সুন্দরবনকে বাঁচাতে এবার এগিয়ে এলো সুন্দরবনের মহিলারা

- আপডেট : ৭ অগাস্ট ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 22
উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,সুন্দরবন : সুন্দরবনকে বাঁচাতে প্রয়োজন বেশি করে ম্যানগ্রোভ লাগানোর। আর এবার সুন্দরবনকে বাঁচাতে এগিয়ে এলো সুন্দরবনের মহিলারা। ‘বন বাঁচে নারীর হাতে’! সম্প্রতি ম্যানগ্রোভ রক্ষার নতুন কর্মসূচির সামনের সারিতে ‘অর্ধেক আকাশ’ সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প লাগোয়া গ্রাম পাখিরালয়ে অবস্থিত শের-এর ‘কমিউনিটি রিসোর্স অ্যান্ড নলেজ সেন্টার’ থেকে বাঘবনে ওই অভিনব উদ্যোগের সূচনা হয়েছে। স্লোগান উঠেছে ‘বন বাঁচে, নারীর হাতে’। যার মূল বার্তা, বন টিকে থাকবে নারীর যত্নে, নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণে।
বন্যপ্রাণপ্রেমী সংস্থা ‘সোসাইটি ফর হেরিটেজ অ্যান্ড ইকোলজিক্যালরিসার্চেস’ (শের)-এর হাত ধরে সুন্দরবনে শুরু হয়েছে এই অভিনব উদ্যোগ।সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প লাগোয়া গ্রাম পাখিরালয়ে অবস্থিত শের-এর ‘কমিউনিটি রিসোর্স অ্যান্ড নলেজ সেন্টার’ থেকে বাঘবনে ওই অভিনব উদ্যোগের সূচনা হয়েছে। তাদের বার্তা— একটি গাছ মানে অনেক জীবন, আর নারীর হাতে গাছ মানে বন ও বাঘের ভবিষ্যৎ নিরাপদ। বিশ্বের একমাত্র ম্যানগ্রোভ ব্যাঘ্রভূমি সুন্দরবন। সেখানকার জীব বৈচিত্র্যের অভিভাবক হল বাঘ।
বাঘ থাকলে বন থাকে, বন থাকলে নদী জল জীবিকা সবই টিকে থাকে। সেই লক্ষ্যে ‘বন বাঁচে নারীর হাতে’ শীর্ষক এই সচেতনতা উদ্যোগের অংশ হিসেবে, জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের ৫০ জন নারীকে দু’টি করে আমগাছের চারা তুলে দেওয়া হয়।নিছক উপহার হিসেবে নয়,বরং একটি প্রতিশ্রুতি হিসেবে। যে প্রতিশ্রুতি বন ও বাঘের ভবিষ্যতের সঙ্গে তাঁদের অলিখিত সম্পর্ককে আরও একটু মজবুত করতে চেষ্টা করবে। সংগঠনের কর্ণধার তথা রাজ্য বন্যপ্রাণ উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য জয়দীপ কুণ্ড বলেন, সুন্দরবনের মহিলারা শুধুই গৃহস্থালী করেন না।
তাঁরা মাটি, জল, গাছের সঙ্গে প্রতিদিন জীবনের কাজ করেন। কর্মসূচিতে তুলে ধরা হয়, বাদাবন সংলগ্ন গ্রামের মহিলারা কী ভাবে মহিলারা বাদাবন ও বাঘ সংরক্ষণে সাহায্য করতে পারেন। তাঁরা কী ভাবে বাড়ির আশপাশে যে গাছপালা ও পশুপাখি আছে তাদের ক্ষতি না করে এবং তাদের বাঁচিয়ে রাখার কথা বলে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আন্দোলনের অংশীদার হতে পারেন।
শেরের সদস্যা সুচন্দ্রা কুণ্ডু বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্কটকালে বনভূমি সংরক্ষণে পরাগবাহীদের গুরুত্ব অনেক। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার পরাগবাহীদের সংখ্যা হ্রাস করছে। পরাগবাহীদের অনুপস্থিতিতে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বাদাবনের পুরো খাদ্যশৃঙ্খল ও বাস্তুতন্ত্রের। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে কৃষিক্ষেত্রে।নষ্ট হতে পারে প্রাকৃতিক ভারসাম্যে। যা বাঘ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের অস্তিত্বের সঙ্গে ও ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।আর সুন্দরবনকে বাঁচাতে এ ধরণের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশ প্রেমীরা।