১২ জুলাই ২০২৫, শনিবার, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জার্মানিতে আস্থা ভোটে হারলেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার
  • / 51

(German Chancellor Olaf Scholz)

বার্লিন: জার্মানিতে আস্থা ভোটে হেরেছেন দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। স্থানীয় সময় সোমবার দেশটির পার্লামেন্টে এই ভোটাভুটি হয়। এর মধ্য দিয়ে ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশটিতে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি আগাম নির্বাচন আয়োজনের পথ সুগম হল। এই ভোটে পরাজিত হবেন বলে আগে থেকেই আশঙ্কা ছিল ৬৬ বছর বয়সী শলৎজের। ভোটের পর জার্মানির পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কভাল্টার স্টেইনমায়ার। আগাম নির্বাচন আয়োজনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দেশও দিতে পারবেন তিনি।

তিন বছরের বেশি সময় দেশ শাসনের পর গত ৬ নভেম্বর ভেঙে পড়ার উপক্রম হয় শলৎজের নেতৃত্বাধীন তিন দলের জোট সরকার। সে সময় তিন দলের সভার পর জোটভুক্ত উদারপন্থী ফ্রি ডেমোক্র্যাটস দলের সভাপতি ও অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারকে সরকার থেকে বহিষ্কার করেন তিনি। এর এক দিন আগে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পান ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমানে রাজনীতিসহ নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে জার্মানি। জ্বালানির উচ্চ মূল্য দেশটির অর্থনীতিতে বড় আঘাত হেনেছে। চীনের সঙ্গেও তীব্র অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে জার্মানির। এরই মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে বার্লিন। এ ছাড়া ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফেরার মধ্য দিয়ে সামরিক জোট ন্যাটোর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Read More: ইসরাইলে মিসাইল হামলা আনসারুল্লাহর

জার্মানির ওপর এই হুমকিগুলো নিয়েই সোমবারের আস্থা ভোটের আগে পার্লামেন্টে শলৎজ, কট্টরপন্থী বিরোধী দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) নেতা ফ্রেডরিখ মের্জ ও অন্যান্য দলের নেতাদের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়। ভোটে শলৎজের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ২০৭ জন আইনপ্রণেতা। তাঁর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৯৪ জন। আর ভোটদানে বিরত ছিলেন ১১৬ জন।

পার্লামেন্টের বিতর্কে জার্মানির সংকট সামলাতে নিরাপত্তা, ব্যবসা,বাণিজ্য ও সমাজের কল্যাণে বিপুল অর্থ ব্যয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন শলৎজ। এ সময় মের্জ প্রশ্ন করেন, এই পদক্ষেপগুলো কেন আগে নেওয়া হয়নি? জবাবে শলৎজ বলেন, তাঁর সরকারকে সামরিক ব্যয় বাড়াতে হয়েছিল। কারণ, আগের সিডিইউ সরকার সামরিক বাহিনীকে শোচনীয় অবস্থায় রেখে গিয়েছিল। ওলাফ শলৎজ বলেন, জার্মানিতে শক্তিশালী ও পরিকল্পিতভাবে বিনিয়োগ করার সময় এসেছে। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার তৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক করে তিনি বলেন, পারমাণবিক সক্ষমতা আছে এমন একটি দেশ বিপুল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইউরোপে যুদ্ধ করছে। ওই দেশটিতে জার্মানি থেকে উড়োজাহাজে করে যেতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে।

Tag :

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জার্মানিতে আস্থা ভোটে হারলেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ

আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার

বার্লিন: জার্মানিতে আস্থা ভোটে হেরেছেন দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। স্থানীয় সময় সোমবার দেশটির পার্লামেন্টে এই ভোটাভুটি হয়। এর মধ্য দিয়ে ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশটিতে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি আগাম নির্বাচন আয়োজনের পথ সুগম হল। এই ভোটে পরাজিত হবেন বলে আগে থেকেই আশঙ্কা ছিল ৬৬ বছর বয়সী শলৎজের। ভোটের পর জার্মানির পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কভাল্টার স্টেইনমায়ার। আগাম নির্বাচন আয়োজনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দেশও দিতে পারবেন তিনি।

তিন বছরের বেশি সময় দেশ শাসনের পর গত ৬ নভেম্বর ভেঙে পড়ার উপক্রম হয় শলৎজের নেতৃত্বাধীন তিন দলের জোট সরকার। সে সময় তিন দলের সভার পর জোটভুক্ত উদারপন্থী ফ্রি ডেমোক্র্যাটস দলের সভাপতি ও অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারকে সরকার থেকে বহিষ্কার করেন তিনি। এর এক দিন আগে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পান ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমানে রাজনীতিসহ নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে জার্মানি। জ্বালানির উচ্চ মূল্য দেশটির অর্থনীতিতে বড় আঘাত হেনেছে। চীনের সঙ্গেও তীব্র অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে জার্মানির। এরই মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে বার্লিন। এ ছাড়া ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফেরার মধ্য দিয়ে সামরিক জোট ন্যাটোর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Read More: ইসরাইলে মিসাইল হামলা আনসারুল্লাহর

জার্মানির ওপর এই হুমকিগুলো নিয়েই সোমবারের আস্থা ভোটের আগে পার্লামেন্টে শলৎজ, কট্টরপন্থী বিরোধী দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) নেতা ফ্রেডরিখ মের্জ ও অন্যান্য দলের নেতাদের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়। ভোটে শলৎজের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ২০৭ জন আইনপ্রণেতা। তাঁর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৯৪ জন। আর ভোটদানে বিরত ছিলেন ১১৬ জন।

পার্লামেন্টের বিতর্কে জার্মানির সংকট সামলাতে নিরাপত্তা, ব্যবসা,বাণিজ্য ও সমাজের কল্যাণে বিপুল অর্থ ব্যয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন শলৎজ। এ সময় মের্জ প্রশ্ন করেন, এই পদক্ষেপগুলো কেন আগে নেওয়া হয়নি? জবাবে শলৎজ বলেন, তাঁর সরকারকে সামরিক ব্যয় বাড়াতে হয়েছিল। কারণ, আগের সিডিইউ সরকার সামরিক বাহিনীকে শোচনীয় অবস্থায় রেখে গিয়েছিল। ওলাফ শলৎজ বলেন, জার্মানিতে শক্তিশালী ও পরিকল্পিতভাবে বিনিয়োগ করার সময় এসেছে। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার তৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক করে তিনি বলেন, পারমাণবিক সক্ষমতা আছে এমন একটি দেশ বিপুল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইউরোপে যুদ্ধ করছে। ওই দেশটিতে জার্মানি থেকে উড়োজাহাজে করে যেতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে।