০৬ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ওয়েটিং লিস্ট গঙ্গার মত পবিত্র  নয়’, নিয়োগ মামলায় মন্তব্য  বিচারপতি  বসুর 

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১ মার্চ ২০২৩, বুধবার
  • / 20

পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলে।

এদিন গ্রুপ-ডি নিয়োগ সংক্রান্ত ইস্যুতে বিচারপতি জানান , ওয়েটিং লিস্ট কিন্তু গঙ্গার মতো স্বচ্ছ নয়’। এই মন্তব্যের পাশাপাশি স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সতর্ক থাকার পরামর্শও  দিয়েছেন বিচারপতি।

আরও পড়ুন: একাদশ দ্বাদশ শ্রেণিতে নিয়োগ মামলায় উত্তরপত্র প্রকাশের নির্দেশ হাইকোর্টের

বিচারপতি জানান , -‘ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে’। সম্প্রতি  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ১ হাজার ৯১১ জন কর্মরত গ্রুপ-ডি কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে।

আরও পড়ুন: নিয়োগ মামলায় তদন্তে গতি আনতে নিজেই তদন্ত চালাতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়?

এতজনের শূন্যপদে ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। যদিও সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে এবং তা বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে বিচারাধীন।

আরও পড়ুন: নিয়োগ-কাণ্ডে গ্রেফতার কুন্তল ঘোষ, চক্রান্ত দেখছে পরিবার

শুধু তাই নয়, মামলাকারীরা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছেন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে  বিচারপতি বিশ্বজিৎ  বসুর ওয়েটিং লিস্ট নিয়ে এমন মন্তব্য যথেষ্ট তাত্‍পর্যপূর্ণ বলেই অনুমান করছে আইনজীবীদের একাংশ। গত  সোমবারই ‘নিয়ম বহির্ভূত ভাবে’ এক শিক্ষিকার চাকরি পাওয়া নিয়ে শুনানির সময় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করেছিলেন বিচারপতি বসু। চাকরি কারও ‘পৈতৃক সম্পত্তি’ নয়, এমনই কড়া মন্তব্য ছিল তাঁর।

ইতিমধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে কমিশন। ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার সেই তালিকা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করলেন বিচারপতি।

মঙ্গলবার গ্রুপ ডি বিষয়ক এক মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি বসুর এজলাসে। সেখানেই কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয় যে, শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। যা শুনে বিচারপতি বসু বলেন, ‘গ্রুপ ডি-র ওয়েটিং লিস্ট গঙ্গাজলের মতো পবিত্র, নিষ্কলুষ নয়। এটা মনে রাখতে হবে।’

সম্প্রতি অতীতে যেভাবে ওএমআর শিট বিকৃতি, ভুয়ো নিয়োগ ইত্যাদি দুর্নীতির খবর সামনে এসেছে সেখান থেকেই বিচারপতি বসু এই মন্তব্য করেছেন। যা খুবই তাত্‍পর্যপূর্ণ বলেও মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ। কারণ ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রেও যে কোনও দুর্নীতি হয়নি তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তাই কমিশনকে নিয়োগের বিষয়ে আরও সজাগ থাকার পরামর্শ দিলেন বিচারপতি বসু।

উল্লেখ্য, স্কুল সার্ভিস  কমিশনও বিষয়টি মাথায় রেখেই যে ওয়েটিং লিস্ট প্রকাশ ও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে তা তাদের বিজ্ঞপ্তি থেকেই স্পষ্ট।

হাইকোর্টের নির্দেশ পরই ১২ তারিখ কমিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগের জন্য গ্রুপ ডি-র ওয়েটিং লিস্টে থাকা ১৪৪৪ জন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করেছিল। তবে কমিশন বিজ্ঞপ্তিতে এও বলেছিল যে, এই তালিকা চূড়ান্ত নয়, প্রয়োজনে সংশোধন হবে।

এই ওয়েটিং লিস্ট থেকেই ৪০ জনকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে কমিশন। আগামী ২ মার্চ সেই কাউন্সেলিং হবে। সেই বিজ্ঞপ্তিতেও কমিশন সতর্ক করেছে যে, যদি কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে ওএমআর শিট কারচুপির অভিযোগ ওঠে তবে অবিলম্বে সেই প্রার্থীর সুপারিশপত্র বাতিল করে দেওয়া হবে।এদিকে, হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে ১৯১১ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গেছেন চাকরিহারারা। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে বিষয়টি মামলাধীন। যদিও এই চাকরি বাতিল করা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও গেছেন চাকরিহীনরা।আগামী ৩ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি রয়েছে এই মামলার।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘ওয়েটিং লিস্ট গঙ্গার মত পবিত্র  নয়’, নিয়োগ মামলায় মন্তব্য  বিচারপতি  বসুর 

