বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর নেই। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা নাগাদ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৭টায় গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে জানিয়েছেন, “আম্মা আর নেই।” বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানানো হয়েছে, তিনি ফজরের ঠিক পরে ইন্তেকাল করেছেন। দলীয় পোস্টে তার রূহের মাগফিরাত কামনা এবং সকলের নিকট দোয়া প্রার্থনা করা হয়েছে।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনিসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। শরীরে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৩ নভেম্বর তাকে দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিলো এবং তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি এবং জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি।
বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশ বিএনপির চেয়ারপারসন এবং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯১ সাল থেকে তিনবার তিনি দেশের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং মুসলিম বিশ্বের অন্যতম নির্বাচিত নারী সরকারপ্রধান ছিলেন।
জিয়ার জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুর জেলায়; বাবা ছিলেন ইস্কান্দার মজুমদার ও মা তৈয়বা মজুমদার। তিনি দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছেন। ১৯৬০ সালে তিনি যুদ্ধবীর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বিয়ে করেন এবং তাঁর রাষ্ট্রীয় সফরে ফার্স্ট লেডি হিসেবে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন।
১৯৮১ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রপতি জিয়ার মৃত্যুতে ১৯৮২ সালে তিনি বিএনপিতে সাধারণ সদস্য হিসেবে যোগ দেন। তিনি পরে ভাইস চেয়ারম্যান ও ১৯৮৪ সালে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। দেশের রাজনীতিতে তিনি অনন্য রেকর্ড স্থাপন করেছেন—কখনো কোনো আসনে পরাজিত হননি। ১৯৯১–২০০১ সালের নির্বাচনে পাঁচটি পৃথক আসন এবং ২০০৮’র নির্বাচনে তিনটি আসনেই তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন।




























