২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুরষ্কার বিজেতা টোপে সাইবার প্রতারণার শিকার প্রতিবন্ধী মুস্তাফিজুর

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার
  • / 25

কিবরিয়া আনসারী: সাইবার প্রতারণার শিকার ডোমকলের বর্তনাবাদের বাসিন্দা মুস্তাফিজুর রহমান মন্ডল। প্রথম পুরষ্কার বিজেতা বলে তাকে প্রায় ২ লক্ষ টাকা এবং পাঁচআনা সোনার আংটির টোপ দেওয়া হয়। শিক্ষায় নিরক্ষর মুস্তাফিজুর সাতপাঁচ না ভেবেই প্রতারকদের তার ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করেন। তারপরই প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে নগদ টাকা খোয়ালেন শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী মুস্তাফিজুর রহমান।

 

আরও পড়ুন: রাজ্য পুলিশের জালে ৪৬ সাইবার জালিয়াত

জানা গিয়েছে, এক অজ্ঞাত পরিচিত ব্যক্তি তাকে ফোন করে প্রথম পুরষ্কার বিজেতা বলে জানায়। পুরষ্কার বাবদ ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা এবং পাঁচআনা সোনার আংটি পাবেন তিনি। সেই পুরস্কার নেওয়ার জন্য তার কাছে ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হলে সেটি দিয়েও দেন তিনি। তারপরই প্রতারকরা তাকে নানাভাবে মানসিক হেনস্থা শুরু করেন বলে অভিযোগ। মুস্তাফিজুর রহমান মন্ডল বলেন, গত একমাস আগে একটি নম্বর থেকে ফোন করে প্রায় ২ লক্ষ টাকা এবং সোনার আংটি বিজেতা হয়েছি বলে জানানো হয়। যদিও আমি কোনো ধরণের টিকিট বা লটারি কাটিনি। আমার কাছে তথ্য জানতে চাইলে আমি সেইসময় অতটা না ভেবেই তাকে আমার ব্যক্তিগত তথ্য দিই। কিছুদিন পর আমার ঠিকানায় পুরষ্কারের টাকা এবং সোনার আংটি পৌঁছে যাবে বলে ফোনটি কেটে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: সাইবার অপরাধ রুখতে, হোয়াটস অ্যাপে ‘ব্রিভিয়ান্স অপিলেট কমিটি’ গঠন করছে কেন্দ্র

 

আরও পড়ুন: সাইবার প্রতারণা রুখতে এবার মোবাইলের আইএমইআই নম্বর বন্ধ করবে লালবাজার

জানা গিয়েছে, গত ১৮ ডিসেম্বর পিটি রসুলপুর পোস্ট অফিস থেকে তাকে ফোন করে জানানো হয় তার নামে একটি পার্সেল এসেছে। সেটি আজকেই সংগ্রহ করে নিতে হবে নচেৎ সেটি ফেরত চলে যাবে। তিনি কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে থাকায় তার স্ত্রীকে ফোন করে বিষয়টি সর্ম্পকে অবগত করেন এবং পার্সেলটি সংগ্রহ করতে বলেন। তাঁর স্ত্রীর কথায়, ওই পোস্ট অফিসে গেলে কর্তব্যরত কর্মী বলেন যেহেতু বোনাফায়েড অর্ডার তাই ১৫৭৫ টাকা দিয়ে পার্সেলটি সংগ্রহ করতে হবে। আমি ১৫৭৫ টাকা দিয়ে পার্সেলটি সংগ্রহ করেন। বাড়ি এসে সেটি খুলতেই দেখা যায় পার্সেলের ভেতর একটি টিনের আংটি এবং দুটি সাদা কাগজ রয়েছে।

 

ঘটনার খবর পেয়ে গত শুক্রবারই ভিনরাজ্য থেকে বাড়ি ফেরেন মুস্তাফিজুর। তারপর তাঁর সন্দেহ হলে পরিচিত কয়েকজন’কে বিষয়টি জানান তিনি। তারা বিষয়টি দেখে এটিকে একধরণের স্ক্যাম বা প্রতারণা বলে জানায়। তাৎক্ষণিক মানসিকভাবে ভয় পেয়ে যায় মুস্তাফিজুর সহ গোটা পরিবার। তাঁর বাবা সামসুল হুদা মন্ডল জানায়, “এর আগে যে নম্বরটি থেকে ছেলেকে ফোন করা হয়েছিল। পার্সেলের ভেতর দুটি সাদা কাগজে ওই নম্বরটিই লেখা ছিল। ছেলে ওই নম্বরে ফের ফোন করলে প্রতারকরা বলে ‘এটি পাঠিয়ে ঠিকানা যাচাই করা হল, পরে আসল পুরষ্কার পাঠানো হবে’। ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।” পুণরায় প্রতারকরা আর্থিকভাবে বা অন্যপন্থায় বড় ক্ষতি করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুস্তাফিজুরের পরিবার। প্রতারণার শিকায় হয়ে শনিবারই ডোমকল থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পুরষ্কার বিজেতা টোপে সাইবার প্রতারণার শিকার প্রতিবন্ধী মুস্তাফিজুর

আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার

কিবরিয়া আনসারী: সাইবার প্রতারণার শিকার ডোমকলের বর্তনাবাদের বাসিন্দা মুস্তাফিজুর রহমান মন্ডল। প্রথম পুরষ্কার বিজেতা বলে তাকে প্রায় ২ লক্ষ টাকা এবং পাঁচআনা সোনার আংটির টোপ দেওয়া হয়। শিক্ষায় নিরক্ষর মুস্তাফিজুর সাতপাঁচ না ভেবেই প্রতারকদের তার ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করেন। তারপরই প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে নগদ টাকা খোয়ালেন শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী মুস্তাফিজুর রহমান।

 

আরও পড়ুন: রাজ্য পুলিশের জালে ৪৬ সাইবার জালিয়াত

জানা গিয়েছে, এক অজ্ঞাত পরিচিত ব্যক্তি তাকে ফোন করে প্রথম পুরষ্কার বিজেতা বলে জানায়। পুরষ্কার বাবদ ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা এবং পাঁচআনা সোনার আংটি পাবেন তিনি। সেই পুরস্কার নেওয়ার জন্য তার কাছে ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হলে সেটি দিয়েও দেন তিনি। তারপরই প্রতারকরা তাকে নানাভাবে মানসিক হেনস্থা শুরু করেন বলে অভিযোগ। মুস্তাফিজুর রহমান মন্ডল বলেন, গত একমাস আগে একটি নম্বর থেকে ফোন করে প্রায় ২ লক্ষ টাকা এবং সোনার আংটি বিজেতা হয়েছি বলে জানানো হয়। যদিও আমি কোনো ধরণের টিকিট বা লটারি কাটিনি। আমার কাছে তথ্য জানতে চাইলে আমি সেইসময় অতটা না ভেবেই তাকে আমার ব্যক্তিগত তথ্য দিই। কিছুদিন পর আমার ঠিকানায় পুরষ্কারের টাকা এবং সোনার আংটি পৌঁছে যাবে বলে ফোনটি কেটে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: সাইবার অপরাধ রুখতে, হোয়াটস অ্যাপে ‘ব্রিভিয়ান্স অপিলেট কমিটি’ গঠন করছে কেন্দ্র

 

আরও পড়ুন: সাইবার প্রতারণা রুখতে এবার মোবাইলের আইএমইআই নম্বর বন্ধ করবে লালবাজার

জানা গিয়েছে, গত ১৮ ডিসেম্বর পিটি রসুলপুর পোস্ট অফিস থেকে তাকে ফোন করে জানানো হয় তার নামে একটি পার্সেল এসেছে। সেটি আজকেই সংগ্রহ করে নিতে হবে নচেৎ সেটি ফেরত চলে যাবে। তিনি কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে থাকায় তার স্ত্রীকে ফোন করে বিষয়টি সর্ম্পকে অবগত করেন এবং পার্সেলটি সংগ্রহ করতে বলেন। তাঁর স্ত্রীর কথায়, ওই পোস্ট অফিসে গেলে কর্তব্যরত কর্মী বলেন যেহেতু বোনাফায়েড অর্ডার তাই ১৫৭৫ টাকা দিয়ে পার্সেলটি সংগ্রহ করতে হবে। আমি ১৫৭৫ টাকা দিয়ে পার্সেলটি সংগ্রহ করেন। বাড়ি এসে সেটি খুলতেই দেখা যায় পার্সেলের ভেতর একটি টিনের আংটি এবং দুটি সাদা কাগজ রয়েছে।

 

ঘটনার খবর পেয়ে গত শুক্রবারই ভিনরাজ্য থেকে বাড়ি ফেরেন মুস্তাফিজুর। তারপর তাঁর সন্দেহ হলে পরিচিত কয়েকজন’কে বিষয়টি জানান তিনি। তারা বিষয়টি দেখে এটিকে একধরণের স্ক্যাম বা প্রতারণা বলে জানায়। তাৎক্ষণিক মানসিকভাবে ভয় পেয়ে যায় মুস্তাফিজুর সহ গোটা পরিবার। তাঁর বাবা সামসুল হুদা মন্ডল জানায়, “এর আগে যে নম্বরটি থেকে ছেলেকে ফোন করা হয়েছিল। পার্সেলের ভেতর দুটি সাদা কাগজে ওই নম্বরটিই লেখা ছিল। ছেলে ওই নম্বরে ফের ফোন করলে প্রতারকরা বলে ‘এটি পাঠিয়ে ঠিকানা যাচাই করা হল, পরে আসল পুরষ্কার পাঠানো হবে’। ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।” পুণরায় প্রতারকরা আর্থিকভাবে বা অন্যপন্থায় বড় ক্ষতি করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুস্তাফিজুরের পরিবার। প্রতারণার শিকায় হয়ে শনিবারই ডোমকল থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।