০২ ডিসেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কারাগারে কুরআন হিফজ করল ৭৭ ফিলিস্তিনি বন্দি

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৬ ডিসেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 202

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ২০ বছর আগে ফিলিস্তিনের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজায় ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন রামি আবু মোস্তফা। ২০০২ সালে ইসরাইলি দখলদার সৈন্যরা আটক করে ফিলিস্তিনি এ তরুণকে। এরপর তাঁর ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু জেলে প্রবেশের পর থেকেই ২০ বছর বয়সী এ তরুণের ভাবনায় ছিল অন্য কিছু।

 

আরও পড়ুন: Israel’s Supreme Court : ফিলিস্তিনি বন্দিদের খেতে দিচ্ছে না নেতানিয়াহু সরকার

দীর্ঘ বন্দিজীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানোর প্রবল ইচ্ছা ছিল তাঁর। অবশেষে গত ২২ অক্টোবর ৪২ বছর বয়সে জেল থেকে মুক্তি পান রামি আবু মোস্তফা। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা শেষ করতে না পারলেও এ সময়ে তিনি পুরো পবিত্র কুরআন হিফজ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি পাঁচ বছরের মধ্যে জেলেই সনদসহ হাফেজ হয়েছেন। গাজার অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স কলেজ থেকে ডিপ্লোমা, আল-আকসা ইউনিভার্সিটি থেকে ইতিহাসে অনার্স, আল-কুদস ইউনিভার্সিটি থেকে ইসরাইল স্টাডিজ বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং লেবাননের দাওয়াহ কলেজ থেকে ইসলামিক ইকোনমিকসে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এসব ডিগ্রির চেয়ে তাঁর কাছে কুরআন হিফজের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন: Breaking: পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেনে হামলা, সন্ত্রাসবাদীদের হাতে বন্দি ১০০ যাত্রী

 

আরও পড়ুন: তিন কাশ্মীরি মহিলাকে আটক পুলিশের

ইসরাইলি জেলে থাকাকালীন কুরআন হিফজ করা ৭৭ বন্দির একজন হলেন রামি আবু মোস্তফা। গত বৃহস্পতিবার হামাসের উদ্যোগে গাজায় ৭৭ হাফেজের সম্মাননায় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বন্দি হাফেজদের উদ্দেশ্যে মুক্তির আশা ব্যক্ত করে শুভেচ্ছা বক্তব্যে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেন, ‘হাফেজ বন্দিদের সবাইকে শুভেচ্ছা।

 

পুরো কারাগারকে তারা ইউসুফের মাদ্রাসায় পরিণত করেছে। কেননা তারা ইউসুফ (আ.)-এর পথ অনুসরণ করেছে, যিনি কারাগারে গিয়েও দাওয়াতের কথা ভুলে যাননি।

 

দখলদার ইসরাইলের কারাগারে দুই দশক পর মুক্তি পেয়ে রামি বলেছেন, দখলদার গোষ্ঠী আমাদের দেহ বন্দি করতে পারলেও তারা কখনও আমাদের চিন্তাশক্তি ও দৃঢ় ইচ্ছাকে বন্দি করতে পারেনি। পবিত্র কুরআন মানুষের সর্বোত্তম পাথেয়। আর একজন বন্দির জন্য তা আশা জাগায় এবং শক্তি জোগায়।

 

তাই পুরো কুরআন হিফজ করা আমার জন্য খুবই সম্মানের ও চ্যালেঞ্জের। তা মোটেও সহজ ছিল না, বরং নানা উপায়ে কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের জন্য সমস্যা ও সংকট তৈরি করত। আর কুরআন হিফজের জন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক বন্দি মাত্র ছয় মাসেও হিফজ করেছেন। আবার অনেকে বাধার মুখে ১০ বছর সময় লাগিয়েছেন।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কারাগারে কুরআন হিফজ করল ৭৭ ফিলিস্তিনি বন্দি

আপডেট : ৬ ডিসেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ২০ বছর আগে ফিলিস্তিনের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজায় ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন রামি আবু মোস্তফা। ২০০২ সালে ইসরাইলি দখলদার সৈন্যরা আটক করে ফিলিস্তিনি এ তরুণকে। এরপর তাঁর ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু জেলে প্রবেশের পর থেকেই ২০ বছর বয়সী এ তরুণের ভাবনায় ছিল অন্য কিছু।

 

আরও পড়ুন: Israel’s Supreme Court : ফিলিস্তিনি বন্দিদের খেতে দিচ্ছে না নেতানিয়াহু সরকার

দীর্ঘ বন্দিজীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানোর প্রবল ইচ্ছা ছিল তাঁর। অবশেষে গত ২২ অক্টোবর ৪২ বছর বয়সে জেল থেকে মুক্তি পান রামি আবু মোস্তফা। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা শেষ করতে না পারলেও এ সময়ে তিনি পুরো পবিত্র কুরআন হিফজ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি পাঁচ বছরের মধ্যে জেলেই সনদসহ হাফেজ হয়েছেন। গাজার অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স কলেজ থেকে ডিপ্লোমা, আল-আকসা ইউনিভার্সিটি থেকে ইতিহাসে অনার্স, আল-কুদস ইউনিভার্সিটি থেকে ইসরাইল স্টাডিজ বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং লেবাননের দাওয়াহ কলেজ থেকে ইসলামিক ইকোনমিকসে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এসব ডিগ্রির চেয়ে তাঁর কাছে কুরআন হিফজের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন: Breaking: পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেনে হামলা, সন্ত্রাসবাদীদের হাতে বন্দি ১০০ যাত্রী

 

আরও পড়ুন: তিন কাশ্মীরি মহিলাকে আটক পুলিশের

ইসরাইলি জেলে থাকাকালীন কুরআন হিফজ করা ৭৭ বন্দির একজন হলেন রামি আবু মোস্তফা। গত বৃহস্পতিবার হামাসের উদ্যোগে গাজায় ৭৭ হাফেজের সম্মাননায় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বন্দি হাফেজদের উদ্দেশ্যে মুক্তির আশা ব্যক্ত করে শুভেচ্ছা বক্তব্যে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেন, ‘হাফেজ বন্দিদের সবাইকে শুভেচ্ছা।

 

পুরো কারাগারকে তারা ইউসুফের মাদ্রাসায় পরিণত করেছে। কেননা তারা ইউসুফ (আ.)-এর পথ অনুসরণ করেছে, যিনি কারাগারে গিয়েও দাওয়াতের কথা ভুলে যাননি।

 

দখলদার ইসরাইলের কারাগারে দুই দশক পর মুক্তি পেয়ে রামি বলেছেন, দখলদার গোষ্ঠী আমাদের দেহ বন্দি করতে পারলেও তারা কখনও আমাদের চিন্তাশক্তি ও দৃঢ় ইচ্ছাকে বন্দি করতে পারেনি। পবিত্র কুরআন মানুষের সর্বোত্তম পাথেয়। আর একজন বন্দির জন্য তা আশা জাগায় এবং শক্তি জোগায়।

 

তাই পুরো কুরআন হিফজ করা আমার জন্য খুবই সম্মানের ও চ্যালেঞ্জের। তা মোটেও সহজ ছিল না, বরং নানা উপায়ে কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের জন্য সমস্যা ও সংকট তৈরি করত। আর কুরআন হিফজের জন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক বন্দি মাত্র ছয় মাসেও হিফজ করেছেন। আবার অনেকে বাধার মুখে ১০ বছর সময় লাগিয়েছেন।