২৬ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩৭০০ মুসলিম তরুণীকে কনস্টেবল পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২২, সোমবার
  • / 180

প্রতীকী ছবি

বিশেষ প্রতিবেদকঃ বামফ্রণ্ট আমলে নেতানেত্রীরা প্রায়ই একটি কথা বলতেন, মুসলিম মেয়েরা কী করে চাকরি পাবে? ওরা রক্ষণশীল, স্কুলে যায় না ইত্যাদি। কথাটা অবশ্য ডাহা মিথ্যা ছিল। বাম নেতানেত্রীদের অবশ্য দোষ নেই। বঞ্চনা ঢাকতে কিছু একটা তো বলতেই হয়। অবশ্য সাচার কমিটির রিপোর্ট সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে তাদের ৩৪ বছরের নীতিমালাকে ফাঁস করে দিয়েছিল।

 

আরও পড়ুন: I love Muhammad’ ব্যানারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা অসাংবিধানিক: জামায়াতে ইসলামি হিন্দ

বাংলার মুসলিম মেয়েরা এখন আরও এগিয়ে এসেছে। তারা এমফিল থেকে শুরু করে পিএইচডি সব জায়গাতেই হাজির। কিন্তু হলে কি হবে! এখনও মুসলিম মেয়েদের সম্পর্কে একটি প্রভাবশালী মহলের মন-মস্তিষ্কে অবজ্ঞা ও সেইসঙ্গে উপেক্ষা জাঁকিয়ে বসে আছে। এবার পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড শুধুমাত্র কনস্টেবলের পরীক্ষায় ৩ হাজার ৭০০ মুসলিম তরুণীকে পরীক্ষাই দিতে দেয়নি। আর কাউকে পরীক্ষায় বসতেই না দিলে সে চাকরি পাবে কি করে? ফলে বাংলার প্রায় তিন হাজার সাতশো মুসলিম তরুণীর পুলিশ কনস্টেবল হওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। এই বিরাট সংখ্যক মুসলিম তরুণীদেরকে পরীক্ষায় বসার অ্যাডমিট কার্ডই দেয়নি পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড। এই বোর্ডে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ডিজিপি শ্রী বীরেন্দ্র।

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা তকমা দিয়ে কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ

 

আরও পড়ুন: পতৌদির পক্ষে সুপ্রিম স্থগিতাদেশে, স্বস্তিতে ভোপালের মুসলিমরা

মুসলিম তরুণীরা কেন বঞ্চিত হল? তাদের বেশিরভাগই জানিয়েছে, পুলিশ কনস্টেবল পরীক্ষায় পাশ করার জন্য তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিল। বোর্ডের চেয়ারম্যান বীরেন্দ্র ও তাঁর টিম তাদের ঢালাওভাবে বঞ্চিত করার জন্য যে যুক্তিটি খুঁজে বের করেছিলেন তাহলে আবেদনপত্রে যে ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে তাদের মুসলিম ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ধর্মীয়বোধ থেকে এইসব প্রার্থীদের মাথা ওড়না বা শাড়ি দিয়ে ঢাকা ছিল। তবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির দাবি অনুযায়ী, এদের মুখমণ্ডল ছিল সম্পূর্ণ অনাবৃত। এই তরুণীদের যখন অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে না বলে একে একে বলে দেওয়া হয়, তারা জবাবে বলেন, আমাদের কপালের উপর থেকে সম্পূর্ণ মুখ তো উন্মুক্ত রয়েছে। শিখ তরুণদেরও পুলিশ ও সেনাবাহিনীতে মাথা ঢাকা থাকে। সংখ্যালঘু শিখদের ব্যাপারে তো মাননীয় বীরেন্দ্রবাবুরা আপত্তি তোলেন না! তাহলে মুসলিম তরুণীদের ক্ষেত্রে তাঁরা এত বিরূপ কেন? কেন তিন হাজার সাতশো গরিব ও নিম্নবিত্ত সংখ্যালঘু পরিবারের তরুণীদের পরীক্ষাতে বসতেই দেওয়া হল না?

