২৬ কে বদলে ২৬, মুসলিম ব্যক্তিকে এলোপাথাড়ি কোপাল যুবক

- আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 201
লখনই: বাড়ির বাইরে রকে বসেছিলেন বাবা-ছেলে। আচমকাই কুড়ুল নিয়ে মুসলিম ব্যক্তির ওপর চড়াও হন স্থানীয় এক যুবক। এলোপাথাড়ি কুড়ুল দিয়ে সরফরাজ নামের ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে কোপাতে থাকে ওই যুবক। ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের শামলি জেলার ঝিনঝানা গ্রামের।
এক সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, সরফরাজ ও তার শিশু বাড়ির বাইরে একটি রকে বসেছিলেন। হঠাৎ পিছন থেকে কুড়ুল দিয়ে তার ওপর আক্রমণ করে স্থানীয় এক যুবক। প্রথম কুড়ুলের আঘাতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সরফরাজ। তারপর দফায় দফায় তাকে এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। নিজের প্রান বাঁচানোর একাধিকবার চেষ্টা করেন তিনি। যখনই মুসলিম ব্যক্তি উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন তখনই তার ওপর কুড়ুল দিয়ে আঘাত করা হয়। সূত্রের খবর, অভিযুক্ত যুবকের নাম গোবিন্দ। অভিযুক্তকে পাকড়াও করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
এই নারকীয় ঘটনা নিয়ে স্থানীয়দের দাবি, গোবিন্দ কুড়ুল দিয়ে কোপানোর সময় বার বার মুখে বলছিল ‘২৬ কে বদলে ২৬’ (২৬ জনের বদলে ২৬ জনকে খুন করব)। জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা ২৬ জন নিহত হন। সেই ঘটনার জেরেই মুলসিম হওয়ায় সরফরাজকে খুনের চেষ্টা করা হয়। তাকে কোপানোর পর কুড়ুল নিয়ে গোটা এলাকা ঘুরে বেড়ায় গোবিন্দ। এক বাসিন্দার কথায়, “পহেলগাঁওকাণ্ড নিয়ে প্রতিশোধ নিতেই নৃশংস হামলা করে অভিযুক্ত। চিৎকার করে সে বলছিল, এভাবেই সবাইকে খুন করা হবে। মুসলিম ব্যক্তিকে খুনের চেষ্টা করে সে নিজেকে গর্বিত মনে করেছিল। ওই কুড়ুল নিয়ে গোটা এলাকা ঘুরে ঘুরে মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরির চেষ্টা করে গোবিন্দ।”
এদিকে আহতের পরিবার জানিয়েছে, সরফরাজের মুখ ও ঘাড় লক্ষ্য করে আঘাত করা হয়। সে বাঁচবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। কারণ তার শরীরের একাধিক জায়গা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা বলেছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতের এক আত্মীয় বলেন, সরফরাজকে কুড়ুল দিয়ে কোপানোর সময় গোবিন্দ চিৎকার করে করে বলছিল, ‘পারলে নিজেকে বাঁচা, আমি এভাবেই তোদের খুন করব’। সরফরাজ নিজের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করলে অভিযুক্ত লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর থেকে দেশজুড়ে মুসলিমদের ওপর লাগামছাড়া আক্রমণ নেমে এসেছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মুসলিমদের উদ্দেশ্য করে ঘৃণা ভাষণ, নির্যাতন, হামলা ও আক্রমণ করা হচ্ছে। এমনকি মুসলিমদের চিকিৎসা না করা ও ধর্ষণের মত হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। উদ্বেগজনক ভাবে কাশ্মীরিদের টার্গেট করে হামলা চালানো হচ্ছে।