আপডেট : ১ মার্চ ২০২৩, বুধবার

পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলে।

এদিন গ্রুপ-ডি নিয়োগ সংক্রান্ত ইস্যুতে বিচারপতি জানান , ওয়েটিং লিস্ট কিন্তু গঙ্গার মতো স্বচ্ছ নয়’। এই মন্তব্যের পাশাপাশি স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সতর্ক থাকার পরামর্শও  দিয়েছেন বিচারপতি।

আরও পড়ুন: একাদশ দ্বাদশ শ্রেণিতে নিয়োগ মামলায় উত্তরপত্র প্রকাশের নির্দেশ হাইকোর্টের

বিচারপতি জানান , -‘ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে’। সম্প্রতি  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ১ হাজার ৯১১ জন কর্মরত গ্রুপ-ডি কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে।

আরও পড়ুন: নিয়োগ মামলায় তদন্তে গতি আনতে নিজেই তদন্ত চালাতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়?

এতজনের শূন্যপদে ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। যদিও সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে এবং তা বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে বিচারাধীন।

আরও পড়ুন: নিয়োগ-কাণ্ডে গ্রেফতার কুন্তল ঘোষ, চক্রান্ত দেখছে পরিবার

শুধু তাই নয়, মামলাকারীরা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছেন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে  বিচারপতি বিশ্বজিৎ  বসুর ওয়েটিং লিস্ট নিয়ে এমন মন্তব্য যথেষ্ট তাত্‍পর্যপূর্ণ বলেই অনুমান করছে আইনজীবীদের একাংশ। গত  সোমবারই ‘নিয়ম বহির্ভূত ভাবে’ এক শিক্ষিকার চাকরি পাওয়া নিয়ে শুনানির সময় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করেছিলেন বিচারপতি বসু। চাকরি কারও ‘পৈতৃক সম্পত্তি’ নয়, এমনই কড়া মন্তব্য ছিল তাঁর।

ইতিমধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে কমিশন। ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার সেই তালিকা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করলেন বিচারপতি।

মঙ্গলবার গ্রুপ ডি বিষয়ক এক মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি বসুর এজলাসে। সেখানেই কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয় যে, শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। যা শুনে বিচারপতি বসু বলেন, ‘গ্রুপ ডি-র ওয়েটিং লিস্ট গঙ্গাজলের মতো পবিত্র, নিষ্কলুষ নয়। এটা মনে রাখতে হবে।’

সম্প্রতি অতীতে যেভাবে ওএমআর শিট বিকৃতি, ভুয়ো নিয়োগ ইত্যাদি দুর্নীতির খবর সামনে এসেছে সেখান থেকেই বিচারপতি বসু এই মন্তব্য করেছেন। যা খুবই তাত্‍পর্যপূর্ণ বলেও মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ। কারণ ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রেও যে কোনও দুর্নীতি হয়নি তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তাই কমিশনকে নিয়োগের বিষয়ে আরও সজাগ থাকার পরামর্শ দিলেন বিচারপতি বসু।

উল্লেখ্য, স্কুল সার্ভিস  কমিশনও বিষয়টি মাথায় রেখেই যে ওয়েটিং লিস্ট প্রকাশ ও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে তা তাদের বিজ্ঞপ্তি থেকেই স্পষ্ট।

হাইকোর্টের নির্দেশ পরই ১২ তারিখ কমিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগের জন্য গ্রুপ ডি-র ওয়েটিং লিস্টে থাকা ১৪৪৪ জন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করেছিল। তবে কমিশন বিজ্ঞপ্তিতে এও বলেছিল যে, এই তালিকা চূড়ান্ত নয়, প্রয়োজনে সংশোধন হবে।

এই ওয়েটিং লিস্ট থেকেই ৪০ জনকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে কমিশন। আগামী ২ মার্চ সেই কাউন্সেলিং হবে। সেই বিজ্ঞপ্তিতেও কমিশন সতর্ক করেছে যে, যদি কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে ওএমআর শিট কারচুপির অভিযোগ ওঠে তবে অবিলম্বে সেই প্রার্থীর সুপারিশপত্র বাতিল করে দেওয়া হবে।এদিকে, হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে ১৯১১ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গেছেন চাকরিহারারা। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে বিষয়টি মামলাধীন। যদিও এই চাকরি বাতিল করা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও গেছেন চাকরিহীনরা।আগামী ৩ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি রয়েছে এই মামলার।