২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ইরান কি আরব দেশগুলোর মার্কিন ঘাঁটিগুলিতে আঘাত হানবে?

ইরানে পাল্টা হামলার ভয়ে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে হাই এলার্ট

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 8

ওয়াশিংটন: ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় বড় ধরনের হামলা চালানোর পর নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসিতে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। মার্কিন বাহিনীর এই অভিযানে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইস্পাহান এলাকার পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে বিস্ফোরক হামলা চালানো হয়। এই হামলায় অংশ নেয় অত্যাধুনিক বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান ও সাবমেরিন থেকে নিক্ষিপ্ত টমাহক মিসাইল। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর, নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে, বিশেষ করে কূটনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়।

নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, তারা ইরানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং শহরজুড়ে কূটনৈতিক ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে। ফেডারেল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, রাজধানী শহর জুড়ে নিরাপত্তা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। তারা বলেছে, বর্তমান পর্যন্ত শহরের প্রতি সরাসরি কোনও হুমকির খবর না থাকলেও, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে পুলিশি উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। প্রাক্তন ফক্স নিউজ সাংবাদিক ও নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের পরিদর্শক পল মাউরো জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে যেসব এলাকায় ইসরাইলি সংযোগ রয়েছে, সেসব স্থানে টহল ও নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। শহরের শিয়া মসজিদগুলোকেও নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে, কারণ ইরান একটি শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। তিনি আরও জানান, অনলাইন চ্যাট ও যোগাযোগের মাধ্যমগুলিতেও নজরদারি চালানো হচ্ছে যাতে কোনও পরিকল্পনা আগে থেকে চিহ্নিত করা যায়।

আরও পড়ুন: সলমন রুশদির হামলাকারী দোষী সাব্যস্ত, ন্যূনতম ৩০ বছর কারাদণ্ডের সম্ভাবনা

ইরানে মার্কিন হামলার পর এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন;ইরানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া কী হতে চলেছে? কাতারের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার বিভাগের অধ্যাপক মেহরান কামরাভা জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ৪০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে এবং অসংখ্য সামরিক ঘাঁটি ছড়িয়ে রয়েছে অঞ্চলজুড়ে। তিনি বলেন, ক্ষ্মআমি একবার এক ইরানি সামরিক কর্মকর্তাকে বলতে শুনেছি;এই ৪০ হাজার সেনা মানে আমাদের ৪০ হাজারটি লক্ষ্যবস্তু। তাঁর মতে, ইরান এখন এমন এক পরিস্থিতিতে রয়েছে, যেখানে রাজনৈতিকভাবে চুপ করে বসে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ২০২০ সালে কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর তারা যেভাবে ‘পরিমিত’ প্রতিশোধ নিয়েছিল, এবারও তারা সেই পথে হাঁটবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। কামরাভা আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এখনো অনেক কিছু দেখার বাকি। তবে ইরানিদের প্রতিশোধ নিতে হবে। রাজনৈতিকভাবে, তারা কেবল চুপ করে বসে থাকতে পারে না এবং ট্রাম্প যেভাবে চান সেভাবে এটি চলতে দিতে পারে না।’

আরও পড়ুন: ২০২২ সালে মঞ্চে ছুরিকাঘাত, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন রুশদি

আরও পড়ুন: ওজন-উচ্চতা নিয়ে বৈষম্য রুখতে আইন নিউ ইয়র্কে

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইরান কি আরব দেশগুলোর মার্কিন ঘাঁটিগুলিতে আঘাত হানবে?

ইরানে পাল্টা হামলার ভয়ে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে হাই এলার্ট

আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, রবিবার

ওয়াশিংটন: ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় বড় ধরনের হামলা চালানোর পর নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসিতে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। মার্কিন বাহিনীর এই অভিযানে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইস্পাহান এলাকার পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে বিস্ফোরক হামলা চালানো হয়। এই হামলায় অংশ নেয় অত্যাধুনিক বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান ও সাবমেরিন থেকে নিক্ষিপ্ত টমাহক মিসাইল। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর, নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে, বিশেষ করে কূটনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়।

নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, তারা ইরানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং শহরজুড়ে কূটনৈতিক ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে। ফেডারেল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, রাজধানী শহর জুড়ে নিরাপত্তা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। তারা বলেছে, বর্তমান পর্যন্ত শহরের প্রতি সরাসরি কোনও হুমকির খবর না থাকলেও, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে পুলিশি উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। প্রাক্তন ফক্স নিউজ সাংবাদিক ও নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের পরিদর্শক পল মাউরো জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে যেসব এলাকায় ইসরাইলি সংযোগ রয়েছে, সেসব স্থানে টহল ও নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। শহরের শিয়া মসজিদগুলোকেও নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে, কারণ ইরান একটি শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। তিনি আরও জানান, অনলাইন চ্যাট ও যোগাযোগের মাধ্যমগুলিতেও নজরদারি চালানো হচ্ছে যাতে কোনও পরিকল্পনা আগে থেকে চিহ্নিত করা যায়।

আরও পড়ুন: সলমন রুশদির হামলাকারী দোষী সাব্যস্ত, ন্যূনতম ৩০ বছর কারাদণ্ডের সম্ভাবনা

ইরানে মার্কিন হামলার পর এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন;ইরানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া কী হতে চলেছে? কাতারের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার বিভাগের অধ্যাপক মেহরান কামরাভা জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ৪০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে এবং অসংখ্য সামরিক ঘাঁটি ছড়িয়ে রয়েছে অঞ্চলজুড়ে। তিনি বলেন, ক্ষ্মআমি একবার এক ইরানি সামরিক কর্মকর্তাকে বলতে শুনেছি;এই ৪০ হাজার সেনা মানে আমাদের ৪০ হাজারটি লক্ষ্যবস্তু। তাঁর মতে, ইরান এখন এমন এক পরিস্থিতিতে রয়েছে, যেখানে রাজনৈতিকভাবে চুপ করে বসে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ২০২০ সালে কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর তারা যেভাবে ‘পরিমিত’ প্রতিশোধ নিয়েছিল, এবারও তারা সেই পথে হাঁটবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। কামরাভা আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এখনো অনেক কিছু দেখার বাকি। তবে ইরানিদের প্রতিশোধ নিতে হবে। রাজনৈতিকভাবে, তারা কেবল চুপ করে বসে থাকতে পারে না এবং ট্রাম্প যেভাবে চান সেভাবে এটি চলতে দিতে পারে না।’

আরও পড়ুন: ২০২২ সালে মঞ্চে ছুরিকাঘাত, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন রুশদি

আরও পড়ুন: ওজন-উচ্চতা নিয়ে বৈষম্য রুখতে আইন নিউ ইয়র্কে