৩৭০০ মুসলিম তরুণীকে কনস্টেবল পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি
প্রতীকী ছবি

পুলিশের কনস্টেবল পরীক্ষার্থী এইসব তরুণীদের যে অদম্য আগ্রহ ছিল, তারই জেরে তাদের অনেকেই কলকাতায় সুদূর জেলা থেকে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে হাজির হয়ে অনুনয়-বিনয় করেছে। ক্ষেত্র বিশেষে ক্ষোভও প্রকাশ করেছে। বলেছে, দয়া করে আমাদের পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করুন। কিন্তু তাদের কথায় কেউ কর্ণপাত করেনি। পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের কোনও কর্মকর্তা এই মুসলিম তরুণীদের সঙ্গে সামান্য দেখা করতেও রাজি হননি।

 

বঞ্চনার মুখে মুসলিম তরুণীরা বিভিন্ন স্থানে নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে অনেকের কাছে আবেদন-নিবেদন করেছে। মুসলিম বিভিন্ন সংস্থাও জমা দিয়েছে স্মারক লিপি। কিন্তু তাতেও কোনও ফল হয়নি। পুলিশ রুলস-এ কিন্তু কোথাও বলা নেই যে, মহিলা পুলিশ কনস্টেবল কিংবা অফিসাররা মুখমণ্ডল উন্মুক্ত রেখে মাথা আবৃত পারবে না। ডিউটি বা প্যারেডের সময় শুধু পশ্চিমবঙ্গ কেন সারা ভারতেই মহিলা পুলিশ কনস্টেবল ও অফিসাররা ক্যাপ বা হ্যাট পরে থাকেন। তখন কিন্তু বীরেন্দ্রবাবুদের বা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের অন্য হর্তাকর্তাদের বিন্দুমাত্র আপত্তি কিংবা অস্বস্তি হয় না!

 

শেষ পর্যন্ত কোনও উপায় না দেখে বঞ্চিত কয়েকজন পরীক্ষার্থী তরুণী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতিও মামলাটি গ্রহণ করেন। কিন্তু মামলাটির রায় হওয়া পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের রিক্রুটমেন্ট বোর্ড অপেক্ষা করার প্রয়োজন অনুভব করেনি।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড কনস্টেবল পরীক্ষায় সফল প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে ১১ মার্চ ২০২২। পাশ করেছে ১ লক্ষ ৭ হাজারেরও বেশি প্রার্থী। পরীক্ষা দিয়েছিল প্রায় ১০ লক্ষের কাছাকাছি তরুণ-তরুণী।

 

অর্থাৎ গড়ে কম-বেশি ১০ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। না, এদের মধ্যে শত শত মুসলিম তরুণীর নাম নেই। কারণ– তাদের পরীক্ষাতেই বসতে দেওয়া হয়নি।একজন উচ্চপদস্থ প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘ওড়না পরা এই মুসলিম তরুণীদের তো বলা যেত, তোমরা মাথায় ওড়না সরিয়ে ছবি তুলে নতুন করে আবেদনপত্র পুনরায় পাঠাও। সেই সুযোগটাও তো পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ওই তরুণীদের দিল না! সমস্যা থাকে, তার সমাধানও তো হয়। আসলে প্রয়োজন সদিচ্ছার।’

 

কর্নাটকে হিজাব বিতর্ক চলছে। সেখানে মুসলিম তরুণীদের ধর্মীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী হিজাব কিংবা মাথায় স্কার্ফ পরায় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল রাজ্য। কিন্তু এখানেও মাথাচাড়া দিচ্ছে সংখ্যালঘু মেয়েদের প্রতি কর্নাটকের মতো মনোভাবসম্পন্ন প্রভাবশালী এক মহলের। তারা পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম মেয়েদের নানা অজুহাতে পুলিশের সরকারি চাকরি থেকেই বঞ্চিত করার চেষ্টা করছেন। কর্নাটকের গেরুয়া বাহিনী এখনও মুসলিম মেয়েদের হিজাব খুলতে বাধ্য করতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড এক্ষেত্রে কিন্তু কর্নাটককেও হার মানিয়েছে।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৩৭০০ মুসলিম তরুণীকে কনস্টেবল পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি

আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২২, সোমবার

বিশেষ প্রতিবেদকঃ বামফ্রণ্ট আমলে নেতানেত্রীরা প্রায়ই একটি কথা বলতেন, মুসলিম মেয়েরা কী করে চাকরি পাবে? ওরা রক্ষণশীল, স্কুলে যায় না ইত্যাদি। কথাটা অবশ্য ডাহা মিথ্যা ছিল। বাম নেতানেত্রীদের অবশ্য দোষ নেই। বঞ্চনা ঢাকতে কিছু একটা তো বলতেই হয়। অবশ্য সাচার কমিটির রিপোর্ট সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে তাদের ৩৪ বছরের নীতিমালাকে ফাঁস করে দিয়েছিল।

 

আরও পড়ুন: I love Muhammad’ ব্যানারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা অসাংবিধানিক: জামায়াতে ইসলামি হিন্দ

বাংলার মুসলিম মেয়েরা এখন আরও এগিয়ে এসেছে। তারা এমফিল থেকে শুরু করে পিএইচডি সব জায়গাতেই হাজির। কিন্তু হলে কি হবে! এখনও মুসলিম মেয়েদের সম্পর্কে একটি প্রভাবশালী মহলের মন-মস্তিষ্কে অবজ্ঞা ও সেইসঙ্গে উপেক্ষা জাঁকিয়ে বসে আছে। এবার পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড শুধুমাত্র কনস্টেবলের পরীক্ষায় ৩ হাজার ৭০০ মুসলিম তরুণীকে পরীক্ষাই দিতে দেয়নি। আর কাউকে পরীক্ষায় বসতেই না দিলে সে চাকরি পাবে কি করে? ফলে বাংলার প্রায় তিন হাজার সাতশো মুসলিম তরুণীর পুলিশ কনস্টেবল হওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। এই বিরাট সংখ্যক মুসলিম তরুণীদেরকে পরীক্ষায় বসার অ্যাডমিট কার্ডই দেয়নি পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড। এই বোর্ডে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ডিজিপি শ্রী বীরেন্দ্র।

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা তকমা দিয়ে কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ

 

আরও পড়ুন: পতৌদির পক্ষে সুপ্রিম স্থগিতাদেশে, স্বস্তিতে ভোপালের মুসলিমরা

মুসলিম তরুণীরা কেন বঞ্চিত হল? তাদের বেশিরভাগই জানিয়েছে, পুলিশ কনস্টেবল পরীক্ষায় পাশ করার জন্য তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিল। বোর্ডের চেয়ারম্যান বীরেন্দ্র ও তাঁর টিম তাদের ঢালাওভাবে বঞ্চিত করার জন্য যে যুক্তিটি খুঁজে বের করেছিলেন তাহলে আবেদনপত্রে যে ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে তাদের মুসলিম ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ধর্মীয়বোধ থেকে এইসব প্রার্থীদের মাথা ওড়না বা শাড়ি দিয়ে ঢাকা ছিল। তবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির দাবি অনুযায়ী, এদের মুখমণ্ডল ছিল সম্পূর্ণ অনাবৃত। এই তরুণীদের যখন অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে না বলে একে একে বলে দেওয়া হয়, তারা জবাবে বলেন, আমাদের কপালের উপর থেকে সম্পূর্ণ মুখ তো উন্মুক্ত রয়েছে। শিখ তরুণদেরও পুলিশ ও সেনাবাহিনীতে মাথা ঢাকা থাকে। সংখ্যালঘু শিখদের ব্যাপারে তো মাননীয় বীরেন্দ্রবাবুরা আপত্তি তোলেন না! তাহলে মুসলিম তরুণীদের ক্ষেত্রে তাঁরা এত বিরূপ কেন? কেন তিন হাজার সাতশো গরিব ও নিম্নবিত্ত সংখ্যালঘু পরিবারের তরুণীদের পরীক্ষাতে বসতেই দেওয়া হল না?

