ, সেই সময়ও মুখ খুলেছিলেন বিবেক। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘বাংলা কি নতুন কাশ্মীর? মুর্শিদাবাদে যখন ‘দ্য দিল্লি ফাইলস’-এর গল্পের প্রেক্ষাপট গড়ে তুলি, তখনই সেখানকার জনবিন্যাসে পরিবর্তন অনুভব করতে পারি। বুঝতে পেরেছিলাম, ওই পরিবর্তন বিরাট হিংসা ডেকে আনবে কোনও দিন। বুঝতে পারিনি এত তাড়াতাড়ি হবে, ছবিতে ঠিক যেমন ভাবে দেখা হয়েছে? ভবিষ্যদ্বাণী’?
বিবেক সেই সময়ই জানিয়েছিলেন, তাঁর ছবি ‘দ্য দিল্লি ফাইলস’-এর গল্প মুর্শিদাবাদ নির্ভর। মুর্শিদাবাদের বিপদ বোঝাতে গিয়ে লিখেছিলেন, ‘জনবিন্যাসের ভারসাম্যহীনতাই আসল বিপদ’। বিবেকের কথায়, ‘বাংলাকে নয়ের দশকের কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করলাম কিছু কারণে, ১) সীমান্ত এলাকায় জনবিন্যাসের পরিবর্তন, ২) লক্ষ্যনির্ভর রাজনৈতিক এবং সাম্প্রদায়িক হিংসা, ৩) মত প্রকাশের স্বাধীনতা, অভিবাসন এবং নিরাপত্তা জনিত উদ্বেগ, ৪) ছোটখাটো ঘটনা বিরাট অশান্তিতে পরিণত হওয়ার ইতিহাস, ৫) কাশ্মীরের মতো বাংলার কিছু জেলা, মুর্শিদাবাদ বা উত্তর ২৪ পরগনায় নজরদারিহীন অভিবাসন, জনবিন্যাসের পরিবর্তন, রাজনৈতিক মেরুকরণ, চরমপন্থা, পরিচয়ের রাজনীতি। বাংলা এখনও কাশ্মীর হয়নি, কিন্তু আমার আশঙ্কা, গুরুত্ব না দিলে একই পরিস্থিতি তৈরি হবে: গণপ্রস্থান, দমন, দীর্ঘমেয়াদি অশান্তি’।
এর আগে, ‘তাসখন্দ ফাইলস’, ‘কাশ্মীর ফাইলস’-এর মতো ছবি তৈরি করেছেন বিবেক। ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস: রাইট টু লাইফ’ ছবিটি নোয়াখালি দাঙ্গা নিয়ে তৈরি। ওই ঘটনাকে ‘হিন্দু গণহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন বিবেক। এই ছবিতে মিঠুন চক্রবর্তী, অনুপম খের, দর্শন কুমার, পল্লবী জোশী গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন।
এমনিতেই বিবেকের ছবি ঘিরে বরাবর বিতর্ক। তিনি বিশেষ একটি রাজনৈতিক শিবিরের অংশ এবং তাঁর ছবি তাঁদের মেরুকরণ ও বিভাজনের রাজনীতিকেই ফুটিয়ে তোলে বলে অভিযোগ রয়েছে। ছবি তৈরির নামে ইতিহাস বিকৃতি, মিথ্যাচারের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আর জি কর কাণ্ডের পর যখন উত্তাল গোটা দেশ, সেই সময় কলকাতায় বিজেপি-র মিছিলে, শুভেন্দু অধিকারীর পাশেও দেখা যায় বিবেককে।