ফার্স্ট ডিগ্রি হার্ট ব্লক নিয়েও মা হলেন বালুরঘাটের মৌমিতা
- আপডেট : ১ মার্চ ২০২৫, শনিবার
 - / 175
 
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক টিমের তৎপরতায় সুস্থ প্রসূতি এবং নবজাতক
পুবের কলম প্রতিবেদক: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় সন্তানের জন্ম দিলেন হৃদ্রোগে আক্রান্ত এক অন্তঃসত্ত্বা। সরকারি চিকিৎসা পরিকাঠামোর মধ্যেই রীতিমতো চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রসূতি এবং নবজাতককে বিপন্মুক্ত করলেন ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা বাসিন্দা মৌমিতা বর্মন (২৬) অন্তঃস্বত্ত্বা অবস্থায় আচমকা শ্বাস কষ্টের পাশাপাশি বুকের ব্যথায় আক্রান্ত হন। ওই ঘটনার পরেই স্থানীয় চিকিৎসকের নির্দেশে ইসিজি করেন। ওই ইসিজি রিপোর্টে জানা যায় অন্তঃসত্ত্বা এবং সন্তানসম্ভবা মৌমিতা বর্মন হৃদ্রোগে আক্রান্ত।
উল্লেখ্য, বালুরঘাটের চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, হৃদ্পিণ্ডের এই অবস্থায় মৌমিতা বর্মনের অস্ত্রোপচার অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। অস্ত্রপচার করার জন্য দ্রুত পেসমেকার বসানো প্রয়োজন। মৌমিতা বর্মনের সংকটকালীন পরিস্থিতিতেও পরিবারের সদস্যরা কোনও বেসরকারি হাসপাতালে না গিয়ে ভরসা রেখেছিলেন রাজ্যের সরকারি পরিষেবার উপর। এরপরেই ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন মৌমিতা। গত বুধবার চিকিৎসকরা তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করেন। শারীরিক পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, মৌমিতা বর্মনের গর্ভে থাকা সন্তানের ফুসফুসের গঠন সম্পূর্ণ হয়নি। কিন্তু প্রসূতির হার্টের অবস্থা একদম ভালো না থাকায় হার্টকে স্বাভাবিক রাখতে একদিকে যেমন ‘টেম্পোরারি পেসমেকার’ বসানো হয়, তেমনি গর্ভস্থ শিশুর ফুসফুসের গঠন দ্রুত সম্পূর্ণ করতে প্রসূতিকে চারটি ডোজের ইঞ্জেকশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন স্ত্রীরোগ বিভাগের চিকিৎসকরা।
ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল হার্ট বিকল হওয়ার আগেই প্রসূতি এবং প্রসূতির জঠরের সন্তানকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখা। গর্ভস্থ সন্তানকে ভূমিষ্ঠ করার সময় সময় হতেই চিকিৎসকদের বিশেষ টিমের সদস্যরা অপারেশনের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরপরেই শুক্রবার টেম্পোরারি পেসমেকার বসানো অবস্থায় সিজার করা হয় মৌমিতার। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মা এবং সন্তান দু’জনেই এখন ভালো আছে। প্রসূতিকে পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হয়েছে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে। মৌমিতা বর্মনের সিজারের জন্য ন্যাশনাল কলেজের সুপার ডাক্তার অর্ঘ্য মৈত্র, স্ত্রীরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার প্রণব বিশ্বাস, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. সুশান্তকুমার পাইনের তত্ত্বাবধানে গঠিত টিমে স্ত্রীরোগ বিভাগের ডা. ধারা লায়েক, ডা. পৌলমী রায়, অ্যানাস্থেটিস্ট ডা. মৃন্ময় বসাকও। হাসপাতাল সুত্রের খবর, খুব শীঘ্রই মৌমিতার শরীরে স্থায়ীভাবে পেসমেকার বসানো হবে।
																			
																		

















