৩৭০০ মুসলিম তরুণীকে কনস্টেবল পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি
প্রতীকী ছবি

পুলিশের কনস্টেবল পরীক্ষার্থী এইসব তরুণীদের যে অদম্য আগ্রহ ছিল, তারই জেরে তাদের অনেকেই কলকাতায় সুদূর জেলা থেকে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে হাজির হয়ে অনুনয়-বিনয় করেছে। ক্ষেত্র বিশেষে ক্ষোভও প্রকাশ করেছে। বলেছে, দয়া করে আমাদের পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করুন। কিন্তু তাদের কথায় কেউ কর্ণপাত করেনি। পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের কোনও কর্মকর্তা এই মুসলিম তরুণীদের সঙ্গে সামান্য দেখা করতেও রাজি হননি।

 

বঞ্চনার মুখে মুসলিম তরুণীরা বিভিন্ন স্থানে নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে অনেকের কাছে আবেদন-নিবেদন করেছে। মুসলিম বিভিন্ন সংস্থাও জমা দিয়েছে স্মারক লিপি। কিন্তু তাতেও কোনও ফল হয়নি। পুলিশ রুলস-এ কিন্তু কোথাও বলা নেই যে, মহিলা পুলিশ কনস্টেবল কিংবা অফিসাররা মুখমণ্ডল উন্মুক্ত রেখে মাথা আবৃত পারবে না। ডিউটি বা প্যারেডের সময় শুধু পশ্চিমবঙ্গ কেন সারা ভারতেই মহিলা পুলিশ কনস্টেবল ও অফিসাররা ক্যাপ বা হ্যাট পরে থাকেন। তখন কিন্তু বীরেন্দ্রবাবুদের বা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের অন্য হর্তাকর্তাদের বিন্দুমাত্র আপত্তি কিংবা অস্বস্তি হয় না!

 

শেষ পর্যন্ত কোনও উপায় না দেখে বঞ্চিত কয়েকজন পরীক্ষার্থী তরুণী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতিও মামলাটি গ্রহণ করেন। কিন্তু মামলাটির রায় হওয়া পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের রিক্রুটমেন্ট বোর্ড অপেক্ষা করার প্রয়োজন অনুভব করেনি।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড কনস্টেবল পরীক্ষায় সফল প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে ১১ মার্চ ২০২২। পাশ করেছে ১ লক্ষ ৭ হাজারেরও বেশি প্রার্থী। পরীক্ষা দিয়েছিল প্রায় ১০ লক্ষের কাছাকাছি তরুণ-তরুণী।

 

অর্থাৎ গড়ে কম-বেশি ১০ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। না, এদের মধ্যে শত শত মুসলিম তরুণীর নাম নেই। কারণ– তাদের পরীক্ষাতেই বসতে দেওয়া হয়নি।একজন উচ্চপদস্থ প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘ওড়না পরা এই মুসলিম তরুণীদের তো বলা যেত, তোমরা মাথায় ওড়না সরিয়ে ছবি তুলে নতুন করে আবেদনপত্র পুনরায় পাঠাও। সেই সুযোগটাও তো পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ওই তরুণীদের দিল না! সমস্যা থাকে, তার সমাধানও তো হয়। আসলে প্রয়োজন সদিচ্ছার।’

 

কর্নাটকে হিজাব বিতর্ক চলছে। সেখানে মুসলিম তরুণীদের ধর্মীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী হিজাব কিংবা মাথায় স্কার্ফ পরায় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল রাজ্য। কিন্তু এখানেও মাথাচাড়া দিচ্ছে সংখ্যালঘু মেয়েদের প্রতি কর্নাটকের মতো মনোভাবসম্পন্ন প্রভাবশালী এক মহলের। তারা পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম মেয়েদের নানা অজুহাতে পুলিশের সরকারি চাকরি থেকেই বঞ্চিত করার চেষ্টা করছেন। কর্নাটকের গেরুয়া বাহিনী এখনও মুসলিম মেয়েদের হিজাব খুলতে বাধ্য করতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড এক্ষেত্রে কিন্তু কর্নাটককেও হার মানিয়েছে।