০১ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে বল-বিতর্ক তুঙ্গে, আইসিসি-র হস্তক্ষেপ চাইল ভারত

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 62

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে বল পরিবর্তন নিয়ে ফের বিতর্ক! লর্ডসের পর ওভাল টেস্টের আগে ফের উঠে এল বল-বদলের নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন। লর্ডস টেস্টে বলের আকার দ্রুত বদলে যাওয়া এবং ভারতীয় দলকে অতি পুরনো বল দিয়ে খেলার অভিযোগ ঘিরে সরব ভারত। ম্যাচ রেফারির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। অভিযোগ, বল বাছাইয়ে ইংল্যান্ডকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, যা ক্রিকেটের ন্যায়বিচারবিরুদ্ধ।

 

লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে দ্বিতীয় নতুন বল মাত্র ১০ ওভারের মধ্যেই অকার্যকর হয়ে পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী, বল পরিবর্তনের সময় যত ওভার খেলা হয়েছে, তত ওভার পুরনো বলই দিতে হবে। কিন্তু ভারতের অভিযোগ, আম্পায়াররা জানিয়ে দেন যে তাঁদের কাছে ১০ ওভারের পুরনো বল নেই। পরিবর্তে ভারতীয় দলকে দেওয়া হয় ৩০-৩৫ ওভারের পুরনো বল—যা ছিল একেবারেই নরম, সুইং বা সিম কিছুই মিলছিল না।

আরও পড়ুন: ইরান থেকে পেট্রোলিয়াম পণ্য ক্রয়, ভারতের ৬টি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্প প্রশাসনের

 

আরও পড়ুন: প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আবদুল কালামের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা মমতার

ভারতের বোলাররা এই বল দিয়ে কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েন। ইংল্যান্ড অনায়াসে রান তুলে নেয় এবং ২২ রানে ম্যাচ জিতে নেয়। ভারতের বক্তব্য, স্কোরবোর্ড স্পষ্ট দেখিয়ে দেয় বল বদলের পর কীভাবে ম্যাচের গতিপথ পাল্টে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ভারতে খেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে ক্রীড়া দফতর, জানিয়ে দিল পাক সরকার

 

ভারত চায়, ভবিষ্যতে যদি উপযুক্ত পুরনো বল না মেলে, তবে যতই বলের গঠন বদলে যাক, আসল বল দিয়েই খেলার অনুমতি দেওয়া হোক। দলের এক সূত্র জানিয়েছে, “লর্ডসে আমাদের দেওয়া হয়েছিল প্রায় ৩৫ ওভারের পুরনো বল, অথচ বলা হয়েছিল সেটা ১০ ওভারের পুরনো। আইসিসি-র উচিত নিয়মে পরিবর্তন আনা এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা।”

 

টেস্ট শুরুর আগে দু’দলকে বল বাছতে দেওয়া হয়। সেই দায়িত্ব থাকে চতুর্থ আম্পায়ারের উপর, যিনি সাধারণত আয়োজক দেশের হন। ম্যাচ রেফারি সেই সময় উপস্থিত থাকেন না। ভারতের দাবি, এর সুযোগ নিচ্ছে ইংল্যান্ড। চতুর্থ আম্পায়ার এমন বলের বাক্স নিয়ে এসেছেন, যেখানে কেবল একটিই গাঢ় লাল বল ছিল—যা সাধারণত বেশি সুইং করে। বাকি বল ছিল হালকা লাল, কম সুইং করে। ভারত গাঢ় লাল বল চাইলে বলা হয়, তা ইংল্যান্ড আগেই বেছে নিয়েছে।

 

ভারতীয় দলের দাবি, বল বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় ম্যাচ রেফারির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হোক। তাদের প্রস্তাব, টেস্ট শুরুর আগে সাজঘরের বদলে ম্যাচ রেফারির ঘরেই বল বাছাইয়ের প্রক্রিয়া হোক। যাতে আয়োজক দেশের প্রভাব থেকে পুরো বিষয়টি মুক্ত থাকে।

 

একাধিক ম্যাচে বল বদল নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বিশেষত লর্ডস টেস্টে বলের মাপ দ্রুত বদলে যাওয়া এবং অতি পুরনো বল দিয়ে খেলানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভারত। ভারতের মতে, নিয়মের যথাযথ ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ না হলে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে। তাই তারা চায়, আইসিসি অবিলম্বে এই বিষয়ে নীতি স্পষ্ট করুক এবং নিয়মে বদল আনুক।

 

বল পরিবর্তনের এই বিতর্ক সিরিজ়ের ন্যায্যতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ভারতীয় দল মনে করছে, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতের গুরুত্বপূর্ণ সিরিজেও এর প্রভাব পড়বে। এখন দেখার, আইসিসি ভারতের এই অভিযোগে কী প্রতিক্রিয়া জানায়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে বল-বিতর্ক তুঙ্গে, আইসিসি-র হস্তক্ষেপ চাইল ভারত

আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে বল পরিবর্তন নিয়ে ফের বিতর্ক! লর্ডসের পর ওভাল টেস্টের আগে ফের উঠে এল বল-বদলের নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন। লর্ডস টেস্টে বলের আকার দ্রুত বদলে যাওয়া এবং ভারতীয় দলকে অতি পুরনো বল দিয়ে খেলার অভিযোগ ঘিরে সরব ভারত। ম্যাচ রেফারির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। অভিযোগ, বল বাছাইয়ে ইংল্যান্ডকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, যা ক্রিকেটের ন্যায়বিচারবিরুদ্ধ।

 

লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে দ্বিতীয় নতুন বল মাত্র ১০ ওভারের মধ্যেই অকার্যকর হয়ে পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী, বল পরিবর্তনের সময় যত ওভার খেলা হয়েছে, তত ওভার পুরনো বলই দিতে হবে। কিন্তু ভারতের অভিযোগ, আম্পায়াররা জানিয়ে দেন যে তাঁদের কাছে ১০ ওভারের পুরনো বল নেই। পরিবর্তে ভারতীয় দলকে দেওয়া হয় ৩০-৩৫ ওভারের পুরনো বল—যা ছিল একেবারেই নরম, সুইং বা সিম কিছুই মিলছিল না।

আরও পড়ুন: ইরান থেকে পেট্রোলিয়াম পণ্য ক্রয়, ভারতের ৬টি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্প প্রশাসনের

 

আরও পড়ুন: প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আবদুল কালামের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা মমতার

ভারতের বোলাররা এই বল দিয়ে কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েন। ইংল্যান্ড অনায়াসে রান তুলে নেয় এবং ২২ রানে ম্যাচ জিতে নেয়। ভারতের বক্তব্য, স্কোরবোর্ড স্পষ্ট দেখিয়ে দেয় বল বদলের পর কীভাবে ম্যাচের গতিপথ পাল্টে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ভারতে খেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে ক্রীড়া দফতর, জানিয়ে দিল পাক সরকার

 

ভারত চায়, ভবিষ্যতে যদি উপযুক্ত পুরনো বল না মেলে, তবে যতই বলের গঠন বদলে যাক, আসল বল দিয়েই খেলার অনুমতি দেওয়া হোক। দলের এক সূত্র জানিয়েছে, “লর্ডসে আমাদের দেওয়া হয়েছিল প্রায় ৩৫ ওভারের পুরনো বল, অথচ বলা হয়েছিল সেটা ১০ ওভারের পুরনো। আইসিসি-র উচিত নিয়মে পরিবর্তন আনা এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা।”

 

টেস্ট শুরুর আগে দু’দলকে বল বাছতে দেওয়া হয়। সেই দায়িত্ব থাকে চতুর্থ আম্পায়ারের উপর, যিনি সাধারণত আয়োজক দেশের হন। ম্যাচ রেফারি সেই সময় উপস্থিত থাকেন না। ভারতের দাবি, এর সুযোগ নিচ্ছে ইংল্যান্ড। চতুর্থ আম্পায়ার এমন বলের বাক্স নিয়ে এসেছেন, যেখানে কেবল একটিই গাঢ় লাল বল ছিল—যা সাধারণত বেশি সুইং করে। বাকি বল ছিল হালকা লাল, কম সুইং করে। ভারত গাঢ় লাল বল চাইলে বলা হয়, তা ইংল্যান্ড আগেই বেছে নিয়েছে।

 

ভারতীয় দলের দাবি, বল বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় ম্যাচ রেফারির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হোক। তাদের প্রস্তাব, টেস্ট শুরুর আগে সাজঘরের বদলে ম্যাচ রেফারির ঘরেই বল বাছাইয়ের প্রক্রিয়া হোক। যাতে আয়োজক দেশের প্রভাব থেকে পুরো বিষয়টি মুক্ত থাকে।

 

একাধিক ম্যাচে বল বদল নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বিশেষত লর্ডস টেস্টে বলের মাপ দ্রুত বদলে যাওয়া এবং অতি পুরনো বল দিয়ে খেলানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভারত। ভারতের মতে, নিয়মের যথাযথ ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ না হলে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে। তাই তারা চায়, আইসিসি অবিলম্বে এই বিষয়ে নীতি স্পষ্ট করুক এবং নিয়মে বদল আনুক।

 

বল পরিবর্তনের এই বিতর্ক সিরিজ়ের ন্যায্যতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ভারতীয় দল মনে করছে, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতের গুরুত্বপূর্ণ সিরিজেও এর প্রভাব পড়বে। এখন দেখার, আইসিসি ভারতের এই অভিযোগে কী প্রতিক্রিয়া জানায়।